সরকারি অনুমোদনের প্রত্যাশায় এলাকাবাসী ॥ ছাতকে বোবরাপুর হুছাইনিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা বহুমুখী শিক্ষা বিস্তারে এগিয়ে

147

ছাতক থেকে সংবাদদাতা :
ছাতকে ইসলামি ফাউন্ডেশনের আওতায় বোবরাপুর গ্রামে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রাক প্রাথমিক কেন্দ্রের Chhatak p-07.09মাধ্যমে এখানে বহুমুখী শিক্ষা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত সুনামের সাথে শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রাক প্রাথমিক কেন্দ্র স্থাপনের প্রায় ১২বছর পূর্বে হুছাইনিয়া হাফিজিয়া নামের একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠাতা লাভ করে। স্কুল কলেজ পর্যায়ে শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও ইসলামি শিক্ষায় এ অঞ্চলের মানুষ অনেকাংশে পিছিয়ে থাকায়  কোরআন ও হাদিসের আলো এলাকায় ছড়িয়ে দিতে এবং ইসলামি শিক্ষার বিপ্লব ঘটাতে অষ্ট গ্রামের মানুষের সার্বিক সহযোগিতায় বোবরাপুর গ্রামে ওই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হয়। প্রতিষ্ঠান স্থাপনের শুরু থেকে হাল ধরেন বোবরাপুর গ্রামের মাওলানা আনোয়ার হোসাইন। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এলাকায় ইসলামি শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়ে চলছে। বহুমুখী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন হওয়ায় উপকৃত হচ্ছে এ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। মাদরাসা প্রতিষ্ঠাতা, পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে সমানতালে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন এলাকাবাসি। তাদের আশা ও প্রত্যাশা এ ৩বছর আগে স্থাপিত হওয়া মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (৬ষ্ঠ পর্যায়ে) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এখানে সরকারি ভাবে অনুমোদনসহ দারুল আরকাম নামের ইবতেদায়ি মাদরাসা স্থাপন করা হলে শিক্ষা বিস্তারে একদিন এ প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করবে।
জানা যায়, উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের বোবরাপুর গ্রামে বোবরাপুর হুছাইনিয়া হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসা ৬ শতক জায়গার উপর স্থাপিত হয় ২০০২ সালের ৭ মার্চ। এর পর ওই মাদরাসায় উন্নীত হয় ইবতেদায়িতে। ইসলামি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রায় ৩ বছর আগে ওই মাদরাসায় মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রাক-প্রাথমিক কেন্দ্র খোলা হয়। ফাউন্ডেশনের নিয়মানুসারে পরিচালিত হয়ে আসছে এ প্রাক প্রাথমিক কেন্দ্র, ইবতেদায়ি ও হাফিজিয়া মাদরাসাটি। ইতোমধ্যে হিফজ শাখায় পড়াশোনা করে প্রায় ১০/১২জন কোরআনে হাফেজ পাগড়ি পেয়ে চলে গেছে। এছাড়া উপমহাদেশের প্রখ্যাত ওলি, ওলিকূল শিরোমনি শামছুল উলামা আল্লামা আবদুল লতিফ চৌধুরী ছাহেব কিবলা ফুলতলী (রহ.) এঁর প্রতিষ্ঠিত দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্টের অধীনে বিশুদ্ধ কেরাত শিক্ষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। রাবে জমাত পর্যন্ত এখানে প্রতি রামদ্বান মাসে ও বছর ব্যাপী সু-দক্ষ ক্বারী শিক্ষক দ্বারা সপ্তাহিক কেরাত শিক্ষা দেয়া হয়। এ কেন্দ্রে পবিত্র কোরআন শরিফ বিশুদ্ধ ভাবে তেলাওয়াত শিক্ষা অর্জন করছে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী। প্রাক প্রাথমিক, ইবতেদায়ি ৫ম ও হিফজ শাখার অধীনে শিক্ষার্থীরা রয়েছেন প্রায় একশো। সব মিলিয়ে এখানে প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থীরা শিক্ষা অর্জন করছে।  মাদরাসাটি উন্নয়নের স্বার্থে কালারুকা ইউনিয়ন হুছাইনিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থা এন্ড যুব উন্নয়ন বোর্ড গঠন ও শিক্ষার্থীদের জন্য কোচিং সেন্টার খোলা হয়েছে। এছাড়া  প্রতি ইংরেজি মাসের ২৫ তারিখ রাতে খানকার, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল পরিচালিত হয়ে আসছে। এ কেন্দ্র বা মাদরাসায় আওতায় রয়েছে পার্শ্ববর্তী রামপুর, সিকন্দরপুর, আরতানপুর, মালিপুর, আজিধর পুর, ছিক্কা, দিঘলবন্দ, কালারুকা ৮টি গ্রাম। এখন শুধু বিল্ডিং ও সরকারিভাবে অনুমোদনসহ পূর্ণ সহায়তার অভাব রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আশ্বাস প্রদান করে গেলেও আজ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি সরকারি ভাবে পূর্ণ সহায়তার মুখ দেখেনি। ফলে বহুমুখী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি দু’শতাধিক শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।