মহান হজ্বের শ্রেষ্ঠত্বের ঐতিহাসিক প্রমাণ

85

॥ মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান ॥

মহান আল্লাহর বিশ্ব-সাম্রাজ্যে মুসলমান শ্রেষ্ঠ জাতি। মুসলমানের জীবন বিধান হলো ইসলাম। ইসলামের মূল ভিত্তি পাঁচটি। তা হলো- ঈমান, নামাজ, রোজা, যাকাত ও হজ্ব। হজ্ব হলো বাস্তব জীবনের শ্রেষ্ঠ ইবাদত। যারা হজ্ব করে তারা স্বচক্ষে আল্লাহর নিদর্শনাবলীসমূহ অবলোকন করে ঈমানের পরিপক্কতা লাভ করে। আল্লাহর ঘর তোয়াফকারী হাজীদের আল্লাহর মেহমান হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কাবাঘর, হাজরে আসওয়াদ, মাকামে ইব্রাহীম, মিনা, সাফা মারুয়া, মুজদালিফা, জামরাহ, আরাফাহসহ আল-কুরআনে বর্ণিত আল্লাহ পাকের নিদর্শনাবলী সফর করে একজন মুসলমান তার বাস্তব জীবনে আল্লাহ এবং মোহাম্মদ (সাঃ) কে মেনে নিতে সর্বোচ্চ সুযোগ পায়। মহানবী (সাঃ) তাঁর শ্রেষ্ঠ ঈমানিয়াত দ্বারা সেই শ্রেষ্ঠ ইবাদত হজ্ব গুরুত্বের সাথে সম্পন্ন করেছেন। হজ্বের তাৎপর্য তুলে ধরে ব্যাপকভাবে অগণিত বাণী রেখে গিয়েছেন। আলোচ্য প্রবন্ধে সেই মহামূল্যবান হাদীসসমূহ গুরুত্বের সাথে সংকলন করা হলো।
হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন: রাসূল (সা.)কে জিজ্ঞাসা করা হল, “সর্বোত্তম কাজ কোনটা? তিনি বললেন: আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। আবার জিজ্ঞেস করা হল; এর পর কোনটা? তিনি বললেন: আল্লাহর পথে জিহাদ। তারপর জিজ্ঞেস করা হলো: এরপর কোনটা? তিনি বললেন; নিষ্কলুষ হজ্ব। (বুখারী ও মুসলিম) ইবনে হাব্বান থেকে বর্ণিত: রাসূল (সাঃ) বলেছেন- আল্লাহর নিকট শ্রেষ্ঠ আমল হলো, এমন পরিপক্ক ঈমান, যার সাথে কোন সন্দেহের মিশ্রণ ঘটেনি। এমন সশস্ত্র জেহাদ যার ভেতরে কোন চুরি বা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেনি এবং এমন হজ্ব, যাতে কোন গুনাহর কাজ হয়নি। হযরত আবু হোরায়রা (রা:) বলেছেন: একটা নিষ্কলুষ হজ্ব এক বছরের গুনাহের কাফফারা স্বরূপ অর্থাৎ মাফ হওয়ার নিশ্চয়তা দেয়। মাবরুর হজ্ব: কেউ কেউ বলেছেন, মাবরুর হজ্ব হচ্ছে এমন হজ্ব, যার ভেতরে কোন গুনাহ সংঘটিত হয় না। অন্য বর্ণনায় আছে, মাবরুর হজ্বের বৈশিষ্ট হলো, মানুষকে আহার করানো এবং ভাল কথা বলা। অন্যদের কথায়- আহার করানো এবং ছালামের বিস্তার ঘটানো।
আবু হোরায়রার (রা:) বর্ণিত অন্য হাদীস মতে রাসূল (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি হজ¦ করল এবং রফাস (অর্থাৎ কোন ধরনের যৌন তৎপরতায় লিপ্ত হল না) করল না এবং গুণাহর কাজও করল না, সে এমন ভাবে পাপমুক্ত হয়ে গেল যেমন সদ্য প্রসূত সন্তান তার জন্মের দিনে পাপমুক্ত থাকে। (বুখারী, মুসলিম, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ, তিরমিযী)। হযরত আবু হোরায়রা থেকে বর্ণিত আরেক হাদীসের মতে রাসূল (সাঃ) বলেছেন- এক উমরা থেকে আর এক উমরা পর্যন্ত যত গুণাহ করা হয়, উমরার কারণে সেগুলোর কাফফারা হয়ে যায়। আর নিষ্কলুষ হজে¦র প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়। (বুখারী, মুসলিম, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ, তিরমিযী)
তিরমিযীতে বলা হয়েছে- হজ্বে মাবরুর হচ্ছে-অতীতের সমস্ত পাপ ক্ষমা করা হবে। ইবনে আব্বাসের বর্ণনায় রয়েছে- “রফাস” মানে নরনারীর সম্পর্কজনিত কোন তৎপরতা। আযহারী বলেন- পুরুষ নারীর কাছ থেকে প্রত্যাশা করে এমন যে কোন ব্যাপার। সহবাস, অশ্লীলতা, পুরুষ কর্তৃক নারীকে যৌন বিষয়ে কিছু বলা। বুখারী, মুসলিম, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ, তিরমিযী ইত্যাদি হাদীসে বর্ণিত আবু হোরায়রা (রা:) বর্ণিত রাসূল (সাঃ) বলেছেন- এক উমরা থেকে আর এক উমরা পর্যন্ত যত গুণা করা হয় সেগুলোর কাফফারা হয়ে যায়। আর নিষ্কলুষ হজ্বের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়। ইসবাহানীর বর্ণনায় আরো আছে, হজ¦কারী যখনই সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার বলে, তখনই তাকে একটা সুসংবাদ দেয়া হয়।
মুসলিম ও ইবনে খুযায়মায় বর্ণিত, হযরত ইবনে শামমাছা (রা:) বলেন: একবার আমরা হযরত আমর ইবনুল আস (রা:) এর কাছে উপস্থিত হলাম। তিনি তখন মৃত্যুর দ্বার প্রান্তে। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে কাঁদলেন। তারপর বললেন- যখন আল্লাহ আমার অন্তরে ইসলাম গ্রহণের প্রেরণা জাগিয়ে তুললেন, তখন আমি রাসল (সাঃ) এর কাছে হাজির হলাম। তারপর বললাম, হে রাসূলুল্লাহ আপনার ডান হাতটা বাড়িয়ে দিন। আমি আপনার কাছে বয়াত করব (অর্থাৎ ইসলাম গ্রহণ করব) তিনি হাত বাড়িয়ে দিলেন। কিন্তু আমি হাত গুটিয়ে নিলাম। রাসূল (সাঃ) বললেন- কি ব্যাপার, তোমার কি হয়েছে? আমি বললাম, যেন আমার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করা হয়। রাসূল (সাঃ) বললেন- ওহে আমর, তুমি কি জান না, ইসলাম গ্রহণ অতীতের সমস্ত গুণাহ নষ্ট করে দেয়। হিজরত অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করিয়ে দেয় এবং হজ্ব অতীতের পাপ মোচন করে দেয়। তাবারানীতে বর্ণিত হাদীসে হযরত আলীর (রা:) ছেলে হাসান (রা:) বলেন- একব্যক্তি রাসূল (সাঃ) এর কাছে এসে বললো, আমি দুর্বল ও ভীরু। রাসূল (সাঃ) বললেন- তাহলে এমন জেহাদে যোগদান কর, যাতে অস্ত্রশস্ত্র থাকে না। তা হচ্ছে হজ্ব। বুখারী শরীফে বর্ণিত হযরত আয়েশা (রা:) বলেন- আমি রাসূল (সাঃ) কে বললাম, আমরা মনে করি জেহাদ সর্বশ্রেষ্ঠ আমল। তাহলে আমরা কি জেহাদ করবো না? রাসূল (সাঃ) বললেন, তোমরা মহিলাদের জন্য শ্রেষ্ঠ আমল হচ্ছে কলুষমুক্ত হজ্ব।
ইবনে খুযায়মার রেওয়ায়েতের ভাষা হলো, হযরত আয়েশা বলেন, আমি জিজ্ঞেস  করলাম: মহিলাদের কি জেহাদ করতে হবে? রাসূল (সাঃ) বললেন- তাদের এমন জেহাদ  করতে হবে যাতে সশস্ত্র লড়াই নেই। তা হচ্ছে হজ্ব ও উমরা। নাসায়ী শরীফে বর্ণিত হযরত আবু হোরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বললেন- বৃদ্ধ, দুর্বল ও স্ত্রীলোকের জেহাদ হলো হজ্ব ও উমরা।
আহমাদ, তাবারানী ও বায়হাকীতে বর্ণিত হযরত আমর ইবনে আবাসা (রা:) বর্ণিত। এক ব্যক্তি বললো: হে আল্লাহর রাসূল, ইসলাম কি? রাসূল (সাঃ) বললেন- আল্লাহর কাছে তোমার মনের আত্মসমর্পণ করা এবং তোমার জিহবা ও হাতের কষ্ট থেকে মুসলমানদের নিরাপদ থাকা। ঐ ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো: কি ধরনের ইসলাম উত্তম? রাসূল (সাঃ) বললেন- ঈমান আনা। সে জিজ্ঞেস করলো: ঈমান কি? তিনি বললেন- আল্লাহ তায়ালা, তার ফেরেশতাগণ তার কিতাবসমূহ তার রাসূলগণ এবং মৃত্যুর পরে পুনরায় জীবিত হওয়ার ব্যাপারে ঈমান আনা। সে জিজ্ঞেস করলো: কি ধরনের ঈমান উত্তম? তিনি বললেন: হিজরত করা। সে জিজ্ঞেস করলো: হিজরত কি? তিনি বললেন: অন্যায় ও অসত্যকে বর্জন করা। সে জিজ্ঞেস করলো: কি ধরনের হিজরত উত্তম? তিনি বললেন- জিহাদ। সে জিজ্ঞেস করলো: জিহাদ কি? তিনি বললেন- যখন তুমি কাফেরদের আক্রমণের শিকার হবে, তখন তাদের সাথে যুদ্ধ করবে এটাই জিহাদ। সে জিজ্ঞেস করলো: কি ধরনের জিহাদ উত্তম? তিনি বললেন: যে জিহাদে মুজাহিদের রক্ত ঝরে ও ঘোড়া মারা যায়। রাসূল (সাঃ) বললেন- এরপর দুটো কাজ এমন রয়েছে, যা সকল কাজের চেয়ে শ্রেষ্ঠ: গুনাহমুক্ত হজ্ব ও গুনাহমুক্ত উমরা।
আহমাদ, তাবরানী, ইবনে খুযায়মা, বায়হাকী হাকেম এ বর্ণিত হযরত জাবের থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন- গুনাহমুক্ত হজে¦র বদলা জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়। জিজ্ঞেস করা হল গুনাহমুক্ত হজ¦ কিভাবে আদায় করা যায়? তিনি বললেন- মানুষকে খাওয়ানো ও ভাল কথা বলার মাধ্যমে? অর্থাৎ হজ্বের সফরে থাকা বলে। তিরমিযী, ইবনে খুযায়মা ও ইবনে হাব্বানে বর্ণিত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সাঃ) বলেছেন: হজ্ব ও উমরার মাঝে দীর্ঘ বিরতি না দিয়ে একটার পর অপরটা আদায় কর, তাহলে দারিদ্র্য ও গুনাহ দূর করে দেবে। যেমন কামারের চুল্লি লোহার মরিচা এবং স্বর্ণকারের চুল্লি স্বর্ণ ও রূপার খাদ দূর করে। গুনাহমুক্ত হজ্বের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়। তাবরানীতে বর্ণিত, হযরত আব্দুল্লাহ বিন জায়াদ (রা:) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সাঃ) বলেছেন- তোমরা হজ্ব কর, কেননা পানি যেমন ময়লা ধুয়ে দেয়, তেমনি হজ্ব গুণাহকে ধুয়ে পরিষ্কার করে।
বাযখারে বর্ণিত হযরত আবু মুছা (রা:) থেকে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) বলছেন- হজ্ব সমাপনকারী তার পরিবার পরিজনের মধ্য থেকে চারশত জনের পক্ষে সুপারিশ করতে পারবে এবং সদ্য প্রসূত শিশুর মতো নিজের সমস্ত গুনাহ থেকে অব্যাহতি পাবে। ইবনে খুযায়মা থেকে বর্ণিত হযরাত ইবনে আব্বাস (রা:) বলেন- রাসূল (সাঃ) বলেছেন- হযরত আদম (আঃ) ভারত থেকে পায়ে হেঁটে এক হাজার বার কাবা শরীফে এসেছেন। কখনও কোন সওয়ারীতে আরোহন করেননি।
বাযযারের বর্ণনায় আছে হযরত জাবের (রা:) থেকে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) বলেছেন যারা হজ¦ ও উমরা করে, তারা আল্লাহর প্রতিনিধি দল। তিনি তাদেরকে আমন্ত্রণ করেন। তারা সেই আমন্ত্রণের সাড়া দেয়। আর তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে এবং আল্লাহ তাদেরকে তা প্রদান করেন। বাযযার, তাবরানী ইবনে মাজার বর্ণনা মতে, হযরত ইবনে উমার (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেন- আল্লাহর পথে জেহাদকারী এবং হজ্ব ও উমরাকারী আল্লাহর প্রতিনিধি। তিনি তাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং তারা তাতে সাড়া দিয়েছেন। তারা আল্লাহর কাছে চাইলে তিনি তা তাদেরকে দেন। বাযযার তাবরানী, ইবনে খুযায়মা ও হাকেম থেকে বর্ণিত। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) বলেন: রাসূল (সাঃ) বলেছেন- হজ্বকারীর গুনাহ মাফ করা হয় এবং সে যার যার গুনাহ মাফ চায় তাদেরকেও মাফ করা হয়। ইবনে হাববান, ইবনে খুযায়যা, তাবারানী, বাযযার ও হাকেম থেকে প্রাপ্ত হযরত ইবনে উমার (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন- এই ঘর (পবিত্র কাবা) দ্বারা তোমরা উপকৃত হও। কেননা এ ঘর দু’বার ধ্বংস করা হয়েছে এবং তৃতীয়বারে তাকে তুলে নেয়া হবে।
তাবারানীর বর্ণনা মতে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রা:) থেকে বর্ণিত, যখন আল্লাহ তায়ালা আদম (আ:) কে বেহেশত থেকে নামালেন, তখন তাকে বললেন- আমি তোমার সাথে সাথে এমন একটা ঘর নামাবো, যার চার পাশে তওয়াফ করা হবে যেমন আমার আরশের চারপাশে তওয়াফ করা হয় এবং তার কাছে নামায পড়া হবে, যেমন আমার আরশের কাছে নামায পড়া হয়। তারপর যখন বন্যার সময় এল, তখন এই ঘরকে ওপরে তুলে নেয়া হলো। নবীগন এই ঘরের কাছে গিয়ে হজ¦ করতেন, কিন্তু তার স্থানটা চিনতেন না। অত:পর এই জায়গায় আল্লাহ হযরত ইব্রাহীমকে বসবাস করালেন। তিনি পাঁচটা পাহাড়ের পাথর দিয়ে কাবা ঘর নির্মাণ করলেন। পাঁচটি পাহাড় হল- হেরা, ছাবীর, লেকমন, তুর ও খায়ের। সুতরাং তোমরা যত বেশি পারো এই ঘর দ্বারা উপকৃত হও।
ইসবাহানীর বর্ণনায়, হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) বলেছেন- হজ্ব আদায়ে ত্বরিত উদ্যোগী হও। অর্থাৎ ফরজ হজ্ব দ্রুত আদায় কর। কেননা কখন কি বাধা বিঘœ এসে পড়বে কেউ জানো না। ইসবাহানীতে আরো বর্ণিত। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা:) বর্ণনা করেন। রাসূল (সাঃ) বলেছেন-আল্লাহ তায়ালা হযরত আদম (আ:) কে ওহীর মারফত বললেন- হে আদম, তোমার কোন অঘটন ঘটার আগে এই ঘরে হজ্ব আদায় করে নাও। আদম (সাঃ) বললেন- হে আমার প্রতিপালক, আমার কী অঘটন ঘটবে? আল্লাহ বললেন- সে তুমি জান না। মৃত্যু হতে পারে। আদম (আঃ) বললেন- মৃত্যু আবার কী? আমার বংশ ধরের মধ্যে কাকে আমি আমার দায়িত্ব হস্তান্তর করবো? আল্লাহ বললেন- আকাশ ও পৃথিবীর কাছে পেশ কর।
আদম (আঃ) প্রথমে আকাশের কাছে তাঁর দায়িত্ব পেশ করলেন। সে ঐ দায়িত্ব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালো। তারপর তিনি পৃথিবীর কাছে পেশ করলেন। সেও তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালো। তারপর তিনি পাহাড় পর্বতের কাছে তা পেশ করলেন। সেও অস্বীকার করলো। অবশেষে এই দায়িত্ব গ্রহণ করলো তার সেই ছেলে, যে নিজের ভাইকে হত্যা করেছিল। এরপর হযরত আদম (আঃ) ভারতবর্ষ থেকে হজ্বের উদ্দেশ্যে সফরে বেরুলেন। পথিমধ্যে তিনি যেখানেই পানাহার করার জন্য যাত্রা বিরতি করলেন, সেখানেই পরবর্তীকালে জনবসতি গড়ে উঠলো। এক সময় তিনি মক্কা শরীফে এলেন। এখানে ফেরেশতারা তাকে অভ্যর্থনা জানালো। তারা বললেন- হে আদম, আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।
আপনার হজ্ব নিষ্কলুষ ও নিখুঁত হোক। আমরা আপনার দুই হাজার বছর আগে এই ঘরে হজ্ব করেছি। রাসূল (সাঃ) বললেন- সেদিন কাবা ঘর লাল রং এর ইয়াকুত পাথর দিয়ে নির্মিত ছিল এবং ভেতরে ফাঁকা ছিল। যে তাওয়াফ করতো, যে ঘরের ভেতরে যারা আছে তাদেরকে দেখতে পেত। কাবা ঘরের তখন দুটো দরজা ছিল। আদম (আঃ) তার হজ্ব সমাধা করলেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে ওহী যোগে জিজ্ঞেস করলেন- হে আদম, তোমার হজ্ব আদায় সম্পন্ন করেছ? আদম বললেন- হে আমার প্রভু, করেছি।