মারামারি ও চাঁদা দাবীর মামলা ॥ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা লুৎফুরসহ ৫ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড

74

স্টাফ রিপোর্টার :
চাঁদা দাবী ও মারামারির দায়েরকৃত মামলায় সাবেক মহানগর ছাত্রলীগ নেতা লুৎফুর রহমানসহ ৫ জনকে বিভিন্ন Atockমেয়াদে সশ্রম কারাদন্ড ও ৪ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের প্রত্যেককে অর্থদন্ডও দেয়া হয়। বুধবার সিলেটের যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো: ইয়াছিন আরাফাত এ রায় প্রদান করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে- সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের মংলীরপারের মৃত আব্দুর রহমানের পুত্র সাবেক মহানগর ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) লুৎফুর রহমান (৩০), এয়ারপোর্ট থানার বড়শালা গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের পুত্র নজমুল ইসলাম রায়হান (২৪), একই থানার সালেহপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হান্নান চৌধুরীর পুত্র আলম মিয়া উরফে আলম (২৫), একই গ্রামের আব্দুর শুকুর টেনাইর পুত্র জাবেদ হোসেন (২৫) ও একই থানার মংলীরপারের সোনা মিয়ার পুত্র ফরিদ উদ্দিন (৩২) এবং খালাসপ্রাপ্তরা হচ্ছে- জহিরুল ইসলাম (২৬), জমির (৩০), আল-আমিন উরফে মনা (২৮) ও শাহ আলম (২৮)। তাদের সবাইর বাড়ি এয়ারপোর্ট থানার বড়শালা, মংলিরপার ও কাকুয়ারপাড় গ্রামে। রায় ঘোষণার সময় সকল আসামী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড় টার দিকে এয়ারপোর্ট থানার ৬৯ বড়শালা আবাসিক এলাকাস্থ ফয়জুল হক খানের বাসার সামনে পাথর ব্যবসায়ী গনি মিয়াকে (৩৫) দাবীকৃত ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা না দেয়ায় আসামীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় সালেহপুর গ্রামের পাথর ব্যবসায়ী গনি মিয়ার ভাই কাহির মিয়া বাদি হয়ে লুৎফুর রহমানসহ ৯ জনকে আসামী করে এয়ারপোর্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। নং- ৮ (০৭-৯-১৫)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে এয়ারপোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) মো: নূরুল আলম একই বছরের ৩০ নভেম্বর আসামী লুৎফুর রহমানসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ থেকে আদালত ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগগঠন করে বিচার কার্য শুরু করেন।
দীর্ঘ শুনানী ও ১১ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী লুৎফুর রহমানকে ৩২৬ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ২ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড ও ৩৮৫ ধারায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড, আসামী নজমুল ইসলাম রায়হানকে ৩২৬ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড ও ৩২৪ ধারায় ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড, আসামী আলম মিয়া উরফে আলমকে ৩২৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড, আসামী জাবেদ হোসেনকে ৩৭৯ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড ও আসামী ফরিদ উদ্দিনকে ৩৭৯ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড দেয়া হয় এবং আসামী জহিরুল ইসলাম, জমির, আল-আমিন উরফে মনা ও শাহ আলমদের বিরুদ্ধে আদালতে দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি এডভোকেট সালমা সুলতানা, বাদী পক্ষে এডভোকেট মো: খোরশেদ আলম ও এডভোকেট সৈয়দ মহসিন এবং আসামীপক্ষে এডভোকেট মো: বদরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মামলাটি পরিচালনা করেন।