হাসিনা নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ভাবলেও বাস্তবতা ভিন্ন

কাজির বাজার ডেস্ক

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা নিজেকে এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মনে করলেও বাস্তবতা ভিন্ন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজারবাইজানের বাকুতে জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের ফাঁকে আলজাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। সাংবাদিক নিক ক্লার্কের প্রশ্ন ছিল, ভারতে শেখ হাসিনার উপস্থিতি এবং সেখান থেকে তিনি যে বিবৃতি ও ঘোষণা দিচ্ছেন তা ইউনূস প্রশাসন কীভাবে দেখছে?
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, তিনি বিবৃতি দিচ্ছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন- দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলায় আমরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি। এটা বাংলাদেশের জন্য মোটেও সহায়ক হবে না। সুতরাং আমরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে আপনি তাকে আশ্রয় দিয়েছেন, ভালো। তবে দয়া করে নিশ্চিত করুন যে- তিনি আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি করবেন না। না হলে আমাদের আবার আপনাদের (ভারত) কাছেই অভিযোগ করতে হবে যে আপনি এমন মানুষকে আশ্রয় দিয়েছেন, যা আমাদের জন্য খারাপ। সুতরাং আমাদের উচিত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে, বন্ধুত্বপূর্ণভাবে এর সমাধান করা।
সঞ্চালক বলেন, শেখ হাসিনা এখনো নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখছেন।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি নিজেকে অনেক কিছুই বলতে পারেন, কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। এমনকি ভারতও বলছে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী; সুতরাং তাকে আশ্রয় দিলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কিছুই বলছে না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, হ্যাঁ, সেটার আইনগত প্রক্রিয়া চলছে এবং অভিযুক্ত হলে অবশ্যই তাকে প্রত্যর্পণের জন্য বলা হবে।
নিক ক্লার্ক বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সংখ্যালঘুর অধিকার প্রশ্নে অন্তর্র্বর্তী সরকারের ভ‚মিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইউনূস কীভাবে এই সংকট মোকাবেলা করার পরিকল্পনা করছেন।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা সংখ্যালঘুদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, দেখুন, আপনি দেশের নাগরিক। সংবিধান আপনাকে আপনার অধিকার, স্বাধীনতা, নিজেকে প্রকাশ করার অধিকার, আপনার নিজের ধর্ম পালনের অধিকার দিয়েছে। এগুলো সংবিধানেই আছে। সুতরাং এটি আপনার (বাইরের দেশ) দিক থেকে আসা কিছু নয়। নাগরিকরা সংবিধানের দেওয়া অধিকার যাতে ভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করাই সরকার হিসেবে আমাদের দায়িত্ব।
তখন সঞ্চালক বলেন, কিন্তু হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন বেড়েছে বলে যে শোনা যাচ্ছে।
উত্তরে শান্তিতে নোবেলজয়ী ইউনূস বলেন, “সহিংসতা বাড়েনি। আমি বলব সহিংসতা কমেছে। বিপ্লবের সময় থেকেই সহিংসতা শুরু হয়। এই কারণে নয় যে তারা হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী, তাদের বেশিরভাগই ছিল আওয়ামী লীগার।

সুনামগঞ্জে উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন প্রাথমিকের পাঠ্যবইয়ে তেমন পরিবর্তন হবেনা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, নতুন বছরের জানুয়ারি মাসে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হবে। এতে কোন ব্যত্যয় ঘটবে না। বইয়ের সংস্করণ হচ্ছে তবে প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন পরিবর্তন হবেনা। পরিবর্তন হবে ষষ্ঠ থেকে উপরের ক্লাসের পাঠ্যবইয়ে। শিক্ষকরা সরকারি কর্মকর্তা চাকুরী বিধি অনুযায়ী তারা সরাসরি রাজনীতি করতে পারেন না। এ নিয়ে তাদের ১০ মাসের একটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আগে শিক্ষক নিয়োগ ও বদলিতে নানান অভিযোগ ছিল এখন কম্পিউটারে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বদলি পদায়ন হয়। হাওর এলাকার স্কুলের অবকাঠামোগত পরিবর্তন করার কথা ভাবছে সরকার। স্কুল প্লাস বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করতে হবে। শিক্ষক সংকট দূর করতে চেষ্টা করা হচ্ছে। সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ফিমেল একাডেমি পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। পরে তিনি দূর্গম এলাকার একটি স্কুল পরিদর্শন শেষে ফিমেল একাডেমিতে হাওর অঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এসময় জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, পুলিশ সুপার আ.ফ.ম আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাছনরাজা মিলনায়তনে সুনামগঞ্জের উন্নয়ন ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অংশ গ্রহণ করেন।

ঢাকা থেকে আটক পুলিশ কনস্টেবল উজ্জ্বল পাঁচ দিনের রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার

সিলেটে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে গুলিতে নিহত সাংবাদিক এটিএম তুরাব হত্যা মামলায় এক পুলিশ সদস্যের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার দুপুরে সিলেট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেন কনস্টেবল উজ্জল সিনহার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে রোববার রাতে ঢাকা থেকে উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আলোচিত এই মামলায় এই প্রথম কোন আসামি গ্রেপ্তার হলো।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পিবিআই’র পরিদর্শক মোহাম্মদ মোরসালিন বলেন, কনস্টেবল উজ্জল সিনহাকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। সিলেটে পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম পিপিএম (সেবা) জানান, গ্রেফতার হওয়া পুলিশ কনস্টেবল ডিএমপিতে কর্মরত ছিলেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই সিলেট নগরের বন্দরবাজারে গুলিতে আহত হন সাংবাদিক এ টি এম তুরাব। ওইদিনই হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যান তিনি। তুরাব দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক জালালাবাদের নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনায় ১৯ আগস্ট সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন নিহতের ভাই আবুল হোসেন মোহাম্মদ আজরফ।
মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিলেট মহানগর পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. সাদেক দস্তগীর কাউসার, তৎকালীন উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ, সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) মিজানুর রহমান, কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ কল্লোল গোস্বামী, কতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) ফজলুর রহমান, এসআই কাজী রিপন সরকার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সিসিকের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আফতাব উদ্দিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি পিযূষ কান্তি দে, সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিসিকের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, নগরীর চালিবন্দর এলাকার নেহার মঞ্জিলের বাসিন্দা শিবলু আহমদ (মো. রুহুল আমিন), নগর পুলিশের কনস্টেবল সেলিম মিয়া, আজহার, ফিরোজ, উজ্জ্বল।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের মদদপুষ্ট আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তরা ও অবৈধ সরকারের অপেশাদার পুলিশের দ্বারা ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। আসামিরা সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে একজোট হয়ে বাদীর নিরপরাধ ছোট ভাই সাংবাদিক আবু তাহের মো. তুরাবকে (এটিএম তুরাব) হত্যা করেন। দিনদুপুরে শত-শত মানুষের সামনে ওই হত্যাকাÐ সংঘটিত হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে ২ থেকে ৫ নম্বর আসামিরা বাদীকে হত্যার হুমকি দেন। পরে আসামিরা রাষ্ট্রীয় প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাদীকে ঢাকায় নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করান।
এই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। আদালতের নির্দেশে গত ৮ অক্টোবর মামলার নথিপত্র কোতোয়ালি থানা পুলিশ পিবিআই-কে বুঝিয়ে দেয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুরসালিন বলেন, আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই কাজ শুরু করেছি এবং ১ জনকে আটক করেছি, দ্রæত তদন্তকাজ শেষ করার জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

কাজির বাজার ডেস্ক

আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৬ সালের এই দিনে ঢাকার তৎকালীন পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয়। এ উপলক্ষে ঢাকা ও টাঙ্গাইলের সন্তোষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাণী দিয়েছেন।
মওলানা ভাসানী তার কৈশোর-যৌবন থেকেই রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন। লাইন-প্রথা উচ্ছেদ, জমিদারদের নির্যাতন বিরোধী আন্দোলনসহ সারাজীবনই তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। তার উদ্যোগে ১৯৫৭ সালে কাগমারীতে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন বাংলাদেশের রাজনীতিতে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী অধিকারবঞ্চিত, অবহেলিত ও মেহনতি মানুষের অধিকার ও স্বার্থরক্ষায় আজীবন নিরবচ্ছিন্নভাবে সংগ্রাম করে গেছেন। জাতীয় সংকটে জনগণের পাশে থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি দেশ ও জনগণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে গেছেন। মওলানা ভাসানী সবসময় ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতেন। ক্ষমতার কাছে থাকলেও ক্ষমতার মোহ তাকে কখনও আবিষ্ট করেনি। ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন নির্মোহ, অনাড়ম্বর ও অত্যন্ত সাদাসিধে। তার সাধারণ জীবনযাপন এ দেশ ও জনগণের প্রতি গভীর ভালোবাসার প্রতিফলন। শোষণ ও বঞ্চনাহীন, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য মওলানা ভাসানী আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে মওলানা ভাসানীর জন্ম। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও তার জীবনের বড় অংশই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে। তিনি তার কৈশোর-যৌবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইল পৌর শহরের সন্তোষে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যাল, ভাসানী ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সমাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
আজ ১৭ নভেম্বর রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় মওলানা ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ। এরপর ভাসানীর পরিবার, রাজনীতিক দল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও মওলানা ভাসানীর মুরিদান, ভক্ত, অনুসারীরা মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং মোনাজাত করবেন। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা, মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, এতিম ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার পরিবেশন করা হবে।
ভাসানী ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মাহমুদুল হক সানু জানান, মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সন্তোসে ভাসানী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে (১১-১৭) নভেম্বর পর্যন্ত ৭দিন ব্যাপী ভাসানী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলার মুক্ত মঞ্চে প্রতিদিন আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।
জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল জানান, মওলানা ভাসানীর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে রোববার সকাল ১১টায় ভাসানীর মাজার প্রাঙ্গনে জেলা বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

 

জগন্নাথপুরে না হলেও লন্ডন হতে যাচ্ছে রাধারমণ লোক উৎসব

মো. শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর এলাকার কেশবপুর গ্রামের প্রয়াত বৈষ্ণবকবি শ্রী শ্রী রাধাররমণ দত্ত পূরকায়স্থ এর প্রয়াণ দিবসে প্রতি বছর রাধারমণ উৎসব হলেও এবার এখনো হয়নি। এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছরের ৯ ও ১০ নভেম্বর ২ দিন ব্যাপী জগন্নাথপুর উপজেলা রাধারমণ সমাজ কল্যাণ সাংস্কৃতিক পরিষদের উদ্যোগে কেশবপুর বাজার সংলগ্ন রাধারমণ কমপ্লেক্সের নির্ধারিত স্থানে রাধারমণ উৎসব অনুষ্ঠিত হতো। গত বছরও রাধারমণের ১০৮ তম প্রয়াণ দিবসে রাধারমণ উৎসব হয়েছে। এবার রাধারমণের ১০৯ তম দিবসে উৎসবের নির্ধারিত তারিখ পার হয়ে গেলেও উৎসব হচ্ছে না দেখে দেশ-বিদেশে থাকা জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে-রাধারমণের জন্মস্থান জগন্নাথপুরে এবার রাধারমণ উৎসব না হলেও লন্ডন হতে যাচ্ছে রাধারমণ লোক উৎসব। আগামী ১৮ নভেম্বর রাতে পূর্ব লন্ডনের আইওন টিভির হলরুমে জগন্নাথপুরের কৃতী সন্তান যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংস্কৃতিক প্রেমীদের নিয়ে গঠিত জগন্নাথপুর উপজেলা আন্তর্জাতিক গীতিকবি সাংস্কৃতিক পরিষদ ও রাধারমণ একাডেমি ইউকে এর যৌথ উদ্যোগে রাধারমণ লোক উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাধারমণ একাডেমি ইউকে এর সভাপতি জুবায়ের আহমদ হামজা, সহ-সভাপতি মির্জা জুয়েল আমিন, সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ইসলাম বাবুল, জগন্নাথপুর উপজেলা আন্তর্জাতিক গীতিকবি সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি আমির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের নাম-পদবী সহ পোষ্টারিং করা হয়েছে। রাধারমণ উৎসবে সংগীত পরিবেশন করবেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী আকাশ মাহমুদ, কল্পনা কলি, ইনা খান, দুর্বা দেব, সৈয়দ হাসান প্রমূখ। রাধারমণ লোক উৎসবটি সরাসরি সম্প্রচার করবে আইওন টিভি।
অপরদিকে-ভেতরগত নানা সমস্যা ও জটিলতার কারণে এবার রাধারমণের জন্মস্থান জগন্নাথপুরে এখনো উৎসব হয়নি। আদৌ হবে কি না এ নিয়েও নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে। জগন্নাথপুরের রাধারমণ ভক্ত সাংস্কৃতিক প্রেমিদের মধ্যে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাধারমণ হচ্ছেন জগন্নাথপুরের ইতিহাসের অংশ। রাধারমণ উৎসব হচ্ছে জগন্নাথপুরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা। এবার বাৎসরিক নির্ধারিত তারিখ পার হয়ে গেলেও রাধারমণ উৎসব না হওয়ায় আমরা ব্যতীত হয়েছি। আমরা চাই রাধারমণ উৎসব হোক। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক। রাধারমণের ইতিহাস আগামী প্রজন্ম জানুক। রাধারমণ কোন ব্যক্তি নন, তিনি নিজেই এক ইতিহাস। এশিয়া মহাদেশের ধামাইল গানের জনক রাধারমণ দত্ত। বাংলাদেশের গন্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বে রাধারমনের পরিচিতি রয়েছে। রয়েছে রাধারমণের গানের ব্যাপক জনপ্রিয়তা। সেই ঐতিহাসিক ব্যক্তি বৈষ্ণবকবি শ্রী শ্রী রাধারমণ দত্ত পূরকায়স্থ বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর পৌর শহরের কেশবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এ ইতিহাসটি আমরা জগন্নাথপুর বাসীকে বিশ্ব দরবারে গর্বিত করেছে।
এবার নির্ধারিত তারিখে কেন রাধারমণ উৎসব হয়নি এবং আদৌ হবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা রাধারমণ সমাজ কল্যাণ সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি জিলু মিয়া, সহ-সভাপতি আছকির আলী, যুগ্ম-সম্পাদক রমজান আলী, সদস্য লিটন মিয়া, কামরুল হাসান তেরাই, তৈয়ব আলী, টুনু মিয়া, তুতা মিয়া ও রিপন মিয়া সহ কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, গত প্রায় ৩০ বছর ধরে আমরা নিয়মিত রাধারমণ উৎসব করে আসছি। এবার অনিবার্য কারণে উৎসব পালনে বিলম্ব হওয়ার জন্য আমরা দেশ/বিদেশে থাকা সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। যদিও তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আরো কিছুদিন বিলম্ব হতে পারে, তবে রাধারমণ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এতে সকলের সহযোগিতা চাই।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থাই পারে সকল সংকট সমাধান করতে : খন্দকার মুক্তাদির

 

বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, নির্বাচনই গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একমাত্র পথ। দেশের সব জিনিসপত্রের দাম আঁকাশছোয়া সে দিকে নজর দিতে হবে। দীর্ঘ ১৭ বছরের আওয়ামী দু:শাসন শেষে দেশের এখন মুক্ত বাতাসের স্বাদ নিতে পারছে সাধারণ জনগণ। শহীদ জিয়ার চেতনাকে বুকে লালন করেই বিএনপি নেতাকর্মীদের এগিয়ে যেতে হবে। কোনভাবেই আওয়ামী দোসররা যেন আর মাথা চাড়া দিতে না পারে সেদিকে অর্ন্তবর্তী সরকার কে দৃষ্টি দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটসহ সকল সমস্যা সমাধান করতে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রয়োজন। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে বিভক্ত করেছে গত ১৭ বছরে। ছাত্র-জনতার যুগপৎ আন্দোলন এবং গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষিতে এই মুহ‚র্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন। জনগণের ভোটের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সংসদ তৈরি করতে চায়। আর বর্তমান অন্তর্র্বতীকালিন সরকারের মূললক্ষ্যে হওয়া উচিত এটি।
তিনি শনিবার সিলেট মহানগর বিএনপির ১০নং ওয়ার্ড বিএনপি আয়োজিত ঘাসিটুলা মোকামবাজারে উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
১০নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ছাব্বির আহমদের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি ও সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ডা. নাজমুল ইসলাম, সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মূর্শেদ আহমদ মুকুল, রেজাউল করিম আলো, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাকিল মোর্শেদ, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ রহিম আলী রাসু, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদ্রীপ জ্যোতি এষ, সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান, মহানগর বিএনপির সহ-বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আলী আমজাদ, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন শামীম, সহ-সমাজ সেবা সম্পাদক শামীম আহমদ লোকমান, সহ-স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক সেলিম আহমদ মাহমুদ, সম্মানিত সদস্য আলী আকবর ফকির, জালাল উদ্দিন, অলি আহমদ, শামীম আহমদ, নাজমুল হোসেন মজনু, আব্দুল হামিদ, রুহুল ইসলাম ঝুমন, নুরুজ্জামান জাহেদ, সামছুজ্জামান, আকরাম হোসেন, নজরুল ইসলাম, শাহজাহান, তাজ উদ্দিন, জয়নুল হক, কালা মিয়া, শরীফ আহমদ আমিন, কয়েছ আহমদ, মোক্তার আহমদ রাফি, এসএম ফাহিম, আব্দুল গফুর (আক্কাস), জুবেদ আমিরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন ফরিদ উদ্দিন মাসুদ। বিজ্ঞপ্তি

সিলেট সীমান্তে ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকার চোরাই পণ্য জব্দ

স্টাফ রিপোর্টার

শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে আনা বিজিবি সিলেট সেক্টরের অধীনস্থ সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) এর পৃথক অভিযানে প্রায় ২ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকার চোরাই পণ্য জব্দ করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) এর একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো: হাফিজুর রহমান, পিএসসি।
বিজিবি’র প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ ও ১৬ নভেম্বর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) এর দায়িত্বাধীন সিলেট এবং সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমান ভারতীয় কাশ্মীরি হাজী শাল, শাড়ী, থ্রী পিস, মাই ফেয়ার ক্রিম, পন্ডস ব্রাইট বিউটি ক্রিম, গার্নিয়ার ম্যান ফেসওয়াশ, শীতের কম্বল, সাবান, সার্ফ এক্সেল এবং অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী নৌকাসহ অন্যান্য ভারতীয় পণ্য জব্দ করে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ২ কোটি ৩৭ লক্ষ ৩৬ হাজার ৫শত ৭০ টাকা।
এ বিষয়ে সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান, পিএসসি বলেন, উর্ধ্বতন সদরের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি’র আভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা সর্বোতভাবে অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সীমান্তবর্তী এলাকার অভিযান পরিচালনা করে চোরাচালানী মালামাল জব্দ করা হয়। জব্দকৃত চোরাচালানী মালামাল সমূহের বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

অন্তর্র্বর্তী সরকারের ১০০ দিন জনপ্রত্যাশা পূরণ হোক

বাংলাদেশের রাজনীতি এক চরম দুঃসময় পার করে এসেছে। এর বড় কারণ হচ্ছে রাজনীতিতে অর্থ আর পেশিশক্তির ক্রমবর্ধমান প্রভাব। রাজনীতিতে আদর্শ, জনকল্যাণ, আত্মত্যাগ ও নৈতিকতা ক্রমেই দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়েছে। দেড় দশক ধরে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন স্তরে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের এক চরম অবক্ষয় পরিলক্ষিত হয়েছে।
দেড় দশকের ধারাবাহিক অপশাসনের পরিপ্রেক্ষিতে জনমনে ক্ষোভ পুঞ্জীভ‚ত হতে থাকে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ও দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্র্বর্তী সরকার। সরকারের ১০০ দিন পূর্তি হয়েছে।
অন্তর্র্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক। ব্রাসেলসভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রæপ ‘বাংলাদেশে নতুন যুগ? সংস্কারের প্রথম ১০০ দিন’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিশ্বব্যাপী আগাম সতর্কতামূলক পরামর্শ দেওয়া প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ পরিস্থিতিতে নিবিড় দৃষ্টি রাখছে। ক্রাইসিস গ্রæপের মায়ানমার ও বাংলাদেশ বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক থমাস কিয়ান বলেছেন, “বাংলাদেশের নতুন অন্তর্র্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিতে মুহাম্মদ ইউনূস শপথ নেওয়ার ১০০ দিন পর দেশটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে এসে দাঁড়িয়েছে।
অন্তর্র্বর্তী সরকারের শাসনব্যবস্থার উন্নতি করার এবং আরেকটি স্বৈরাচারী সরকারের উত্থান ঠেকানোর এমন সুযোগ ‘এক প্রজন্মে একবারই’ আসে। কিন্তু কাজের পরিমাণ বিশাল, বিশেষ করে অন্তর্র্বর্তী সরকারকে সামরিক বাহিনী এবং সুধীসমাজসহ মূল রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সঙ্গে এক ধরনের রাজনৈতিক ঐকমত্য বজায় রাখতে হবে। ক্রাইসিস গ্রæপ মনে করে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের পর শাসনব্যবস্থার উন্নতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করার এক প্রজন্মে একবার আসে এমন সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ, যা আরেকটি স্বৈরাচারী সরকারের উত্থানের পথ বন্ধ করতে পারে। যদি এই অন্তর্র্বর্তী সরকার হোঁচট খায়, তবে দেশটি আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে অথবা এমনকি সামরিক শাসনের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরো উচ্চাকাক্সক্ষী সংস্কারের জন্য জনসমর্থন ধরে রাখতে দ্রæত ফল দৃশ্যমান করা অন্তর্র্বর্তী সরকারের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
এই সরকারের অনেক বেশি সময় ক্ষমতায় থাকাটা এড়ানো উচিত এবং নতুন পদক্ষেপের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে। ক্রাইসিস গ্রæপের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, এখন পর্যন্ত ইউনূস ও তাঁর সহকর্মীদের প্রতি ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। কিন্তু জনপ্রত্যাশার ভালো-খারাপ দুই ধরনের পরিণতিই রয়েছে। যদি সংস্কার আনতে অন্তর্র্বর্তী সরকার হোঁচট খায়, সম্ভবত এর পরিণতি দাঁড়াতে পারে সামান্য অগ্রগতিসহ একটি আগাম নির্বাচন; সবচেয়ে খারাপ দৃশ্যপটে, সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারে। ক্রাইসিস গ্রæপের গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘অনিশ্চয়তায় অর্থনীতি আরো ধাক্কা খেয়েছে।’ ক্রাইসিস গ্রæপ মনে করে, ‘আকাশচুম্বী জনপ্রত্যাশা সামলানোই বড় চ্যালেঞ্জিং।’ চ্যালেঞ্জ আরো আছে। অন্তর্র্বর্তী সরকার যত বেশি সময় ক্ষমতায় থাকতে চাইবে, আগাম নির্বাচনের দাবি তত জোরদার হবে এবং সরকারের বৈধতা নিয়ে আরো বেশি সন্দেহ দেখা দেবে।
সরকারের সামনে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। দূর করতে হবে অস্থিরতা। দুর্নীতি দূর করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর পরও ক্রাইসিস গ্রæপ আশাবাদী। কারণ যদিও চ্যালেঞ্জ প্রচুর, তবু হাসিনা সরকারের বিদায়ে গঠিত অন্তর্র্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সামনে অভ‚তপূর্ব এক সুযোগ নিয়ে এসেছে। সবার আন্তরিক চেষ্টায় একটি কল্যাণমুখী বাংলাদেশ রাষ্ট্র বিশ্বে নতুন করে পরিচিত হবে, এটিই আমাদের প্রত্যাশা।

দুদকের জালে প্রায় দুই শ’ শীর্ষ দুর্নীতিবাজ

কাজির বাজার ডেস্ক

গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে প্রভাবশালী প্রায় দুইশ’ দুর্নীতিবাজকে জালে ঘিরেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে শুরুতে নানা তোড়জোড় থাকলেও কিছুদিন না যেতেই অদৃশ্য কারণে এ তৎপরতায় ভাটার টান ধরেছে। প্রায় তিন মাস হতে চললেও দুদক কর্মকর্তারা দুর্নীতিবাজ এসব রাঘব-বোয়ালদের অনুসন্ধানই শেষ করতে পারেনি। অথচ এরই মধ্যে অনেক দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী-এমপি-আমলা ও রাজনীতিক দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধান শুরু হওয়া বেশিরভাগ দুর্নীতিবাজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টও প্রায় শূন্য। এরই মধ্যে অনেকেই তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কিংবা ঘনিষ্টজনদের নামে হস্তান্তর করেছেন। কেউবা বায়না কিংবা সাফ কবলা দলিল মূলে এসব সম্পদ বিক্রি করে দিয়েছেন। মামলা না হওয়ায় এসব দুর্নীতিবাজের অর্থ-সম্পদ আদালত জব্দ করতে পারেনি। অথচ ২০০৭ সালের দুদক বিধিমালার ৭ বিধিতে বলা হয়েছে, ‘নির্দেশ পাওয়ার পর অনুসন্ধান কর্মকর্তাকে ৪৫ দিনের মধ্যে অনুসন্ধান কাজ শেষ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান কাজ শেষ করতে না পারলে যুক্তিসংগত কারণ উল্লেখ করে অনুসন্ধান কর্মকর্তা আরও ৩০ দিন সময় নিতে পারবেন।’ আর ২০ (খ) অনুযায়ী, তদন্ত কর্মকর্তার অদক্ষতার অভিযোগে কমিশন আইন বা প্রযোজ্য আইনে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে দুদক। যদিও অনুসন্ধানের টাইম-লাইন সর্বোচ্চ ৭৫ দিনের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করতে না পারা দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কমিশন কোনো ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে তা এখনো শোনা যায়নি।
দুদকের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করতে না পারার জন্য সময়মতো রেকর্ড-পত্র না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বেশিরভাগ অনুসন্ধান কর্মকর্তা। তাদের ভাষ্য, অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় রেকর্ড-পত্র ইচ্ছাকৃতভাবে সরবরাহে দেরি করা হচ্ছে। ফলে তাদের নিয়মমাফিক অনুসন্ধান কাজ এগিয়ে নিতে বিলম্ব হচ্ছে।
তবে তাদের এ দাবিকে ‘খোঁড়া যুক্তি’ বলছেন আইনজ্ঞরা। তাদের ভাষ্য, দুদক আইন, ২০০৪-এর ১৯(৩) ধারায় এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে। সেখানে বলা আছে, ‘কোনো কমিশনার বা কমিশন হইতে বৈধ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তাকে উপ-ধারা (১) এর অধীন ক্ষমতা প্রয়োগে কোনো ব্যক্তি বাধা প্রদান করিলে বা উক্ত উপ-ধারার অধীন প্রদত্ত কোনো নির্দেশ ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো ব্যক্তি অমান্য করিলে উহা দÐনীয় অপরাধ হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনূর্ধ্ব তিন বছর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের কারাদÐে বা অর্থদÐে বা উভয় প্রকার দÐে দÐনীয় হইবেন।’
একই ধারায় অনুসন্ধান বা তদন্তকার্যে কমিশনের বিশেষ ক্ষমতা সম্পর্কে বলা হয়েছে- ‘দুর্নীতি সম্পর্কিত কোনো অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্তের ক্ষেত্রে, কমিশনের নিম্নরূপ ক্ষমতা থাকিবে, যথা- সাক্ষীর সমন জারি ও উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ এবং শপথের মাধ্যমে সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা; কোনো দলিল উদঘাটন এবং উপস্থাপন করা; শপথের মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণ; কোনো আদালত বা অফিস হইতে পাবলিক রেকর্ড বা উহার অনুলিপি তলব করা; সাক্ষীর জিজ্ঞাসাবাদ এবং দলিল পরীক্ষা করার জন্য পরোয়ানা জারি করা এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নির্ধারিত অন্য যে কোনো বিষয়।’
‘কমিশন যে কোনো ব্যক্তিকে অনুসন্ধান বা তদন্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনো তথ্য সরবরাহ করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে এবং অনুরূপভাবে নির্দেশিত ব্যক্তি তাহার হেফাজতে রক্ষিত উক্ত তথ্য সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবেন।’
আইনজ্ঞরা বলছেন, অনুসন্ধানে টাইম-লাইন না মানার জন্য রেকর্ড-পত্র সময়মতো না পাওয়ার অজুহাত তোলা হলে তা ধোপে টিকবে না। কারণ অনুসন্ধানের জন্য প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সরবরাহে কেউ গাফিলতি করলে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ এ অভিযোগে কারো বিরুদ্ধে কোনো মামলা করেছে তা শোনা যায়নি। এর নেপথ্যে অন্য কারণ আছে বলে সংশয় প্রকাশ করেন তারা। যদিও এ নিয়ে দুদকের দায়িত্বশীলরা কেউ সরাসরি কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তারা বলছেন, কমিশনের এখতিয়ার ছাড়া গণমাধ্যমে কথা বলায় বিধিনিষেধ রয়েছে। অনুসন্ধানে ধীর গতির বিষয়টি তারা কেউ স্বীকার করেননি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের একজন কর্মকর্তা বলেন, অর্ন্তর্র্বতী সরকার গঠনের পর ১৩ আগস্ট থেকে সংস্থাটির অনুসন্ধান কার্যক্রমে গতি পায়। প্রতি কার্যদিবসে নতুন নতুন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কাজ শুরু করে কমিশন। তলব, অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ ও বিভিন্ন দপ্তরে তথ্য চাওয়া শুরু করে। তবে গত ২৯ অক্টোবর মঈনুদ্দিন কমিশনের আকস্মিক পতনের পর থমকে গেছে এসব কার্যক্রম। ওইদিন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহর সঙ্গে সংস্থাটির দুই কমিশনার মো. জহুরুল হক ও আছিয়া খাতুনও পদত্যাগ করেন। তাদের পদত্যাগের পর দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগের নাম প্রস্তাব করতে গত ১০ নভেম্বর বাছাই কমিটি গঠন করে সরকার।
জানা গেছে, মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ কমিশনের পদত্যাগের পর নতুন কোনো অনুসন্ধান শুরু করেনি দুদক। বিভিন্ন অনুসন্ধানের ঘটনায় মাত্র তিনটি তলব ও একই সংখ্যক মামলা হয়েছে। এর মধ্যে আলোচিত কোনো মামলা নেই। এর আগের সপ্তাহে ২২ থেকে ২৯ অক্টোবর তলবের ঘটনা ছিল ৫টি। আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, জামালপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজমের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞাসহ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের বিরুদ্ধে ঋণ কেলেঙ্কারির মামলা হয়েছে। দুদকের একাধিক কর্মকর্তার দাবি, চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনারের পদত্যাগের পর অনেকটাই থমকে গেছে দুদকের নিয়মিত কার্যক্রম। বিশেষ করে অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত, মামলার সিদ্ধান্ত, অভিযোগপত্রের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া ডাকযোগে ও কলসেন্টারযোগে আসা শত শত অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে সেগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকারের শতাধিক মন্ত্রী-এমপি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধানের কাজ চলমান। এমন একটি সময়ে শীর্ষ পর্যায়ে শূন্যতা দুদকের তদন্তসহ সব কার্যক্রমে স্থবিরতা সৃষ্টি করবে। নতুন কমিশন গঠনের আগ পর্যন্ত নতুন করে কারও বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু ও তদন্ত বা মামলার সুযোগ থাকবে না। ফলে দ্রæত নতুন কমিশন গঠনের মাধ্যমে এ শূন্যতা পূরণ করা জরুরি।
দুদকের আইন অনুযায়ী, সব ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমিশনের। কমিশন শূন্য থাকলে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। ফলে যত দ্রæত কমিশন গঠন হবে, তত দ্রæত স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে পারবে দুদক।
তবে শীর্ষ পর্যায়ে শূন্যতার কারণে অনুসন্ধান থমকে যাওয়ার দাবিটি কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তাদের ভাষ্য, গত ১৯ আগস্ট স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও আয়ে শীর্ষে থাকা ৪১ জন সাবেক মন্ত্রী-এমপির দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। আর দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ এবং দুই কমিশনার মো. জহুরুল হক ও আছিয়া খাতুনও পদত্যাগ করেন ২৯ অক্টোবর। এ হিসাবে ওই ৪১ মন্ত্রী-এমপির দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরুর ৬৯ দিনের মাথায় মঈনউদ্দিন কমিশনের পতন হয়। অথচ অনুসন্ধানের টাইম লাইন ৪৫ দিন। এর মধ্যে অনুসন্ধান কাজ শেষ করতে না পারলে যুক্তিসঙ্গত কারণ উল্লেখ করে অনুসন্ধান কর্মকর্তা আরও যে ৩০ দিন সময় নিতে পারে সে মেয়াদের বাকি ছিল মাত্র ৬ দিন। যা কোনোভাবেই থেমে থাকার কথা নয়। কিন্তু বাস্তবে এই সময়ের মধ্যে মাত্র একটি অনুসন্ধান সমাপ্ত করে মামলা করা হয়েছে।
দুর্নীতি পর্যবেক্ষণকারী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের পট পরিবর্তনের পর মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও এমপিসহ যেসব জনপ্রতিনিধি এবং আমলাদের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে, এদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে বেশ আগে থেকেই এ ব্যাপারে অভিযোগ ছিল। এ ব্যাপারে এর আগে টিআইবি থেকেও তথ্য দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের আগে তারা দেখিয়েছে কীভাবে জনপ্রতিনিধিদের সম্পদ অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তখন দুদক পদক্ষেপ নেয়নি। তবে সরকারের পট পরিবর্তনের পর আগের ওই তথ্যের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করে দুদক। প্রসঙ্গত, অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রথম দুই মাসে দুদকের অনুসন্ধানের তালিকায় ১৮০ জনের নাম থাকলেও তৃতীয় মাসে তা দুই শ’য়ের কোটা ছাড়িয়ে যায়। এ তালিকার বেশিরভাগই আওয়ামী দলীয় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপি এবং বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠজন। এছাড়া বেশ কয়েকজন আলোচিত-সমালোচিত ব্যবসায়ী ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন।
এর মধ্যে গত ১৫ আগস্ট সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ১৭ আগস্ট সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ চার এমপি, ১৮ আগস্ট সাবেক ভ‚মিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এর বাইরে ১৯ আগস্ট সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশীসহ ৪১ জন মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়। ২০ আগস্ট সাবেক নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খানসহ পাঁচ এমপি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী (পিয়ন) মো. জাহাঙ্গীর, ২২ আগস্ট সালমান এফ রহমানসহ তিন এমপি, ২৫ আগস্ট সাবেক পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীসহ চার এমপি ও একজন সাবেক আমলা, ২৭ আগস্ট সাবেক দুই এমপি, ২৮ আগস্ট সাবেক মৎস্যমন্ত্রীসহ চার এমপি ও ২৯ আগস্ট সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমসহ দুই এমপির দুর্নীতি অনুসন্ধানে নামে দুদক। এদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ৯ অক্টোবর মামলা করা হয়েছে।
দুর্নীতি পর্যবেক্ষণকারী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের দাবি, যে গতিতে অনুসন্ধান চলছে এ ধারা অব্যাহত থাকলে দুর্নীতিবাজ রাঘব-বোয়ালদের বিরুদ্ধে শাস্তির আওতায় আনতে দীর্ঘ বিলম্ব হবে। তাদের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ-সম্পদ বেহাত হয়ে যাবে। তাই দুদককে দ্রæত সংস্কার করে অনুসন্ধান-মামলা ও তদন্ত গতিশীল করা জরুরি।

বালাগঞ্জে ইয়াবাসহ আটক ১

বালাগঞ্জ প্রতিনিধি

বালাগঞ্জ অভিযান চালিয়ে মাদকসহ একজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত দুলাল মিয়া (৩৫) উপজেলার জালালপুর গ্রামের সোলেমান মিয়ার ছেলে। শুক্রবার দিবাগত মধ্যেরাতে উপজেলার পুর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের জালালপুর থেকে তাকে আটক করা হয়।
এসময় তার কাছ থেকে ১৯০ পিস ইয়াবা ও নগদ ২১০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে। বালাগঞ্জ থানার ওস ফরিদ উদ্দিন ভুইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বালাগঞ্জ থানার মামলা নং-০৪, তারিখ-১৬/১১/২০২৪ ইং, ধারা-২০১৮।