কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে জরাজীর্ণ কক্ষে ঘরের চাল নেই, দেয়াল নেই, শ্রেণী কক্ষ নেই, বসার বেঞ্চ নেই, নেই কোন পড়াশুনার পরিবেশ তবুও খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করা হচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ১৯৯৫-৯৬ সালে ৩৩ শতক জমির উপর গড়ে উঠে জগন্নাথপুর রেজিষ্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়। জগনপাশা, জগন্নাথপুর ও প্রতাপী এই তিন গ্রামের শিক্ষার্থীর পড়াশুনার লক্ষ্যে জগন্নাথপুর গ্রামের শিক্ষানুরাগী মরহুম নসির মিয়া এই ভূমি দান করেন। এরপর এখানে গড়ে উঠে ৬ কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা পূর্ণাঙ্গ বিদ্যালয় ঘর। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ ৪জন শিক্ষক পাঠদান করে থাকেন। প্রথম বছর ভালো ভাবে চললেও ১৯৯৭ সালে ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যালয়ের ৪টি কক্ষের টিনের চাল, দেয়াল, দরজা, জানালা ভেঙে উড়ে যায়। কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়েও শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া ও অফিসের কার্যক্রম জরাজীর্ণ দুইটি কক্ষেই চালিয়ে আসছেন। এই দুইটি কক্ষও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। একটু বৃষ্টিতে চালের ফাঁক দিয়ে বৃষ্টির জল পড়ে। ঝড়-তুফানেতো আতঙ্কের সৃষ্টি হয় শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের মনে।
অতি সম্প্রতি বিদ্যালয়ের কাজ করার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল এডিবির অনুদান প্রদান করেন।
২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ হয়। কিন্তু গত দুই বছরেও বিদ্যালয়টি অবহেলিতই রয়ে গেছে। কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি কোথাও। ভবনটি দেখলে কোন বিদ্যালয় মনে হয় না। দেয়ালে দেখা দিয়েছে ফাটল। যখন তখন ধসে পড়ে বড় ধরনের দুঘর্টনা ঘটতে পারে। শ্রেণী কক্ষের অভাব আর জরাজীর্ণতার ভয়ে অনেক শিশুর বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ হয়ে গেছে। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের সংস্কারকাজ করানোর জন্য কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ থেকে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মবশ্বির আলী জানান, বিদ্যালয়টির দীর্ঘদিনের সমস্যার কারণে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এতে বিদ্যালয়ে পড়াশুনা ব্যাহত হওয়াসহ নানা সমস্যা কথা জানালেন শিক্ষকরা। তিনি কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ থেকে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে বলে জানান। প্রধান শিক্ষক জরুরী ভিত্তিতে শ্রেণী কক্ষ নির্মাণসহ বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মনোরমা দেবী জানান, উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।