স্কুলছাত্র আবু সাঈদ হত্যা মামলা ॥ প্রথমদিনে পিতা-মামাসহ ৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

31

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীতে আলোচিত স্কুল ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা মামলায় প্রথমদিনে আদালতে সাঈদের পিতা তার মামা ও প্রতিবেশী ৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো.আব্দুর রশিদ তাদের এ সাক্ষ্যগ্রহণ গ্রহণ করেন। তারা হচ্ছেন, সাঈদের পিতা মতিন মিয়া, তার মামা আশরাফুজ্জামান, প্রতিবেশী ফিরোজ আহমদ, ওলিউর রহমান ও শফিকুল ইসলাম। আদালত আগামী রবিবার (২২ নভেম্বর) পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেন।
আদালত সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার হরতালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে পুলিশ এ মামলায় অভিযুক্ত এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ কনস্টেবল (বরখাস্ত) এবাদুর রহমান পুতুল, র‌্যাবের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা, সিলেট জেলা ওলামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম রাকিব ও প্রচার সম্পাদক মাহিব হোসেন মাসুমকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। তাদের উপস্থিতিতে ৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। গত মঙ্গলবার ওই আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে অপহরণ, মুক্তিপণ, সহযোগিতা ও হত্যার অভিযোগ এনে উল্লেখিত জনকে এ মামলায় অভিযুক্ত করে চার্জগঠন করা হয়। এ মামলায় মোট সাক্ষী ৩৭ জন রয়েছেন।
সূত্র জানায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর এই মামলায় সিলেট মহানগর হাকিম ১ম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মহানগর পুলিশের সহকারি কমিশনার (প্রসিকিউশন) আবদুল আহাদ চৌধুরী। মামলাটি তদন্ত করেন কোতোয়ালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসাইন। ওই অভিযোগপত্রে এই ৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। ৭ অক্টোবর অভিযোগপত্রের উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ২৯ অক্টোবর সিলেটের মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাহেদুল করিম চার্জশিট আমলে নিয়ে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নথিপত্র স্থানান্তর করেন এবং ৮ নভেম্বর এই আদালত মাছুমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ও মালামাল ক্রোকের আদেশ দেন। আদেশের একদিনের মাথায় পলাতক আসামী মাছুম ৯ নভেম্বর সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পন করে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এরপর  চার্জগঠনের কয়েকটি তারিখ পরিবর্তন হয়।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১১ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর রায়নগর থেকে স্কুলছাত্র আবু সাঈদকে (৯) অপহরণ করা হয়। এরপর পুলিশ ১৩ মার্চ রাতে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুলের কুমারপাড়াস্থ ঝর্ণারপাড় সবুজ-৩৭ নং বাসার ছাদের চিলেকোঠা থেকে সাঈদের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে। পরে এ ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল এবাদুর, র‌্যাবের সোর্স গেদা ও ওলামা লীগ নেতা রাকিবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই তিনজনই আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। নিহত আবু সাঈদ রায়নগর হযরত শাহ মীর (র.) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ও একই এলাকার দর্জিবন্দ বসুন্ধরা ৭৪ নম্বর বাসার আব্দুল মতিনের পুত্র। তাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার এড়ালিয়াবাজারের খশিলা এলাকায়। সর্বশেষ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ওলামালীগ নেতা মাসুম। বর্তমানের অভিযুক্ত এই ৪ আসামি সিলেটের কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন।