কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের রিভিউ আবেদন নাচক করে দিয়েছেন আদালত এবং এর মধ্যদিয়ে তাদের আপিল বিভাগের ফাঁসির রায়ই বহাল রইলো।
গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই দুই নেতার রিভিউ নাকচ হওয়ার কথা জানিয়ে দেন আপিল বিভাগ।
আদালত শুধু বলেছেন, রায় নিয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলার নেই। যেহেতু রিভিউ নাকচ করা হয়েছে তাই এ নিয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলছি না।
এটিই এই দুই নেতার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার চূড়ান্ত আদেশ। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা ছাড়া তাদের ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা রইলো না। কারাবিধি অনুযায়ী, একজন আসামির রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার পর তিনি প্রাণভিক্ষা চাওয়ার জন্য সাত দিন সময় পেয়ে থাকেন। এরপর তাঁকে ২১ দিনের আগে নয় এবং ২৭ দিনের বেশি নয় এমন সময়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।
রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে দুই অপরাধীর আইনজীবী এডভোকেট মাহবুব হোসেন বলেন, আদালত আমাদের বক্তব্য গ্রহণ করেননি। কাজেই আইনজীবী হিসেবে আমার আর কিছু করার বলারও নেই। এখন তারা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন কি না তা আসামিদের নিজস্ব ব্যাপার। এটা তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগে মঙ্গলবার মুজাহিদের রিভিউয়ের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পরে রায়ের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
অপরদিকে সাকা চৌধুরীর রিভিউ আবেদনের শুনানি বুধবার সকালে অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতে সাকা চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার যুক্তি তুলে ধরেন। দেড় ঘণ্টা শুনানির পর আদালত বিষয়টি রায়ের জন্য রাখে। বেলা সাড়ে ১১টায় তার রিভিউ আবেদনের রায়ও ঘোষণা হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ দুজনের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর নিয়ম অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করতে হয়। সে অনুযায়ী সময় শেষ হয়ে যাওয়ার একদিন আগেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেন সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদ।
গত ২৯ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এ ছাড়া ১৬ জুন একই অপরাধে মুজাহিদের ফাঁসির রায় বহাল রাখেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
এর আগে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
প্রসঙ্গত, এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধে রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লা এবং কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।