রাজনগর-বালাগঞ্জ সড়কে কুশিয়ারা নদীতে ব্রীজ নির্মাণের দাবী ২২টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের

66

শ্রীমঙ্গল থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারে রাজনগর-বালাগঞ্জ সড়কের কুশিয়ারা নদীতে ব্রীজের অভাবে যুগের পর যুগ চরম অবহেলায় pic-17রাজনগর ও বালাগঞ্জ উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের। কুশিয়ারা নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মান হলে শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসায়-বানিজ্যসহ উন্নয়নের প্রসার হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন বৃটিশ আমলে বাংলাদেশের নৌবন্দর গুলোর অন্যতম ছিল কুশিয়ারা ও কাউয়াদীঘি হাওর তীরবর্তী রাজনগর-বালাগঞ্জের মধ্যবর্তী বিলবাড়ি।
বৃহত্তর সিলেটের ব্যবসায়-বাণিজ্যের একমাত্র নৌবন্দর হিসেবে এর খ্যাতি রয়েছে দেশে-বিদেশে। দেশী-বিদেশী ব্যবসায়ীদের পদচারণায় দিন রাত মুখরিত থাকতো এ অঞ্চল।
সে সময় রাস্তা-ঘাট ততটা উন্নত না থাকার কারণে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল নদী পথের লঞ্চ, ষ্টিমার ও ইঞ্জিনের নৌকা।
তৎকালীন বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা কুশিয়ারা নদীর তীরে এ বন্দর থেকে বিভিন্ন দ্রব্য সংগ্রহ করে ব্যবসায়-বাণিজ্য করতেন।
সে সময়ে ব্যবসায়-বাণিজ্যের পণ্য সংগ্রহের এক মাত্র কেন্দ্র ছিল কুশিয়ারা-কাউয়াদীঘি হাওরের তীরবর্তী রাজনগর-বালাগঞ্জ মধ্যবর্তী বিলবাড়ি অঞ্চল।
কালের বিবর্তনে এবং দেশের স্থলপথের উন্নয়নের ফলে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসায়-বাণিজ্যসহ সকল ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে। বছরের পর বছর চরম অবহেলায় এ অঞ্চলের হাজার হাজার পেশাজীবী মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন নৌকাযোগে কুশিয়ারা নদী পার হয়ে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন।
রাজনগর উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো দূরবর্তী হওয়ায় স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কুশিয়ারা নদী পার হয়ে বালাগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করছে। বিভিন্ন সময় নৌকাডুবির মত মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটছে। অবহেলিত এ অঞ্চলের লোকজনের দাবী কুশিয়ারা নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মাণ। ব্রীজটি নির্মাণ হলে শুধু রাজনগর-বালাগঞ্জ নয় পার্শ্ববর্তী ফেঞ্চুগঞ্জ ও ওসমানী নগর থানার মানুষও উপকৃত হবে। এসব অঞ্চলের মানুষ সিলেট মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে যোগাযোগ ক্ষেত্রে খুব সহজ হবে।
২০১৩ সালে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী বিলবাড়ি অঞ্চলে একটি ব্রীজ নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য পরিদর্শনে এসেছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের প্রকৌশলী অধ্যাপক সুজিত কুমার বালা ও অধ্যাপক তারেকুল ইসলাম। পরিদর্শনকালে ব্রীজ নির্মাণের প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করেন। পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান, রাজনগর-মৌলভীবাজারের সংসদ সদস্য সদ্য প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর ভাই সৈয়দ মোস্তাক আলী, বালাগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর, রাজনগর উপজেলা প্রকৌশল রুবাইয়াত জামান, বালাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।
বালাগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর জানান, এ জনপদের মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে যত দ্রুত সম্ভব কুশিয়ারা নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মাণ করা প্রয়োজন।
রাজনগর উপজেলা প্রকৌশল রুবাইয়াত জামান জানান, রাজনগর-বালাগঞ্জ রাস্থায় কুশিয়ারা ব্রীজের জরিপ কাজ শেষে ৪২ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্প প্রস্তাব পাস হলেই যথাযত প্রক্রিয়া শেষে রাজনগর এলজিইডি বিভাগের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে।