সিটি নির্বাচনে নীরব প্রতিশোধের আহ্বান খালেদা জিয়ার

57

BC-26-04-15-N_21কাজিরবাজার ডেস্ক :
সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নীরব প্রতিশোধ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এ ছাড়া ভোট শেষে বিকেল থেকে ভোট কেন্দ্রে পাহারা বসাবার জন্যও ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে রবিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে গুলশানে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান খালেদা জিয়া।
ঘণ্টাব্যাপী লিখিত বক্তব্যের শুরুতেই প্রতিবেশী নেপাল ও ভারতে সংঘটিত ভূমিকম্পে প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতিতে শোক প্রকাশ করেন তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পে প্রতিবেশী নেপাল ও ভারতে বহু মানুষের প্রাণহানি এবং আমাদের দেশের হতাহতের ঘটনায় আমি গভীরভাবে মর্মাহত। বেদনার্ত মন নিয়ে অনেক দিন পর সরাসরি আপনাদের মুখোমুখি হয়েছি।
সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকতা হচ্ছে সত্য অনুসন্ধান এবং তা মানুষের সামনে তুলে ধরার এক কষ্টকর মহান পেশা। এই পেশায় যারা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে নিয়োজিত, আমরা তাদের বরাবর সম্মান করি। দীর্ঘদিন আপনারা আমার সঙ্গে কষ্ট করেছেন। এখনো করছেন। এ জন্য আমি আপনাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
খালেদা জিয়া বলেন, আমি আশা করি, দেশ-জাতির বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে সত্যের প্রতি এই অবিচল নিষ্ঠা আপনারা সাহসের সঙ্গে অব্যাহত রাখবেন। দেশের মানুষ আপনাদের ওপর অনেক বেশি ভরসা করে।
ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভোট হচ্ছে জনগণের এক বিরাট ক্ষমতা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিরাট শক্তি। সঠিকভাবে সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করুন। নীরব বিপ্লব ঘটান। মা-বোন, মুরুব্বী, তরুণসহ সব বয়স ও শ্রেণী-পেশার ভোটার সকাল সকাল ভোট কেন্দ্রে যাবেন। লাইন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেবেন। কাউকে ভয় করবেন না। অন্যায় ও অনিয়ম দেখলেই প্রতিবাদ করবেন।
ভোটের পর কেন্দ্র পাহারা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ভোট শেষে বিকেল থেকে ভোট কেন্দ্রে পাহারা বসাবেন। গণনা শেষে ফলাফল বুঝে নিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করবেন। যাতে আপনাদের দেওয়া রায় ওরা বদলে ফেলতে না পারে।
নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ফলাফল মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মনে রাখবেন, দেশের সম্পদ লুটপাট করে এবং আপনাদের রক্ত চুষে এরা (সরকার) টাকার পাহাড় গড়েছে। কাজেই এরা যে টাকা বিলাচ্ছে, সেটা আপনাদেরই টাকা। ওদের কাছ থেকে টাকা নিলেও ভোট বিক্রি করবেন না।
তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরে খালেদা জিয়া বলেন, আমরা শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দাবি করেছি। স্থানীয় নির্বাচনে আমাদের ওই দাবি নেই।
নির্বাচনে কারচুপি ঠেকাতে আবারও সেনাবাহিনী মোতায়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটারদের নির্বিগ্নে ভোটদান নিশ্চিত করতে নির্বাচনী এলাকায় বিচারিক ক্ষমতাসহ সশস্ত্র বাহিনীর পর্যাপ্ত পরিমাণ সদস্য মোতায়নের কথা বলেছিলাম। যাতে ভোট দেওয়া, ভোট গণনা, ফল প্রকাশ এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ের সম্ভাব্য সহিংসতাও রোধ করা যায়।
কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে ফেলার জন্য তারা যে পরিকল্পনা এঁটেছে তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনীকে বাধা মনে করছে। এ কারনেই তারা এখন বলছে, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা সেনা ছাউনিতেই থাকবেন রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তা ডাকলেই তারা মুভ করবেন। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যামে আবার প্রমাণিত হলো, সশস্ত্র বাহিনীর তাদের কোনো আস্থা নেই-বলেন খালেদা জিয়া।
পহেলা বৈশাখে যৌন হয়রানি : পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ উৎসবে ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত অপ্রীতিকর ঘটনার নিন্দা জানিয়ে  জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের যে বোনেরা ও মেয়েরা ন্যাক্কারজনকভাবে নির্যাতিত ও সম্মানহানির শিকার হয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর সহানুভূতি জানাচ্ছি। এসব ঘৃণ্য অপরাধীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
খালেদা জিয়া বলেন, যে সরকার ও প্রশাসন কোনো সামাজিক উৎসবে মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারে না, মেয়েদের সম্মান রক্ষা করতে পারে না এবং এমন ঘৃণ্য ঘটনার প্রতিকার করতে পারে না, তাদের লজ্জিত হওয়া উচিৎ। ক্ষমা চেয়ে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো উচিৎ।
প্রধানমন্ত্রী নিষ্ঠুর বিদ্রুপ করেছেন : নিখোঁজ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিনকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিষ্ঠুর বিদ্রুপ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, বিএনপির অন্যতম যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমেদ ও ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে গেছে। এক মাসের বেশি সময় হয়ে গেলো, এখনো তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। অধিকন্তু সালাহউদ্দিনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ‘নিষ্ঠুর বিদ্রুপ’ করেছেন।
আমরা উৎকণ্ঠিত। আমরা তাদের সন্ধান চাই। তাদেরকে অবিলম্বে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হোক- বলেন বিএনপি প্রধান।
আইন-শৃঙ্খলা নেই বলেই ডাকাতি : দেশে কোনো আইনশৃঙ্খলা নেই বলেই আশুলিয়ায় দুধর্ষ ব্যাংক ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন,  দেশে কোনো শান্তি-শৃঙ্খলা নেই। সৃষ্টি হয়েছে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। ঢাকার কাছে আশুলিয়ায় দুর্ধর্ষ ব্যাংক ডাকাতির সময় ৮ জন নিহত হবার ঘটনা এই পরিস্থিতির সাম্প্রতিকতম উদাহরণ।
সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ক্ষমতাসীন ছাড়া দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল এবং বেশিরভাগ মানুষের দাবি হচ্ছে, নিরপেক্ষ ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সরকারের অধীনে অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন।
বিএনপি ও ২০ দলের সাম্প্রতিক আন্দোলনে পেট্রোলবোমা হামলা ও নাশকতার জন্য সরকারকে দায়ী করে খালেদা জিয়া বলেন, একই সঙ্গে আমাদের কর্মসূচি ভঙ্গ করতে পুলিশ-র্যাব-বিজিবির পাহারায় রাজপথে ও মহাসড়কে জোর করে যানবাহন নামিয়েছে। সে-সব যানবাহনে রহস্যজনক বোমা হামলায় অনেক নিরাপরাধ মানুষ নিহত ও দগ্ধ হয়েছে। সশস্ত্র প্রহরায় চলাচলরত যানবাহনে কীভাবে এমন হামলা হয়েছে এবং ঘটনাস্থল থেকে কেন অপরাধীরা ধরা পড়েনি তা আজও রহস্যে ঢাকা।
বোমা হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, আমি আবারও বলছি, হত্যা, নাশকতা, সন্ত্রাস ও লাশের রাজনীতি আমরা করি না। সন্ত্রাস-নির্ভর নষ্ট রাজনীতির চ্যাম্পিয়ন হচ্ছে আওয়ামী লীগ। এবারও তারা জনগণের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ভীত হয়ে দু’ধারা ছুরির মতো অপকৌশল নিয়েছিল। আমাদের কর্মসূচি ভণ্ডুল করতে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে সশস্ত্র প্রহরায় একদিকে পথে যানবাহন নামিয়েছে। অপরদিকে সেই যানবাহনে বোমা হামলায় মানুষ হত্যা করে তার দায় বিরোধী দলের উপর চাপিয়ে হত্যা, নির্যাতন, গুম, গণগ্রেফতার ও একতরফা অপপ্রচারের পথ উন্মুক্ত করেছে।
হাসিনা মেরেও জিতেছেন কেঁদেও জিতেছেন : বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর উদ্ধৃতি দিয়ে  খালেদা জিয়া বলেন, শেখ হাসিনা মেরেও জিতেছেন, কেঁদেও জিতেছেন। তবে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে আমি একটু দ্বিমত পোষণ করে বলতে চাই- মানুষ মারায় যদি জেতার প্রশ্ন আসে, শেখ হাসিনা তাতে অবশ্যই জিতেছেন। তবে কেঁদে তিনি জিততে পারেননি। তার কান্নাকে এদেশের বেশির ভাগ মানুষ ‘কান্নার অভিনয়’ হিসেবেই মনে করেন। তাই তিনি যত কাঁদেন এবং যত অপপ্রচার করেন, মানুষ ততো বেশি মুখ ফিরিয়ে নেয় তার দিক থেকে।
প্রধানমন্ত্রীর উসকানিতেই হামলা : দল সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মন্ত্রীদের উসকানিতেই তার গাড়ি বহরে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, এতোদিন তারা প্রচার করতো যে, আমি নাকি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছি। বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের কোনো জনসমর্থন নেই। কিন্তু আমি জনসংযোগে নামতেই যে-দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে, তাতে তাদের এত দিনের সব প্রচারণা মিথ্যে হয়ে গেছে। তাই প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে আমার বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য রেখেছেন।
খালেদা জিয়া বলেন, এই উসকানিতেই হাজার হাজার মানুষের সামনে এবং সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে উত্তরা, কারওয়ান বাজার, ফকিরেরপুলের কাছে ও বাংলামোটরে আমার গাড়িবহরে পরপর চারদিন হামলা করেছে। বাংলামোটরে আমাকে বহনকারী গাড়ির উপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়। হামলায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেয় এবং হামলাকারীদের পুলিশ পুরোপুরি সহযোগিতা করে। সবচেয়ে মারাত্মক হামলার ঘটনা ঘটেছে কারওয়ানবাজারে। সেখানে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে হামলা চালায়। বহরের অনেকগুলো গাড়ি ভেঙ্গে ফেলে।
হামলার সময় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালানো হয়েছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। আমি তখন সবেমাত্র গাড়িতে উঠে বসেছি। আমি  যে পাশে বসা ছিলাম, সেই পাশেই গাড়ির জানালার কাঁচে গুলি লাগে। এটি গ্লাস ভেদ না করলেও ফেটে যায়। অল্পের জন্য আমার জীবন রক্ষা পায়। কতটা মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি করলে বুলেটপ্রুফ গাড়ির কাঁচ ফেঁটে যায়, তা সবাই বোঝে। এটা যে আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত সুপরিকল্পিত হামলা ছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
সরকার ক্ষমতার দম্ভে অন্যায় আচরণ করছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারাই আমার স্বজন, আপনারাই আমার আত্মীয়।
অশ্রুসিক্ত খালেদা জিয়া এ সময় বলেন, আপনারা দেখছেন, ক্ষমতার দম্ভে আমার সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করা হচ্ছে! আমার স্বামী জিয়াউর রহমান দেশকে ভালোবেসে এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। অল্প কিছুদিন আগে আমি আমার আদরের ছোট ছেলেকে চিরকালের জন্য হারিয়েছি। আমার একমাত্র জীবিত সন্তান তারেক রহমানও অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন ধরে দূরদেশে চিকিৎসাধীন রয়েছে। জীবনের এই প্রান্তে এসে প্রিয় মাতৃভূমিতে স্বজনহীন পরিবেশে চরম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে এখনো আমি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সাধ্যমতো সংগ্রাম করে যাচ্ছি। এখন আপনারাই আমার স্বজন, আপনারাই আমার আত্মীয়।
দম্ভ ত্যাগ করুন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দম্ভ ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, আপনি বিনা ভোটে রাজকীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। এই দম্ভ ত্যাগ করুন। এই পর্যন্ত যাই করেছেন, সিটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হতে দিন, এতে আপনার ক্ষমতা চলে যাবে না।
প্রধানমন্ত্রীকে গণতন্ত্র ও সংলাপের পথে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতা আপনার কাছে বাঘের পিঠে সওয়ার হবার মতো বিপদজনক হয়ে উঠেছে। আপনি নামতে ভয় পাচ্ছেন। আপনি ভয় পাবেন না, আমরা আপনার মতো প্রতিশোধ পরায়ণ নই। আমরা আপনাকে নিরাপদে নামতে সাহায্য করবো।
আন্দোলন থেকে হঠাৎ সরে এসে সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার নেপথ্যে সরকার সঙ্গে কোনো আপস-রফা হয়েছে কি না এবং এর পেছনে দেশী-বিদেশি কোনো তৎপরতা আছে কি না? – সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, গোপনে কোনো আপস-রফার সুযোগ নেই। যা কিছু হবে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সবাইকে জানিয়েই হবে। আর অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ বিএনপি কখনো আশা করে না।
আপনার ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ এখনো আছে কি না? –এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবরোধ আমার একার নয়, ২০ দলীয় জোটের অবরোধ। এটি তুলতে হলে জোট নেতাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিন্তু নানা রকম ঝামেলা ও সিটি নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আমরা বসতে পারিনি। তবে অবরোধ এখন সক্রিয় নেই।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরী, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, ঢাবি শিক্ষক ড. অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।
জোট নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য ডা. রেদওয়ান উল্লাহ শাহেদী, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামী, খেলাফত মজলিসের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইসহাক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি মুহম্মদ ওয়াক্কাস, জাগপার সভাপতি সফিউল আলম প্রধান, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল মবিন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সাধারণ সম্পাদক ডা. রেদওয়ান আহমেদ, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ডা. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মণি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ প্রমুখ।