কাজিরবাজার ডেস্ক :
গত পাঁচ জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধের কবলে সারাদেশে। মাঝে মধ্যে হরতালও দেয়া হচ্ছে। তেমন সাড়া না পাওয়া গেলেও গত দুই সপ্তাহ ধরে একরকম টানা হরতাল চলছে। দেশের সবচেয়ে বড় পাবলিক পরীক্ষা এসএসসি’র সিডিউলও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
দলের যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ কোনো অদৃশ্য জায়গা থেকে নির্দেশনা পেয়ে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমেই এসব হরতাল কর্মসূচি আহবান করছেন অজ্ঞাত স্থান থেকে। গণমাধ্যমে তা প্রকাশিত হওয়ার পর দেশবাসী তা জানতে পারছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক যে সংস্কৃতি চলছিল এতো দিন, তাতে দেখা গেছে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঠিক করার আগে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠক হতো। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে সেই ধারা অনুপস্থিত। ধরপাকড়ের কারণে জেলে যাওয়ার ভয়ে বিএনপি কোনো পর্যায়ের নেতাই প্রকাশ্যে আসতে পারছে না।
কে নির্ধারণ করছেন এসব রাজনৈতিক কর্মসূচি-এ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে দলের মধ্যে। দলের নীতি নির্ধারকরা বলছেন, কে ঠিক করছেন এই কর্মসূচি তারা তা জানেন না।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ কার সঙ্গে কথা বলে কার নির্দেশে নতুন কর্মসূচি দিচ্ছেন সেটা বলতে পারছেন না বিএনপির কেউই।
বিএনপির একাধিক নেতা এই প্রতিবেদককে বলেন, চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে নেট ও মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদ কার নির্দেশে কর্মসূচি ঘোষণা করছেন সেই বিষয়ে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। তবে খালেদার রাজনৈতিক কার্যালয়ে টেলিটক সেবা চালু রয়েছে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, চলমান অবরোধের পাশাপাশি হরতাল কর্মসূচি চলছিল। কিন্তু সর্বশেষ গতকাল সোমবার দুপুরে হঠাৎ করেই আবার ৪৮ ঘন্টার হরতাল বর্ধিত করা হলো। এই কর্মসূচিও কার নির্দেশে করা হলো তা শীর্ষস্থানীয় নেতারা জানেন না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, কর্মসূচি কে বর্ধিত করছেন এবং পরবর্তী কর্মসূচি কি হবে, এই বিষয়ে আমি নিজেও জানি না। কারণ আমি বর্তমান রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছি। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট সর্বশেষ ৪৮ ঘন্টার হরতাল বাড়িয়েছে, বিষয়টিও আমার জানা ছিল না।
গত ৩ জানুয়ারি থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান করছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান। সেলিমা রহমান বলেন, বর্তমান কর্মসূচি বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে ঘোষণা হচ্ছে না।
তবে বেগম জিয়া আন্দোলনের কর্মকৌশল প্রসঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটকে আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। আর তার সেই সিদ্ধান্তু অনুযায়ী ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ কর্মসূচিগুলো ঘোষণা করছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এড. আহমদ আযম খান বলেন, চলমান আন্দোলনের কর্মসূচি প্রসঙ্গে আমি নিজেও অন্ধকারে রয়েছি। তাই কার সিদ্ধান্তে কর্মসূচিগুলো ঘোষণা করা হচ্ছে তা আমি জানি না। তবে অবশ্যই কারো নির্দেশে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে। কিন্তু কার নির্দেশে সেটা আমি জানি না।