জগন্নাথপুরে দুই পক্ষের মধ্যে বারবার বন্দুক যুদ্ধ, এলাকায় আতংক

24

potoমোঃ শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে দুই পক্ষের মধ্যে বারবার সংঘর্ষ ও বন্দুক যুদ্ধের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে ৭ থেকে ৮ বার সংঘর্ষ ও বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের গুলিবিদ্ধসহ ৩০ থেকে ৪০ জন আহত হয়েছেন এবং কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত জগন্নাথপুর থানায় উভয় পক্ষের ৩ থেকে৪টি মামলা রয়েছে। বিগত প্রায় ৩ বছর ধরে তাদের মধ্যে এ অবস্থা চলছে। কয়েক দিন পরপর এক পক্ষ আরেক পক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ডাকাডাকি করে থাকে। যে কোন মুহূর্তে তাদের মধ্যে আরো বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষসহ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় হতাহত হতে পারে। এমন আশঙ্কায় সারাক্ষণ শঙ্কিত থাকেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, বিগত প্রায় ৩ বছর আগে জগন্নাথপুর পৌর এলাকার এনায়েতনগর গ্রামের রশাহিদ আলী ও সুহেল মিয়ার পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে সুহেল মিয়া ও রশাহিদ আলীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে রশাহিদের পক্ষ নেয় একই গ্রামের লন্ডন প্রবাসী ইয়াওর মিয়া ও সুহেল মিয়ার পক্ষ নেয় আরেক লন্ডন প্রবাসী চুনু মিয়া। এর পর থেকে এই দুই লন্ডনী এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিতে লন্ডন থেকে টেলি যোগাযোগের মাধ্যমে নেপথ্যে নায়কের ভূমিকা পালন করছেন। তাদের ইশারায় একের পর এক সংঘর্ষ ও বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটছে। এছাড়া তারা উভয় পক্ষ সংঘর্ষের জন্য ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল এনে থাকেন। তখন এক পক্ষের লাঠিয়ালকে অন্য পক্ষ বেশি টাকার বিনিময়ে নিয়ে যায়। এ সময় ভাড়াটিয়া লাঠিয়ালরা তাদের শক্তির জানান দিতে সংঘর্ষের আহবান জানায়।
গতকাল রবিবার বেলা ১ টার দিকে সরজমিনে দেখা যায়, প্রথমে রশাহিদ পক্ষের প্রায় অর্ধশতাতিক লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সুহেল পক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ডাক দেয়। কিছুক্ষণ পরে সুহেল পক্ষও পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে ডাক দিলে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ভবেরবাজার-সৈয়দপুর সড়কের পশ্চিম পাশে সুহেল পক্ষ ও পূর্ব পাশে রশাহিদ পক্ষ অবস্থান নেয়। উভয় পক্ষের রণসাজ অবস্থা দেখে পথচারীসহ এলাকার শতশত উৎসুক জনতা রাস্তার দুই পাশে দুরত্বে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন ভয়ে সড়কে কোন যানবাহন চলাচল করেনি। সড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলো নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় এক রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। তখন উপস্থিত লোকজন আতঙ্কিত হয়ে নিরাপদ স্থানে যেতে চারদিকে ছুটাছুটি করতে থাকেন। প্রায় আধা ঘন্টা পরে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি দেখে উভয় পক্ষের লোকজন চলে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে উভয় পক্ষের মধ্যে দুই দফা ডাকাডাকি হলেও কোন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান জানান, তৃতীয় পক্ষ স্বার্থান্বেষী রাঘব বোয়ালদের শেল্টারে এ দুই পক্ষের মধ্যে একের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত জগন্নাথপুর থানায় উভয় পক্ষের ৩/৪ টি মামলা রয়েছে। আমরা কোন পক্ষকে ছাড় দেব না। এসব মামলার আসামীদের গ্রেফতার ও তাদের কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।