স্টাফ রিপোর্টার :
জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও প্রাথমিক স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি) পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এবার জেএসসিতে সিলেটে বোর্ডে পাসের হার ৯১ দশমিক ৫৭ ভাগ এবং পিএসসিতে সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৯৬.৫০ ভাগ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সিলেট শিক্ষাবোর্ডে এ পৃথক পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়। সিলেট বিভাগের শীর্ষ ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করেছে সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ।
সিলেট শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, জেএসসি পরীক্ষায় এ প্রতিষ্ঠানটির ২০২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে সবাই পাস করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯৪ জন শিক্ষার্থী। শীর্ষ ২০ এর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিলেট ক্যাডেট কলেজ। প্রতিষ্ঠানটির ৫২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছে। তৃতীয় স্থানে থাকা সিলেটের সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৫২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে সবাই পাস করলেও জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬৯ জন। চতুর্থ স্থানে রয়েছে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। এ প্রতিষ্ঠানের ২৫০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সবাই পাস করেছে এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫৭ জন।
পঞ্চম স্থান অধিকার করা হবিগঞ্জের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৩০ জন শিক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের সবাই পাস করলেও জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩০ জন। ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে সিলেটের ব্লু-বার্ড উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটির ২৬৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে সবাই। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩৮ জন। শীর্ষ ২০ এর সপ্তম অবস্থান দখল করেছে সিলেটের স্কলার্সহোম। এ প্রতিষ্ঠানের ১৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পান করেছে ১৬০ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯১ জন। তালিকার অষ্টম স্থানে রয়েছে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাইস্কুল। প্রতিষ্ঠানটির ১১৩ জন শিক্ষার্থীর সবাই পাস করেছে এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬০ জন। শীর্ষ ২০ এর নবম স্থানে আছে হবিগঞ্জের বি.কে.জি.সি. সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটির ২৫৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে সবাই। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৩ জন। দশম স্থানে রয়েছে মৌলভীবাজারের বিএএফ শাহীন স্কুল এন্ড কলেজ। পরীক্ষায় এ প্রতিষ্ঠানের ১২০ শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে সবাই এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৫ জন। তালিকার এগারতম স্থানে অবস্থান রোকেয়া খাতুন লাইসিয়াম স্কুল। প্রতিষ্ঠানটির ৮১ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করলেও জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৯ জন। মৌলভীবাজারের দ্য ফ্লাওয়ার’স কে.জি. এন্ড উচ্চ হাই স্কুল রয়েছে বারোতম স্থানে। এ প্রতিষ্ঠানের ১১৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১১৬ জন পাস করেছে এবং ৫৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। তেরোতম স্থানে রয়েছে সিলেটের বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। এটির ৩০৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে সবাই। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৬ জন। চৌদ্দতম অবস্থান মৌলভীবাজারের দ্য বাডস রেসিডেনশিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানের ১৫২ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ১৫০ জন এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫১ জন। পনেরতম স্থানে থাকা হোমল্যান্ড আইডিয়াল স্কুলের ৪৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাই পাস করেছে এবং ১৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। ষোলতম স্থানে আছে সেইন্ট মার্থাস জুনিয়র হাই স্কুল। 
প্রতিষ্ঠানটির ৫৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে সবাই এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ জন। সিলেটের শাহজালাল জামিয়া ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজের অবস্থান সতেরতম স্থানে। প্রতিষ্ঠানটির ২২৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে সবাই পাস করলেও ৬০ জন পেয়েছে জিপিএ-৫। গোবিন্দপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে আঠারতম স্থানে। এ প্রতিষ্ঠানের ১৫৭ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে সবাই এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৪ জন। উনিশতম স্থানে থাকা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে সবাই এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২ জন। শীর্ষ ২০ এর শেষ অবস্থানে রয়েছে সুনামগঞ্জের সরকারি এস.সি. বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এ প্রতিষ্ঠানের ২১৪ জন শিক্ষার্থীর সবাই পাস করলেও জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫১ জন।
উল্লেখ্য, সিলেট শিক্ষা বোর্ড ১ লাখ ৯ হাজার ৪৮৫ জন পরিক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ২৫৫ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে। এবার জিএসসিতে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। ৪৮ হাজার ২৬০ জন ছেলে শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪৪ হাজার ১০২জন পরীক্ষা কৃতকার্য হয়েছে। তাদের পাসের হার ৯১ দশমিক ৩৮ ভাগ। ৬১ হাজার ২২৫ জন মেয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ৫৬ হাজার ১৫৩ জন কৃতকার্য হয়েছে। তাদের পাসের হার ৯১ দশমিক ৭২ ভাগ।
জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ১০জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৮০ জন ছেলে ও ২ হাজার ১৩০ জন মেয়ে শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এদিকে প্রাথমিক স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি) পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ ফলাফল প্রকাশ করে। এবার সিলেটে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৫০ ভাগ।
সিলেটে ১ লাখ ৯২ হাজার ৭১২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে পাস করে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৭৬ জন। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৭৪২ জন। বিভাগের মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে সিলেট জেলায় ৬৬ হাজার ৪৭১ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করে ৬২ হাজার ৭১১ জন। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২ হাজার ৫৮৩ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৪ দশমিক ৩৪। মৌলভীবাজার জেলায় ৩৮ হাজার ৫৩৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করে ৩৭ হাজার ৫৫২ জন। পাসের হার ৯৭ দশমিক ৪৫। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ হাজার ৩৫০ জন শিক্ষার্থী। হবিগঞ্জ জেলায় ৪৬ হাজার ৩৩২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করে ৪৬ হাজার ১১৪ জন। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭৯৯ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৯৩ দশমিক ০৩। সুনামগঞ্জ জেলায় ৪১ হাজার ৩৭৬ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করে ৩৯ হাজার ৫৯৯ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৭১। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ হাজার ১০ জন শিক্ষার্থী।
