জাতীয় উদ্যানের বানরগুলো চরম পানি ও খাদ্যসংকটে

3

চুনারুঘাট সংবাদদাতা

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বানরগুলো চরম পানি ও খাদ্যসংকটে পড়েছে। খাবার খেতে বানরগুলো চলে আসছে লোকালয়ে। বিশেষ করে উদ্যানে ঘুরতে আসা পর্যটক দেখলে বানরগুলো খাবার খেতে গাছ থেকে নেমে পড়ছে। খাবারের দোকান, ত্রিপুরা পল্লীর প্রবেশ পথ, সাতছড়ি মসজিদের পাশে যেখানে মানুষের সমাগম সেখানে বানরগুলো নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এছাড়া ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়ক পারাপার হওয়ার সময়ও অনেক বানর প্রাণে মারা যাচ্ছে আবার অনেক বানর পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে শীত মৌসুম এলেই বনে দেখা যায় চরম খাদ্য সংকট।
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে ঘুরতে আসা পারভেজ বলেন, ‘উদ্যানের বানরগুলো সবার কাছে খাবার চাচ্ছে দেখে আমার ছোট মেয়েটি বানরকে একটি কলা দিল। বানরটি কলা নিয়ে খেলো। দেশের এত বড় জাতীয় উদ্যান এখানে কোনো ফলের গাছই চোখে পড়ে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘এখানে অপরিকল্পিতভাবে বনায়ন করায় বানরসহ পশু-পাখির খাবারের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। তাই বানরগুলো ক্ষুধা মেটাতে মানুষের কাছে খাবার চায়।’
পরিবেশবাদী সাংবাদিক অধ্যক্ষ আল-মামুন বলেন, ‘বানরগুলো লোকালয়ে এসে মানুষের ফেলে দেওয়া উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রাকৃতিক নিয়মে বেড়ে উঠা বানরগুলো বনের গাছের ফল মূল লতা পাতা খেয়ে বাঁচবে এটাই নিয়ম। তারা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবে, প্রজনন বাড়বে। সাতছড়ি উদ্যানের বানরগুলো পর্যটকদের ফেলে দেওয়া খাবার খেয়ে অলস হয়ে পড়ছে।
সাতছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মামুনুর রশীদ বলেন, ২০২৪ অর্থ বছরে সাতছড়ি সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে ফলজ গাছ লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৮ সালে ১০ একর জায়গায় কাঁঠাল, চাম কাঁঠাল, আম, জামসহ ফলজ গাছ রোপণ করা হয়েছে। গাছগুলোতে ফলন আসছে। বনের ভেতরে বানরের পানীয় জলের জন্য পুকুর খনন করা হয়েছে।
সাতছড়ি বন বিভাগ সূত্র জানায়, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে পাঁচ জাতের বানর আছে। বানরগুলোর মধ্যে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে রিসাস বানর খুব বেশি চোখে পড়ে। এরা মানুষের খুব কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে। এদের আচরণ অনেকটা মানুষের মতোই। এ ছাড়া উল্টোলেজি বানর, লজ্জাবতী বানর, আসামি বানর, মুখপোড়া হনুমান এ বনে দেখা যায়।