বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, গত ১৭ বছরে দেশে গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার সংকুচিত হয়েছে। এই সময়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছে। জনগণের দুঃসময়ে বিএনপি সবসময় তাদের পাশে থেকেছেÑকখনও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, কখনও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, আবার কখনও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে।
তিনি বলেন, “বিগত ৫ আগস্টের পর দেশের জনগণের মধ্যে যে প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে, তা হতাশায় পরিণত করা যাবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তারেক রহমানের কঠোর প্রচেষ্টা জনগণ ও সুশীল সমাজের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে।” একটি রাজনৈতিক দলকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “বারবার ক‚ল বদল করা তাদের স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। দয়া করে যেকোনো একটি অবস্থান নিন। বিএনপির দোষত্রæটি খোঁজার পরিবর্তে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান সুসংহত করুন।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। পোল্ট্রি ও সয়াবিন তেলের বাজার সিন্ডিকেটের দখলে রয়েছে, অথচ সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।”
বুধবার বিকেলে সিলেট রেজিস্ট্রি মাঠে বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, যদি সংসদ নির্বাচনের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র বা চক্রান্ত হয়, তবে বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।”
সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাহসিনা রুশদি লুনা বলেন, “দ্রব্যমূল্য কমিয়ে জনগণকে স্বস্তি দিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়ে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া নেতাদের ফিরিয়ে দিন এবং গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনুন।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, “সিলেটে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। তারা নির্বাচনী ও রাজনৈতিক লক্ষ্য স্পষ্ট করতে চায়। যত দ্রæত নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে, তত দ্রæত জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, “নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দ্রæত ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার কি সত্যিই জনগণের সমস্যার সমাধান চায়? তাদের উচিত জনগণের আকাক্সক্ষা ও গণঅভ্যুত্থানের বার্তা বোঝা।”
বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেন, “গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন। ছাত্র-জনতার আন্দোলন নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, যা রাজনীতি, সমাজ, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।” তিনি তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহŸান জানান।
সমাবেশে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডাঃ শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, আবুল কাহের চৌধুরী শামিম ও অ্যাডভোকেট হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী। মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদি ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।