কাজির বাজার ডেস্ক
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে ধীরগতি এবং ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে একজনকে হত্যা মামলায় ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল এই অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। আইসিটির প্রসিকিউশন প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আরও দুই মাস বাড়ানোর আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল এই অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সময় বাড়িয়ে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৬ এপ্রিল পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে না পারার কারণও জানতে চান আদালত। তবে প্রসিকিউশনের জবাবে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হননি। প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ব্যবস্থা নিতে বলার জন্য প্রসিকিউশনকে বলেছেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান এক পর্যায়ে আইসিটি প্রসিকিউশনের কাছে জানতে চান, ‘আপনাদের তদন্তের অগ্রগতি কী? তদন্তকারী সংস্থা ঠিকমতো কাজ করছে তো?’ জবাবে প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘মাই লর্ড, জুলাই এবং আগস্টের সময়ে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের কারণে তদন্তে কিছুটা সময় লাগছে।’
সেই সময় আরেক প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসাইন তামিম বিচারকদের বলেন, ‘মাই লর্ড, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আসামিদের গ্রেপ্তার করেনি। এটাই সমস্যা।’
প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘মাই লর্ড, আমরা একটি ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে বক্তব্য শুনেছি যে পুলিশ কর্মকর্তা সরাসরি গুলি করে হত্যা করেছিলেন, তখন তিনি ডিউটিতে ছিলেন। ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করেনি।’ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদার তখন বলেন, পরিস্থিতি যদি এরকম থাকে তাহলে আপনারা কীভাবে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করবেন।
তখন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ বলেন, ‘২০০০ মানুষ নিহত হয়েছেন, এখন পর্যন্ত আমরা ১০৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছি। কিন্তু মাত্র ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করা হয়নি।’
প্রসিকিউশনের কাছে ট্রাইব্যুনাল জানতে চান, গণঅভ্যুত্থানের সময় প্রায় দুই হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ১০৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন তাদের অধিকাংশকে গ্রেপ্তার করতে পারছে না।