সিলেট জেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে সিলেট জেলায় আগামী ২ ফেব্রæয়ারি থেকে ডাকা পরিবহন শ্রমিক কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছে। সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা সিলেটের পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে গত ২১ ও ২৭ জানুয়ারি বৈঠক করে ৮ দফা দাবীর মধ্যে ২ দফা আইন পরিবর্তন সংক্রান্ত হওয়ায় তা সরকারের নিকট ন্যস্ত করে বাকি ৬ দফা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে সিলেটের পরিবহন শ্রমিকবৃন্দ আগামী ১৯ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত শ্রমিক কর্মবিরতি স্থগিত করে প্রশাসনকে সময় দেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা ২টায় দক্ষিণ সুরমার বাবনা মোড়ে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ঐক্য পরিষদের এক জরুরী সভায় এই কর্মবিরতি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মোঃ দিলু মিয়া’র সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও ঐক্য পরিষদ সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকারিয়া আহমদের পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক ও সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি হাজী ময়নুল ইসলাম। সভায় উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ঐক্য পরিষদের কার্যকরি সভাপতি আব্দুল মহিম, সহ-সভাপতি আব্দুছ ছালাম, সহ-সভাপতি আব্দুল আলীম ভাষানী, সহ-সভাপতি, মোঃ দেলওয়ার হোসেন, সহ-সভাপতি সাহেব আলী, সহ-সভাপতি মোঃ ইনছান আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন, মোঃ আজাদ মিয়া, মাহবুব মিয়া মবু, আব্দুশ শহিদ, মোঃ শাহাব উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী, এম.বরকত আলী, রাজা আহমদ রাজা প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, সিলেটের পরিবহন শ্রমিকদের ন্যায় ৮ দফা দাবি আদায়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। আমাদের এই সমস্ত দাবী-দাওয়া নিয়ে সকল সময়ই আলোচনা হয়, সভা হয়, কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। সিলেটের প্রশাসন শ্রমিকদের ৬ দফা দাবি, যথা- ১. মেয়াদ উত্তীর্ণ সকল সেতুর টোল বিশেষ করে এমএ খান লামাকাজী সেতুর টোল আদায় বন্ধ, ২. সিলেটের সকল পাথর কোয়ারি খুলে দিতে হবে ও সিলেটের সকল সিএনজি-চালিত যানবাহনের গ্যাস লোডে দীর্ঘ সূত্রিতার সমাধান, ৩. সিলেটের সকল পরিবহন শ্রমিক নেতা ও শ্রমিকদের ওপর দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ৪. সিলেটে সকল লোড ট্রাক আটকিয়ে চালকদের হয়রানি, প্রশাসনের লোক ছাড়া কেউ যেন লোড ট্রাক না আটকায় তার ব্যবস্থা এবং হাইওয়ে পুলিশের হয়রানি বন্ধ, ৫. ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নে বিআরটিএ’র সকল দুর্নীতি বন্ধ এবং লাইসেন্স প্রাপ্তিতে সকল ধরনের জটিলতা দূর করতে হবে, ৬. সিলেটে ডাম্পিংকৃত যানবাহন ও ব্যাটারি চালিত রিক্সা, টমটম, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন ইত্যাদি চলাচল বন্ধ করতে হবে। সিলেট মহানগরে সকল ছোট গাড়ির পার্কিংয়ের স্থান দিতে হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামী ১৯ ফেব্রæয়ারি ২০২৫ইং তারিখের মধ্যে শ্রমিকদের ৬ দফা বাস্তবায়িত না হলে আর কোন আলোচনা না করেই ২০ ফেব্রæয়ারি থেকে পরিবহন শ্রমিকরা গাড়ি চালানো বন্ধ করে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতীতে যেতে বাধ্য হবেন। বক্তারা সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর শ্রমিক স্বার্থবিরোধী আইন অবিলম্বে বাতিল এবং বিভিন্ন যানবাহনের শ্রেণিবিন্যাসকৃত ২০২৩ সালে প্রণীত গেজেট বাতিলে দ্রæত পদক্ষেপ নিতে বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রতি আহবান জানান।