সীমান্তে বাংলাদেশিকে কুপিয়ে হত্যা মামলার আসামী ভারতীয়রা

3

কুলাউড়া প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে আহাদ আলী (৩৪) নামের এক বাংলাদেশি যুবককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় নাগরিকদের বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এওলাছড়া বস্তি এলাকার শূন্যরেখার কাছে এ ঘটনাটি ঘটে। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। নিহত আহাদ আলী মুরইছড়া এলাকার এওলাছড়া পুঞ্জির বাসিন্দা মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী জমিরুন নেছা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এতে ৫ ভারতীয় ও ২ বাংলাদেশি নাগরিককে আসামী করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরো ৪-৫ জনকে।
মামলার আসামীরা হলেন- ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উনকোটি জেলার গজাটিলা থানার পূর্ব ইরানী এলাকার বাসিন্দা মৃত ইয়ামির আলীর ছেলে হায়দার আলী, হায়দার আলীর ছেলে করিম আলী, দেওয়ান আলীর ছেলে রওশন আলী ও জমির আলী, সাহেব আলীর ছেলে গফফার আলী। মামলায় বাকি দুই আসামী হলেন বাংলাদেশী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এওলাছড়া সীমান্তের ওপর পাশে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গজাটিলা থানা পড়েছে। ওই থানার পূর্ব ইরানী এলাকায় নিহত যুবক আহাদ আলীর শ্বশুরবাড়ি। সেখানে ভারতের কাঁটা তারের বাইরে আহাদের শ্বশুর জাবিদ আলীর কিছু জমি রয়েছে। হায়দার আলী নামের ভারতের এক নাগরিক ওই জমি বর্গা নিয়েছেন। কিন্তু হায়দর বর্গা নেওয়ার টাকা নিয়মিত পরিশোধ করেননি। এ নিয়ে আহাদ আলীর সঙ্গে হায়দর আলীর বিরোধ চলছিল। এর জেরে হায়দর দুপুরের দিকে আহাদকে সীমান্তে ডেকে নেন। সেখানে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে অভিযুক্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আহাদের মাথা ও হাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে চলে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় আহাদকে উদ্ধার করে প্রথমে কুলাউড়া হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সারমিন ফারহানা জেরিন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে আহাদের মৃত্যু হয়।
নিহত আহাদ আলীর চাচা আলী হোসেন জানান, পরিকল্পনা করে আমার ভাতিজাকে হত্যা করা হয়েছে। হামলার পর অভিযুক্ত হায়দার আলী কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে ভারতে পালিয়ে গেছে। দুই দেশের সংশ্লিষ্টতায় আমরা হত্যাকাÐের বিচার চাই।
কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) স্থানীয় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিলভেস্টার পাঠাং বলেন, যতটুকু জেনেছি সীমান্তের ওপারে নিহত আহাদের শ্বশুরের জমি বর্গা নিয়ে হায়দার আলীর বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরেই আহাদকে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম আপছার বলেন, বাংলাদেশী যুবক হত্যার ঘটনায় ভারতীয় নাগরিক হায়দার আলীসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী। এজাহারভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিকও রয়েছেন। নিহত আহাদ আলীর লাশ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে নিহতের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।