দেশের মানুষের শান্তি বিঘিœত করতে দফায় দফায় ষড়যন্ত্র চলছে

4

স্টাফ রিপোর্টার

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, একটি শক্তি দেশের মর্যাদা ক্ষুন্ন করতে মিথ্যাচার করে বিদেশি বন্ধুদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। মানুষ এখন অনেক সজাগ। বাংলাদেশের মানুষ এখন শান্তিতে আছে। শান্তি বিঘিœত করতে দফায় দফায় চেষ্টা চলছে। একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে, ইনশা আল্লাহ।
শুক্রবার সকালে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠার নৃশংসতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জানান দিয়েছিলো তারা ক্ষমতার থাকতে খুন-গুনের পথ বেছে নেবে। সেদিন থেকে বাংলাদেশ পথ হারিয়ে ছিলো। দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছর পর বাংলাদেশ মুক্তি পেয়েছে। আওয়ামী লীগ জামায়াতের অনেক শীর্ষ নেতাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। তারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নির্বিচারে ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালিয়েছে।
আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তারা যেসব নিরীহ জনগণকে খুন করেছে তাদের পরিবারের কাছে জানতে চান তারা আর এ ধরণের রাজনীতি চায় কি-না? যারা পঙ্গুত্ববরণ করে হাসপাতালের বেডে প্যারালাইসড হয়ে আছে তাদের মতামত নিন।
জামায়াতের আমির বলেন, আমরা একটি বৈষম্যহীন ও ন্যায়বিচারের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আল্লাহর হুকুম ও জনগণের ভালোবাসায় জামায়াতে ইসলামী সে সুযোগ পেলে আমাদের হাত দিয়ে কোন চাঁদাবাজি হবে না, কোন চাঁদাবাজি বরদাশতও করা হবে না। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটির উপর কোন দখল বাণিজ্য হতে দেওয়া হবে না। অফিসে বসে কেউ ঘুষ খাওয়ার দুঃসাহস দেখাতে পারবে না। যুব সমাজের হাতকে কারিগরের হাতে রূপান্তরিত করা হবে। উন্নত দেশের মতো পড়ালেখা শেষ করার আগেই তাদের হাতে কাজ আসবে। আমরা তাদরেকে এমন যোগ্য কারিগর হিসেবেই তৈরি করবো। আমরা যুব সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চাই।
ধর্মীয় সম্প্রতির প্রসঙ্গ টেনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা এমন দেশ গড়তে চাই, যেখানে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা কোথাও নিরাপত্তার জন্য পাহারা বসাতে হবে না।
একজন নাগরিক তার ঘরে-বাইরে, কর্মস্থলে ও সমাজে সবখানে নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা ভোগ করবে। এদেশে নারী-পুরুষের সমান নিরাপত্তা ও মর্যাদা পাবে। জামায়াতে ইসলামী কোরআনের আলোকে রাষ্ট্রগঠনের সুযোগ পেলে দেশের নারীরা মর্যাদা ও ইজ্জতের সহিত তাদের দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবেন। তারা যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় কাজে অবদান রাখবেন।
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে দলের প্রতিটি কর্মীকে প্রস্তুত হওয়ার আহŸান জানিয়ে বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীর পক্ষে এককভাবে ছাত্র-জনতার স্বপ্নের দেশ গঠন করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন গোটা জাতির ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা ও সহযোগিতা। আমরা শান্তি, অগ্রগতি, ন্যায়বিচার ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
সিলেট জেলা আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য মাওলানা হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মোঃ ফখরুল ইসলাম।
জেলা সেক্রেটারী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন, জেলা সহকারী সেক্রেটারী অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম এবং মাওলানা মাশুক আহমদের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- সুনামগঞ্জ জেলা আমীর মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান, মৌলভীবাজার জেলা আমীর ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলী, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও সিলেট জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও সিলেট জেলা নায়েবে আমীর হাফেজ আনওয়ার হোসাইন খান, হবিগঞ্জ জেলা জামায়াত সেক্রেটারী কাজী মহসিন আহমদ, জেলা মজলিশে শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ, জেলা মজলিশে শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য উপাধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ ফয়জুল্লাহ বাহার, জেলা শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ আল-হোসাইন, শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ নাজমুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবির কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী সভাপতি শরীফ মাহমুদ, শাবিপ্রবি ছাত্রশিবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, ছাত্রশিবির সিলেট জেলা পূর্ব সভাপতি মারুফ আহমদ প্রমূখ।