বিশ্বনাথ প্রতিনিধি
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলীর সহধর্মীনি তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেছেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দেশ দুইভাগে বিভক্ত ছিল। একদল ছিল শোষক শ্রেণি, আর আমরা সাধারণ জনগণ ছিলাম শোষিত শ্রেণি। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের অত্যাচারে অতিষ্ট জনগণ একটি গণঅভ‚্যত্থান ঘটিয়ে তাদেরকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। যার ফলে স্বৈরাচারমুক্ত শোষণমুক্ত একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। কিন্তু এখনো পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। এখনো একটি চক্র বারবার দেশের উপর, মানুষের উপর ষড়যন্ত্র করছে। সেই স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সেক্টরে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে আছে। সুযোগ পেলেই উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করবে। এজন্য বাংলাদেশের জনগণকে সজাগ থাকতে হবে।’
রবিবার দুপুরে বিশ্বনাথ পৌর এলাকার অলংকারী গ্রামে মরহুম হাজী তেরা মিয়া ও সুফিয়া বেগম স্মরণে ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইলিয়াসপতœী লুনা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দল হিসেবে ফ্যাসিস্ট। গত ১৭ বছর বিএনপির নেতাকর্মীদের যে দমন-নিপীড়ন, গুম, হত্যা চালিয়েছে। এরপরও তাদের সাথে কি ভদ্রতা দেখাবেন। তাদের সাথেও সেরকম ব্যবহার করা উচিত ছিল। কিন্তু বিএনপি দল হিসেবে ভদ্র, তাই তাদের মতো বিএনপি এসব করবে না।’
তিনি বলেন, এখনো আমরা ইলিয়াস আলীর সন্ধান বের করতে পারি নাই। বারবার সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম। আমরা অপেক্ষায় ছিলাম যে ফ্যাসিস্ট সরকার পতন হলে আমরা ইলিয়াস আলীকে ফেরত পাবো। কিন্তু বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করেও এখনো ইলিয়াস আলীর কোন সন্ধান পাইনি। আমি অনুরোধ জানাবো একটি সুষ্ঠু তদন্ত করে ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া সকলকে বের করতে হবে এবং গুমের সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। গুমের সংস্কৃতি যাতে দেশে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা যায়, বর্তমান সরকার সেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যেন গ্রহণ করে।’
যুক্তরাজ্যের ওল্ডহাম বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব জাকির হোসেন ইমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলীর জ্যেষ্ঠ ছেলে ব্যারিস্টার আবরার ইলিয়াস অর্ণব, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. গৌছ আলী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ লিলু মিয়া।
নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলীর একান্ত সহকারী ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ ময়নুল হক, অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান লিটন, দশঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমাদ উদ্দিন খান, বিশ^নাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাস্টের সহসভাপতি মিছবাহ উদ্দিন ও সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মোঃ শামছুল ইসলাম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলীর একান্ত সহকারী ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাজী মুসলিম আলী, দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফেজ আরব খান, সাবেক চেয়ারম্যান আবারক আলী, অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল, যুক্তরাজ্য প্রবাসী হোসেন মিয়া, অলংকারী ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি আলতাব আলী, সাধারণ সম্পাদক মছব্বির আহমদ, বিশ^নাথ পৌর যুবদলের আহŸায়ক শাহ আমির উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আশিকুর রহমান রানা, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমদ দুলাল, অলংকারী ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহŸায়ক জুবায়ের আহমদ সুমন, জিয়ামঞ্চ সিলেট জেলা শাখার যুগ্ম আহŸায়ক আমির আলী, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য আব্দুল কাইয়ুম, ছাত্রদল নেতা শাহ টিপু, আব্দুর রহমান, অলংকারী গ্রামের আব্দুল জব্বার, আপ্তাব আলী, ফুল মিয়া, আশিক মিয়া।
শুরুতে ক্বোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা আলাউদ্দিন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী গিয়াস উদ্দিন ও শেষে দোয়া পরিচালনা করেন কামালবাজার ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক মাওলানা আব্দুল মালিক।
উল্লেখ্য, শনিবার দিনব্যাপী মরহুম হাজী তেরা মিয়া ও সুফিয়া বেগমের পরিবারের আয়োজনে ও অলংকারী ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির সহযোগিতায় এবং ডা. মোঃ শামছুল ইসলামের তত্ত¡বধানে ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পে এলাকার ৪ শতাধিক চক্ষু রোগিকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। বিজ্ঞপ্তি