কাজির বাজার ডেস্ক
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদেরও অপসারণ করা হচ্ছে। গত আগস্ট মাসে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যানদের অধিকাংশই এখন আত্মগোপনে রয়েছেন। ফলে ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে অচলবস্থা তৈরি হয়েছে। এ কারণে ব্যাহত হচ্ছে নাগরিক সেবা। এই পরিস্থিতিতে অন্তর্র্বতী সরকার ইউপি চেয়ারম্যানদের অপসারণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের আগামী বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র এবং জেলা পরিষদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ করেছে অন্তর্র্বতী সরকার। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাত্র দশ দিনের ব্যবধানে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার দেশের সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কাউন্সিলরদের অপসারণ করেছে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বতী সরকার। ইউনিয়ন পরিষদ আইন অনুযায়ী, পদত্যাগ করলে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের পদ শূন্য হবে। এ ছাড়া মৃত্যু বা অন্য কারণে চেয়ারম্যান পদ শূন্য হলে প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করবেন। তবে শূন্য হওয়া ছাড়াও আইন অনুযায়ী ফৌজদারি মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি বা দÐিত হলে, ইউনিয়ন পরিষদের স্বার্থপরিপন্থী কাজ করলে চেয়ারম্যানদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারবে সরকার। দুর্নীতি, অসদাচরণ বা নৈতিক স্খলনজনিত কোনো অপরাধ কিংবা বিনা অনুমতিতে দেশত্যাগের কারণেও ইউনিয়ন পরিষদ আইন অনুযায়ী তাদের (চেয়ারম্যান ও সদস্য) সরকার অপসারণ করতে পারে।
বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারা দেশের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে থাকা প্রায় ২ হাজার আওয়ামী লীগ নেতা আত্মগোপনে চলে গেছেন। সরকার সমর্থিত এইসব জনপ্রতিনিধি আত্মগোপনে থাকায় নাগরিক সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি বলেছেন, তারা (ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা) বিগত শেখ হাসিনা সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট। তাদের পরোক্ষ সহায়তায় অন্তর্র্বতী সরকারকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত চলছে। বিভিন্ন স্থানে যে সংঘাত সৃষ্টি হচ্ছে, সেসব স্থানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তাদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
এ বিষয়ে সাবেক স্থানীয় সরকার সচিব আবু আলম শহিদ খান বলেন, স্থানীয় সরকারের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেভাবে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, ঠিক একইভাবে ইউনিয়ন পরিষদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারণ বেশ কয়েক বছর ধরে এমন সব নির্বাচন হয়েছে যে, নির্বাচন নিয়ে মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর এসব জনপ্রতিনিধির পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়েছে।