সিলেট ও সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ৭ জনের মৃত্যু

9

স্টাফ রিপোর্টার

সিলেট ও সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার বজ্রপাতে সিলেট সদর উপজেলার কাটিমারা গ্রামে একজন, বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের সাড়ইল গ্রাম সংলগ্ন ডুবির হাওরে আরেকজন মারা যান। এছাড়া সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজারে ২ জন, জামালগঞ্জ ও ছাতক উপজেলায় ২ জন এবং কোম্পানীগঞ্জে ১ জন বজ্রপাতে মারা যান।
সিলেটের বিশ্বনাথে নিহত রেদওয়ান আহমদ (১৯) সাড়ইল গ্রামের ওলিউর রহমানের ছেলে ও এমসি কলেজের বিএসএস ১ম বর্ষের ছাত্র, এছাড়া অপর সিলেট সদর উপজেলায় নিহত মফিজ আলী (৫০)। পেশায় নিহত মফিজ একজন দিনমজুর।
বিশ্বনাথের নিহত রেদওয়ান আহমদের ভাই সুফিয়ান আহমদ জানান, গ্রামের পার্শ্ববর্তী হাওর সংলগ্ন পুকুর সেচকালে বিকট শব্দ হলে আমরা ২ ভাই পুকুর পাড়ে লুটিয়ে পড়ি। তখন সঙ্গীয় অন্যরা পানিতে ঝাপ দেন। জ্ঞান ফিরলে উঠে দেখি রেদওয়ানের মুখের একপাশ ঝলসে গেছে। পরে প্রতিবেশী ও স্বজনদের সহায়তায় তাকে সিলেট নর্থইস্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
বিশ্বনাথ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বজ্রপাতে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিশ্বনাথ থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রুবেল মিয়া জানান, গ্রামের পার্শ্ববর্তী হাওরে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে পুকুর সেচ করছিলেন কিছু যুবক। এ সময় বজ্রপাতে দুই জন আহত হন। পরে তাদের হাসপতালে নেওয়া হলে ডাক্তার রেদওয়ান আহমদকে (১৯) মৃত ঘোষণা করেন।
সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফরিদ আহমেদ জানান, গত রাত থেকে সিলেটে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও সকাল থেকে বজ্রপাত বৃষ্টি হচ্ছিল। দুপুরে নিজ বাড়ির পাশে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মফিজ আলী। তিনি পেশায় দিনমজুর। বজ্রপাতে তার শরীর ঝলসে গেছে। শাহপরান থানার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনির হোসেন, রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ বাড়ির পাশে একটি পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান মফিজ আলী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে নিহত মাসুক আহমেদ পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের মধ্য রাজনগর গ্রামের কনু মিয়ার ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকালে মাসুক আহমেদ তার বাড়ির পাশের হাওরে গরুর জন্য ঘাস কাটতে যান। সেখানে বজ্রপাতের ঘটনায় ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
অপরদিকে, রবিবার সকালে দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের পলিরচর গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে জালাল মিয়া (৩০), একই গ্রামের নুরুল হকের ছেলে জসিম উদ্দিন (২৮) বাড়ির পাশের হাওরে মাছ ধরতে যান। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে পৃথক বজ্রপাতে শরিফ মিয়া (৩৫) নামের আরেক জেলের মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার কালাগোজা গ্রামের আব্দুল লতিফ মিয়ার ছেলে। বাড়ির পাশে রাতে নয়া হাওরে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। এদিকে, রবিবার সকালে ছাতক মল্লিকপুর গ্রামের পাশের হাওরে বজ্রপাতে সুন্দর আলী নামের আরেক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন জানান, হাওরে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।