হৃদরোগের লক্ষনসমূহ এবং তা থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে আমাদের সবার জেনে রাখা উচিত। দেশের মানুষের জীবনযাত্রার ধরণ হৃদরোগের অন্যতম ঝুকিপূর্ণ কারণ। তাই এই ব্যাপারে প্রত্যেকেরই সচেতনতার প্রয়োজন। রবিবার সকালে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেট আয়োজিত আলোচনা সভা ও গণমূখী সেমিনার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত সচিব, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী, এনডিসি এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন হৃদরোগ চিকিৎসায় বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়ে, দেশে বর্তমানে উন্নত মানের চিকিৎসা হয়। আবু আহমদ সিদ্দিকী বলেন হৃদরোগ থেকে মুক্ত থাকতে হৃদবান্ধব খাদ্যাভাস গড়ে তুলতে হবে এর কোন বিকল্প নেই। একই সঙ্গে প্রয়োজন স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। কেবল ওষুধ নয় খাদ্যাভাসই পারে হৃদরোগ থেকে মুক্ত রাখতে। তিনি আরো বলেন চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি জনসাধারণকে রোগ সম্মন্ধে ধারনা দিতে হবে। বিশেষ করে হৃদরোগ যাতে না হয় সেই কারণগুলো তুলে ধরতে হবে। আবু আহমদ সিদ্দিকী, সিলেট ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডশন হাসপাতালে ফ্রি হার্ট ক্যাম্প ঘুড়ে দেখেন এবং তার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি এই হাসপাতালের হৃদরোগ চিকিৎসার ভ‚য়সী প্রসংশা করেন।
ঐ দিন র্যালী পরবর্তী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এর হর-সভাপতি প্রফেসর ডা. এম এ আহবাব এর সভাপতিত্বে পাবলিসিটি সেক্রেটারী আবু তালেব মুরাদের পরিচালনায় এবং হাফেজ আব্দুল বাছির কর্তৃক কোরআন তেলাওয়াতের পর বিশ্ব হার্ট দিবসের গুরুত্ব সম্পর্কে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেট এর সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডা. মোঃ আমিনুর রহমান লস্কর। তিনি তার বক্তব্যে বলেন হৃদরোগ বিশ্বের এক নম্বর ঘাতক। হৃদরোগের ভয়াবহ পরিনতি যেমন হার্ট এ্যাটাক, স্ট্রোক এবং হার্ট ফেইলিউরে বিশ্বব্যাপী প্রতি বৎসর ২ কোটি ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বলেন এই মৃত্যুর বেশির ভাগই নি¤œ এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে ঘটে।
গণমূখী সেমিনারে জন্মগত হৃদরোগের আধুনিক চিকিৎসা সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন সিলেট ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ফারজানা তাজিন, উচ্চ রক্তচাপ ও করোনারী হৃদরোগ সম্মন্ধে বলেন সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. কৌশিক মজুমদার, বিশ্ব হার্ট দিবস’২০২৪ এর প্রতিপাদ্য বিষয় ‘হৃদয়ের যতœ হোক সর্বজনীন’ এর গুরুত্ব আরোপ করে বক্তব্য রাখেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এস এম হাবিব উল্লাহ সেলিম।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ডা. এম এ আহবাব বলেন, একটা সময় হৃদরোগকে সাধারণত বয়স্ক মানুষের রোগ বলেই মনে করা হতো। কিন্তু আজকাল প্রায় সব বয়সী মানুষই হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাই হৃদরোগের লক্ষণসমূহ এবং তা থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে আমাদের সবারই জেনে রাখা উচিত। তিনি আরও বলেন গবেষণায় দেখা যায়, পারিবারিক ইতিহাস ও জেনেটিক বৈশিষ্ট্যই হৃদরোগের ক্ষেত্রে প্রধান ও নিয়ন্ত্রণের অযোগ্য কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, নিয়ন্ত্রণযোগ্য কারণেই মানুষ আজকাল হৃদরোগে আক্রান্ত হন বেশি।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সহ সভাপতি প্রফেসর ডা. মোঃ আলতাফুর রহমান, প্রফেসর ডা.সুধাংশু রঞ্জন দে, যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ প্রকৌশলী শোয়েব আহমদ মতিন, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন সেক্রেটারী এস আই আজাদ আলী, কার্যকরি কমিটির সদস্য ডা. শামীম আহমদ, হাসপাতালের পরিচালক কর্ণেল (অবঃ) শাহ আবিদুর রহমান ও উপ-পরিচালক ডা. মোঃ আব্দুল মুনিম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেট এর কোষাধ্যক্ষ জামিল আহমদ চৌধুরী।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেট বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে রবিবার বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিলেট ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে সুবিধাবঞ্চিত হৃদরোগীদেরকে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরামর্শ সেবার পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে সহযোগিতা প্রদান করেন সান ফার্মাসিউটিক্যালস এবং এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যাল লিঃ। বিজ্ঞপ্তি