আতিকুর রহমান. ছাতক
ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর সাথে অশুভ আচরণ ও ডাক্তার নার্সদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার ঘটনায় অভিযোগ লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন, ছাতক প্রেসক্লাবের সদস্য ও দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার ছাতক প্রতিনিধি মোঃ লুৎফুর রহমান শাওন। শনিবার সকালে অভিযোগ দায়ের করেন ছাতক পৌরসভার ০৪ নং ওয়ার্ডের গণক্ষাই আবাসিক এলাকার বাসিন্দা লুৎফুর রহমান শাওন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, পেট ব্যথা নিয়ে লুৎফুর রহমান শাওন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য যান গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মহসিন ০২ টি ইনজেকশন লিখে দেন। বাহিরের ফার্মেসি থেকে ইনজেকশন ক্রয় করে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইনজেকশন পুশ করার জন্য রুবেল নামের একজন স্টাফ এর মোবাইল নাম্বার দেন। রুবেল কে ফোন দেওয়ার ২০ মিনিট পরে এসে রুবেল ইনজেকশন পুষ করেন। ইনজেকশন পুষ করার পর পেটের ব্যথা না কমায় কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসপাতালের নতুন বিল্ডিংয়ের ৪র্থ তলায় পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি প্রদান করেন। ওয়ার্ডে গিয়ে কর্তব্যরত নার্স, আয়া বা ওয়ার্ড বয় কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারা সরকারি ডিউটি রেখে দরজা বন্ধ করে ঘুমাচ্ছিলেন। এসময় রোগীর সাথে থাকা মাহফুজুর রহমান সেই রুমের দরজায় অনেক ডাকা-ডাকির পর দরজা খুলে এতো ডাকা-ডাকি করছেন কেনো কারণ জানতে চান। তাদের পরনে মেডিকেলের নির্ধারিত নার্সের পোষাক না থাকায় তাদেরকে চিনতে না পেরে ডিউটিতে কে আছেন জিজ্ঞেস করলে তাহারা ক্ষেপে গিয়ে অশুভ আচরণ ও দূর্ব্যবহার করেন এবং তারা বলেন মাসিকে খোঁজে বাহির করে সিট নিতে। ঐ সময় মাসিও ৪র্থ তলার নার্সদের ডিউটি রুমে ঘুমাচ্ছিলেন। অনেক ডাকা-ডাকির পর মাসি ঘুম থেকে উঠে রোগীর বিছানাপত্রের ব্যবস্থা করে দেন। ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ ফ্যান লাইট নষ্ট। ওয়ার্ডে ভর্তির পর স্যালাইন ইনজেকশন পুষ করে ডিউটিতে থাকা নার্স, আয়া পুনরায় সেই রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘন্টা খানেক পর পেটে ব্যাথা আরো বাড়লে ঘুমিয়ে থাকা নার্সের রুমে গিয়ে অনেক ডাকা-ডাকির পর তাদের সাড়া শব্দ না পেয়ে কর্তব্যরত ডাক্তারের খোঁজে জরুরি বিভাগে গিয়েও কোনো ডাক্তার বা কর্তব্যরত কাউকে খোঁজে না পেয়ে নিরুপায় হয়ে যান অভিভাবকরা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য উক্ত হাসপাতাল থেকে তারা অন্যত্র চলে যান। অসুস্থ্য শাওন জানান, পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মেডিকেল থেকে তাহাকে কোনো ধরনের ঔষধ দেওয়া হয়নি। প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার ঔষধ সরকার বরাদ্দ দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক রোগী বলেন, প্রতিদিন রাত ১২ টা হওয়ার পরেই ডিউটিতে থাকা ডাক্তার, নার্স, আয়া কাউকে খোঁজে পাওয়া যায় না। হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্সদের বিরুদ্ধে রোগীদের সাথে অশুভ আচরণ ও দূর্ব্যবহার, ডেলিভারী রোগীদের স্বজন থেকে মিষ্টি খাওয়ার নামে মোটা অংকের টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাক্তার সাইদুর রহমান অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাজীব চক্রবর্তীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি জরুরি একটি মিটিংয়ে ঢাকায় আছি অভিযোগের বিষয়টি আরএমও আমার হোয়াটসআপে দিয়েছেন। বিয়টি খুবই দুঃখজনক, ঢাকা থেকে ফিরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।