পিন্টু দেবনাথ, কমলগঞ্জ
শ্রীমঙ্গল- কমলগঞ্জ সড়কের ভানুগাছ বাজারের পাশে ধলাই নদী। আর এই নদীর তীরে ফোটেছে কাশফুল।
প্রকৃতিতে শরতের আগমনী বার্তা জানিয়ে দেয় কাশফুল। শরৎকাল মানেই সাদা রঙের খেলা। এ সময় নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা উড়ে বেড়ায়। সবুজ ঘাসের ভেতর মাথা উঁচু করে হাওয়ায় দোল খায় পালকের মতো নরম ধবধবে সাদা কাশফুল।
শারদীয় এ ঋতুতে কাশফুল ফোটে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে প্রাণ-প্রাকৃতিতে। বড্ড অবহেলায় নদীর ধার, পুকুর পাড় কিংবা বিস্তীর্ণ বালুচরে ফোটে কাশফুল। দূর থেকে কাশবনে তাকালে মনে হয়, শরতের সাদা মেঘ যেন নেমে এসেছে ধরণীর বুকে। একটু বাতাস পেয়ে দলে দলে কাশফুল যখন এদিক-ওদিক মাথা নাড়ায়, তখন মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই।
এমন দৃশ্যের দেখা মেলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদী পাড়ের কয়েকটি স্থানে। কমলগঞ্জ পৌরসভার দক্ষিণ কুমড়াকাপন এলাকায় ধলাই নদীর পুরাতন ব্রিজ সংলগ্ন নদীর পাড়ে, গোপালনগর ও বড়গাছ এলাকায় নদীর চরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে প্রচুর কাশফুল ফুটেছে। স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীরা এখানে আসছেন। কেউবা আনন্দে হারিয়ে যাচ্ছেন কাশবনে। কেউ তুলছেন ছবি। কেউবা হাত বুলিয়ে নিচ্ছেন কাশফুলে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেশি দেখা যায়। কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব আহমেদুজ্জামান আলম জানান, প্রতি বছর শরৎ এলে ধলাই নদীর তীরে কাশফুল ফুটে। একটি নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে কাশফুল ফোঁটায় পথচারীসহ পর্যটকের আকর্ষণ করছে।
অনেক শিক্ষার্থীরা জানান, ‘কাশফুলের সমারোহে বিকেলের বাতাস যেন শীতের আগমনের বার্তা দিচ্ছে। কাশফুলের মুগ্ধতায় আমাদের এখানে আসা। কাশফুল শৈশবের স্মৃতিগুলোও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। কাশফুলের মাঝে ছবি তুললে অনেক সুন্দর হয়। এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা মৌসুমী মৌ জানান, ‘কাশফুল ছাড়া শরৎ পরিপূর্ণ হয় না। ধলাই নদী তীরে প্রতি বছরই কাশফুল ফোটে। কিন্তু দুঃখের বিষয় অনেকেই ফুল ছিঁড়ে নিয়ে যায় আবার কেউ কেউ গরুর খাবার হিসেবে এগুলো কেটে নিয়ে যায়।’
কমলগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল এস পলাশ ও পাহাড় রক্ষা উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি মো. মোনায়েম খান জানান, ঋতু পরিক্রমায় এখন শরৎকাল। আর সেই শরৎকালের বৈশিষ্ট্য কাশফুল। আমাদের কমলগঞ্জে এটি অতিপরিচিত। ধলাই নদীর পাড় ও চরে এখন কাশফুলের সমারোহ।
তারা আরো জানান, কাশফুলে রয়েছে বহুবিধ ব্যবহার। তাছাড়া কাশে অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। জ্বালানি বা অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের জন্য নয়, অন্তত সৌন্দর্যপ্রেমি মানুষদের জন্য হলেও কাশবন থাকার প্রয়োজন রয়েছে।