হবিগঞ্জ সংবাদদাতা
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে কালনী-কুশিয়ারা নদীর তীরে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধে বড় ধরনের ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে শত শত একর ফসলি জমি নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া চলতি রোপা আমন মৌসুমে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় দিন পার করছেন কৃষকরা। ভাঙনের বিষয়ে চলতি বছরের ফেব্রæয়ারি মাসের শেষের দিকে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও এ পর্যন্ত বাঁধটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি পাউবো। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আট বছর আগে পৌর সদরের লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বদলপুর ইউনিয়নের পিরোজপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত দুই দফায় প্রায় সাত কিলোমিটার ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, “বাঁধটি নির্মাণের বছর তিনেক পর দ্বিতীয় দফায় সংস্কারের সময় বাঁধের গোড়া থেকে মাটি কেটে সংস্কার করার ফলে বাঁধটি দুর্বল হয়ে গেছে। যার দরুন নদী ভাঙনের কবলে পড়ে এখন বাঁধের প্রায় আধা কিলোমিটারই রয়েছে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায়।”
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, “পৌর সদরের লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বদলপুর ইউনিয়নের পিরোজপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত হাওরে প্রায় পাঁচশ হেক্টরের বেশি কৃষিজমি রয়েছে। বাঁধটি নদীভাঙনে বিলীন হলে বদলপুর ইউনিয়নের অন্যান্য হাওড়সহ জলসুখা ইউনিয়নের কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমির রোপা আমন ফসল নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।”
সরেজমিনে কালনী-কুশিয়ারা ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের ঘাগানি গাছ সংল্ল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের বেশ কয়েকটি অংশে নদীভাঙনের কবলে পড়েছে। ইতোমধ্যে বেড়িবাঁধের অনেকাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় কৃষক বশির মিয়া জানান, বেড়িবাঁধটির অনেকাংশ প্রায় বিলীনের পথে। এটি এখনই মেরামত করা না হলে ফসলি জমি ও আমন ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।
নোমান মিয়া নামের আরেক কৃষক বলেন, কয়েক মাস আগেও এতটা ভাঙন ছিল না। তখন মেরামত করলে ভাঙন অনেকটাই কম থাকত। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাঁধ মেরামতের কোনো লক্ষণই নেই। বাঁধটি দ্রæত মেরামত না করা হলে ফসল ও জমি দুটোই হারাতে হবে আমাদের। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. কাশেম মিয়া বলেন, বেড়িবাঁধটির অবস্থা খুবই খারাপ। এখনই মেরামত করা না হলে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, সরেজমিনে বাঁধটি পরির্দশন করা হবে এবং ভাঙন কবলিত অংশে চলতি অর্থবছরে কাবিটা কর্মসূচির আওতায় পিআইসির মাধ্যমে বাঁধ মেরামতের কাজ করা হবে।