স্টাফ রিপোর্টার
হজরত শাহপরাণ (র.) মাজার এলাকায় অসামাজিকতা বিরোধী আলেম-জনতার সঙ্গে ওরসপন্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত ২টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে দু’পক্ষের ৩০-৩৫ জন আহত হয়েছেন। পরে সেনাবাহিনীর একটি টিম এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ৩ দিন থেকে শাহপরাণ (র.) মাজারে বার্ষিক ওরস চলছিলো। এর আগে সিলেটের আলেমসমাজ শাহপরাণ মাজার ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে ওরসের নামে অসামাজিকতা যাতে না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করেন। এসব বৈঠকে কমিটির নেতৃবৃন্দ ওরসে কোনো অসামাজিকতা হবে না বলে প্রতিশ্রæতি দেন। এ অবস্থায় তিন দিন আগে শুরু হয় মাজারে ওরস। ওরস চলাকালীন তৃতীয় কোনো পক্ষ যাতে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরি না করতে পারে সে জন্য আলেম-সমাজের একটি প্রতিনিধি দল প্রথম দিন থেকেই মাজার এলাকায় অবস্থান করেন এবং সার্বিক বিষয়ে নজরদারি রাখেন। সে ধারবাহিকতায় সোমবার দিবাগত রাতেও তারা মাজারের মসজিদের সিঁড়িতে বসে কুরআন তিলাওয়াত ও গজল পরিবেশন করছিলেন। এসময় ওরসে আসা মাথায় লাল কাপড় বাধা কিছু লোক তাদের উপর হামলা করে মারধর করতে শুরু করেন। হামলার শিকার মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরা এসময় মসজিদের ভেতরে আশ্রয় নেন। এসময় হামলাকারীরা বাইরে অবস্থান নিয়ে তাদের হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। খবর পেয়ে জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর এলাকার শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে মসজিদে আশ্রয় নেওয়া ছাত্র-শিক্ষককে উদ্ধার করেন এবং ওরসপন্থীদের উপর চড়াও হন। ওরসে আসা লোকজনের তাবুগুলো ভেঙে দেওয়া হয়। এসময় দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয় এবং দু’পক্ষর ৩০-৩৫ জন আহত হন। পরে ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি টিম এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
আলেম-সমাজের কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন- শুরুতে ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও উত্তেজনা শুরু হওয়ামাত্র তারা সেখান থেকে চলে যায়। শান্ত পরিস্থিতিকে অশান্ত করেছে একটি তৃতীয় পক্ষ। তারা ওরসে আসা মাদকসেবী ও মাথায় লাল কাপড় বাধা কিছু লোককে পরিস্থিতি অশান্ত করতে উস্কানি দিয়েছে। পরে তারা অতর্কিতভাবে আমাদের উপর হামলা চালায়। তবে এ বিষয়ে মাজার কমিটির কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন-অর-রশীদ চৌধুরী বলেন, মাজারের ওরসে আসা কিছু পাগল, ফকির ও আলেম-সমাজের প্রতিনিধি দলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। দু’পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় কিছু ভাঙচুর হয়েছে। তবে এখানে সুনির্দিষ্টভাবে কেউ মাজারে হামলা করতে আসেনি। এ ঘটনায় কারা জড়িত, তা এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। তবে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ। এ সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।