সিলেট রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি ওসি ও আ.লীগ নেতাকর্মীসহ ১৮৮ জন আসামী

35

 

স্টাফ রিপোর্টার

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় জিলু আহমদ দিলু নামের যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় ১১ মাস পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে মামলাটি করেন নিহতের ভাই বুলু মিয়া। তিনি গোলাপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ মদন গৌরি গ্রামের ইলিয়াছ আলী এলাইছের ছেলে। দিলু গোলাপগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহŸায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।
মামলায় সদ্য বদলি হওয়া সিলেটের পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও নাটোরের লালপুরের বাসিন্দা শাহ মিজান শাফিউর রহমানসহ ৪ পুলিশ কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৪ নেতাকর্মীসহ মোট ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ১০০/১৫০ জনকে আসামী করা হয়। ডিআইজি মিজান শাফিউর রহমানের বিরুদ্ধে সিলেটে এটাই প্রথম মামলা বলে জানা গেছে।
মামলায় ডিআইজিকে ৩ নাম্বার আসামি করা হয়েছে। প্রধান আসামি করা হয়েছে দক্ষিণ সুরমা থানার তৎকালীন ওসি শামসুদ্দোহাকে। এজাহারনামীয় অন্য আসামিরা হলেন- দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি তদন্ত মো. আবুল হোসেন, এসআই লোকমান হোসেন, সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ ওরফে ভিপি শামীম ও সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, সিসিক কাউন্সিলর ও মহানগর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব বাবলু, সিসিক কাউন্সিলর শান্তনু দত্ত শন্তু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি নজরুল ইসলাম শিপার।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা নুরুজ্জামান, মিয়া, গোলাপগঞ্জ ফুলবাড়ি ইউপি ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মজির উদ্দিন, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা যুবলীগের আহŸায়ক কমিটির সদস্য লিটন হোসেন খান, দক্ষিণ সুরমা যুবলীগ সভাপতি ছদরুল ইসলাম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নিজাম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল উদ্দিন রাসেল, ল কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম, গোলাপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ছমির উদ্দিন, দক্ষিণ সুরমার তেতলী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আসাদুল ইসলাম লাভলু, ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন, উপজেলার লালাবাজার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহিদ হোসেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক আব্দুল মুকিত, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান, মাজেদ আহমদ মিটু, আবু তাহের, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি দীন মো. ফয়ছল, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি লাকী লোকমান, যুবলীগ নেতা সুহেল আহমদ, তেতলী ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি নিজামুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিসবাউল ইসলাম কয়েস।
মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, তার ভাই দিলু গোলাপগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় অবেরোধ চলাকালে গত বছরের ৩১ অক্টোবর সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের লালাবাজার এলাকায় পুলিশ ও সরকার দলের লোকজন হামলা, গুলিবর্ষন করে। দিলু মোটরসাইকেল নিয়ে স্থান ত্যাগ করার সময় পুলিশের গাড়ি পেছন দিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পরে তাকে মারধর করা হয়। সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
ঘটনার পর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ অনিহা প্রকাশ করে। আওয়ামী লীগের কর্মীরা বাড়িতে গিয়ে ভয় দেখায়। মামলার ভয় ও বাড়িঘর দখলের হুমকীর কারণে মুখ খুলেননি দাবি করে বাদি বুলু মিয়া এজাহারে উল্লেখ করেন অনুকুল পরিবেশ ফিরে আসায় তিনি মামলা করেন।