সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী, এনডিসি বলেছেন, গাছ আমাদের অকৃতিম বন্ধু। কার্বণ ডাই অক্সাইড বাড়লে আমরা কেউ বাচতে পারব না। কিন্তু গাছ অক্সিজেন সরবরাহ করে আমাদের বাচিয়ে রেখেছে। সুজলা সুফলা এই দেশকে আজকের শিক্ষার্থীরা আগামীতে নেতৃত্ব দিবে এবং তারাই নতুন করে গড়ে তুলবে তাদের স্বপ্নের দেশ। মরুভ‚মিতে কোনো গাছ নেই কিন্তু আমাদের সুজলা-সুফলা দেশে নানান বৃক্ষে সাজানো। এটি মহান সৃষ্টিকর্তার অবদান। এই অবদানকে গুরুত্ব দিয়ে বেশি বেশি গাছ লাগিয়ে মানসম্মত বসবাস যোগ্য সুন্দর একটি দেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, দেশকে কিভাবে ভালোবাসতে হয়, কিভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হয় এবং সু-শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হয়। ছাত্রদের এই অবদান আজকে বিশে^ ছড়িয়ে পড়ছে এবং আজ বিশ^বাসী দেখছে। যাদের কোনো সংগঠন নাই, তারাই দেশকে ভালোবেসে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সফল হয়ে দেশকে সুন্দর করে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। আমরা যারা রাষ্ট্র পরিচালনার সাথে জড়িত, তাদেরকে নতুন করে ভাবতে হবে। নতুন প্রজন্ম আমাদের কাছে কি চায়! একটি বৈষম্যহীন সেবা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সকল নাগরিকের পাশে দাঁড়ানোর মতো দেশ, সাহায্য করার মতো দেশ। তাই সরকারি কর্মকর্তাদেরকে পরিবর্তন হতে হবে এবং এই পরিবর্তন আমাদের (সরকারি কর্মকর্তা) নিজেদেরকেই হতে হবে। এটি হতেই হবে, যাতে আমাদের কাছে কোনো নাগরিক কাজের জন্য এসে যাতে খালি হাতে ফিরে না যায়। আমরা যদি আপ্যায়ন নাও করতে পারি! তবে যেন সেবা গ্রহিতাদের সাথে হাসিমুখে কথাবলি। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা মানুষগুলো সরকারি অফিসের চেয়ারে বসার সাহস পায়না অথবা সম্মান করে বসতে চায়না। তাদেরকে অনেক সময় আমরা অবজ্ঞার চোখেদেখি। এমন বিষয় গুলো কর্মকর্তাদের খেয়াল রেখে তাদেরকে সম্মানের সাথে সেবা দেওয়া সকল সরকারি কর্মকর্তাদের নৈতিক দায়িত্ব। নতুন প্রজন্মের শিক্ষাথীরা এই বৈষম্যগুলোই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। এগুলোর পরিবর্তন করতেই হবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস এর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, সকল অন্যায়, অত্যাচার হতে বেরিয়ে আসতে হবে। আজকের নতুন প্রজন্মের কাছে ইউরোপ, আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলো বেশি দূরে নয়। তারা স্মার্ট ফোনের সাহায্যে উন্নত দেশের সরকারি সেবাগুলো দেখতে পাচ্ছে। তাই শিক্ষাথীদের এক্সপেক্টেশন ও চেতনা অনুযায়ী আমাদেরকে দেশ গড়ে তুলতে হবে।
গতকাল দুপুরে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও সিলেট বন বিভাগ আয়োজিত বৃক্ষ দিয়ে সাজাই দেশ, সমৃদ্ধ করি বাংলাদেশ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১৫ দিন ব্যপী বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিলেটের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সুবর্ণা সরকার এর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেটের পুলিশ সুপার মাহবুব রহমান, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি জেদান আল মুসা, সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের ডিসি নর্থ জাবেদুর রহমান। এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের সরকারি কর্মকর্তা, বৃক্ষপ্রেমী, এবং শিক্ষাথীরা উপস্থিত ছলেন।
বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা উপলক্ষে সকাল ১১টায় সিলেট জেলা ষ্টেডিয়াম এর সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়ে মেলা প্রাঙ্গনে সমাপনী হয় এবং মেলার উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের হাতে গাছের চারা উপহার তুলে দেন এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী স্টলগুলো পদির্শন করেন অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বৃক্ষরোপনে বিশেষ অবদান রাখায় নার্সারি ক্যাটাগরি ও নার্সারি উদ্যোক্তাদের হাতে জাতীয় পুরস্কার হিসেবে চেক তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। এছাড়াও মেলার সার্বিক সহযোগিতা করে সিলেট নার্সারী মালিক কল্যান সংস্থা। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনাথীদেও জন উম্মোক্ত থাকবে। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে মেলা। বিজ্ঞপ্তি