স্টাফ রিপোর্টার
সিলেট নগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভার্থখলা মসজিদ কমিটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে একটি স্বার্থান্বেষি মহল। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি গণমাধ্যমে বানোয়াট তথ্য প্রচার করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মসজিদ কমিটির মোতাওয়াল্লি হাজী মিসবাহ উদ্দিন আহমদ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘একটি কুচক্রী মহল ভার্থখলা জামে মসজিদ ও আমার সম্মানহানির উদ্দেশে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করছে। এলাকাবাসী তাদের এই ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিষয়ে অবগত এবং সতর্ক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার পরিবার দক্ষিণ সুরমার স্বনামধন্য একটি পরিবার। আমার দাদা হাজী মোহাম্মদ ইয়াছিন মিয়া ভার্থখলা জামে মসজিদ এবং মসজিদ মার্কেট, ভার্থখলা ঈদগাহ ময়দান, ভার্থখলা মাদরাসা, দক্ষিণ সুরমা নছিবা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জমি দান করেছেন। প্রস্তাবিত কলেজ হতে যাচ্ছে তাঁর দানের জায়গায়। ভার্থখলা পঞ্চায়েতি কবরস্থানও হাজী মোহাম্মদ ইয়াছিন এবং ফাজিল খাঁ দান করেছেন।’ মিসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘কিছু সংখ্যক মানুষ এসব নিয়ে হিংসা করছে। এ জন্য গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে বিভ্রান্ত করে দ্বিধাবিভক্তি সৃষ্টির পায়তারা করছে।’ তিনি বলেন, ‘গ্রামের দায়িত্বশীল মুরব্বি এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার তৌফিক বকস লিপনহ অনেকেই আলোচনার মাধ্যমে এলাকায় শান্তিশৃংখলা বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। কুচক্রী মহলের নেতৃত্বদানকারী কতিপয় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি শুধুমাত্র নিজেদের অনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। ফলে, সাধারণ জনগণ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।’
মোতাওয়াল্লি মিসবাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘২০০৩ সালে ভার্থখলা গ্রামের সর্বস্তরের মানুষের অনুরোধে আমি আল্লাহর ঘর মসজিদের খেদমত করা শুরু করি। তখন থেকেই গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি। দায়িত্ব পালনের বছরগুলোতে ওয়াক্ফ আইন অনুযায়ী মসজিদের বাৎসরিক আয়ের ১০ শতাংশ ভাতা নেওয়ার কথা থাকলেও আমি কোনো পারিশ্রমিক গ্রহণ করিনি।’ গত ১০ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে অপপ্রচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর মসজিদের আয় ব্যয়ের হিসাব মিটিং এর মাধ্যমে কমিটির সামনে উপস্থাপন করা হয়। যেহেতু মসজিদটি একটি ওয়াকফ সম্পত্তি তাই প্রতি বছর ওয়াকফ অডিটের মাধ্যমে আয় ব্যয়ের হিসাব ওয়াকফ পরিদর্শক বরাবর পেশ করা হয়। এ নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।’ মিসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘ওয়াকফ থেকে এখন পর্যন্ত যত চিঠি এসেছে সবগুলোর লিখিত উত্তর ওয়াকফ বরাবর প্রদান করা হয়েছে।’ অসুস্থতাজনিত কারণে সাত মাস দায়িত্ব পালন করতে না পারা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিরোধী পক্ষের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অনভিপ্রেত। আমি সম্পূর্ণ সজ্ঞানে ও নিরবিছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছি।’ বিরোধের কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মূলত যারা বিরোধী পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভার্থখলা মসজিদ বাজারে তাদের এবং তাদের কিছু আত্মীয়-স্বজনের দোকান রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি মাসে তাদেরকে জমিদারি ভাড়া দিতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে তারা ভাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। তাদেরকে ভাড়া প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা এইসব চক্রান্তে লিপ্ত।’ মসজিদের আয় প্রসঙ্গে মোতাওয়াল্লি মিসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘প্রতি মাসের আয় থেকে বিদ্যুৎ বিল, দুই ইমাম, তিন মোয়াজ্জিনসহ মসজিদের স্টাফদের বেতন পরিশোধ, মসজিদের অন্যান্য রক্ষণাবেক্ষণ এবং ওয়াকফ এস্টেইটের বাৎসরিক চাঁদা পরিশোধ করার পর উদ্বৃত টাকা বিভিন্ন সময়ে মসজিদের একাউন্টে জমা রাখা হচ্ছে। কুচক্রী মহল পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানাচ্ছে।’ অপপ্রচার বন্ধ না হলে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এম এম আহমদ মন্তজির, মো. ফয়জুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম সিরুল, আসাদ খান, সালেহ আহমদ মুক্তা, মাসুক আহমদ, আজমল মিয়া, সোলেমান মিয়া, শিহাব উদ্দিন আহমেদ, মো. জাকির হোসেন, মো. জিয়াউস শামস, মো. আজাদ মিয়া, মো. দুলাল আহমদ, নিয়াজ আহমদ, রুবেল আহমদ, মো. রুহেল মিয়া, মো. শাহজাহান মিয়া, মহসিন আহমদসহ এলাকার অর্ধশতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি।