সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি

9

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জে দ্বিতীয় দফার বন্যা পরিস্থিতির ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো সার্বিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। জেলার ১২ উপজেলার হাওর এলাকা ও নিম্নাঞ্চলের পানি নামছে না। এতে কয়েক লাখ মানুষের ভোগান্তির যেন অন্ত নেই। এ ছাড়া বন্যার কারণে তিন উপজেলার ৩৫ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তাঘাট, হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, আঙিনা সর্বত্র পানি থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার লাখ লাখ মানুষ। কাজকর্ম না থাকায় ঠিকমতো একবেলা খাবারও জোগাড় করতে পারছেন না তারা।
বন্যার পানি থাকায় জগন্নাথপুর উপজেলায়ই ৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আর ধর্মপাশা ও শান্তিগঞ্জ উপজেলায় একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া জগন্নাথপুরে ১০টি, শাল্লা ও শান্তিগঞ্জে ৩টি করে এবং বিশ্বম্ভপুরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো বন্যার্তরা আশ্রয় নিয়েছেন। তাই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।
জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের বাসুদেব স্মরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বাউধরন গ্রামের বাসিন্দা দুদু মিয়া বলেন, ‘গত ১৫-২০ দিনে দুইবার বন্যা হয়েছে। বন্যার কারণে রাস্তাঘাট, স্কুল সবকিছু পানির নিচে তলিয়ে আছে। এতে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। পড়াশোনা করতে পারছে না। যেখানে কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে জীবন পার করতে হচ্ছে সেখানে পড়াশোনার কথা চিন্তাই করা যায় না।’
একই এলাকার আরেক অভিভাবক বলেন, ‘স্কুলে পানি থাকায় গত এক মাস ধরে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে। তারা ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারছে না। আর শিক্ষক-শিক্ষিকারাও পানির জন্য স্কুলে আসতে পারেন না। এখন অভিভাবক হিসেবে চিন্তায় আছি এই ক্ষতি আমাদের বাচ্চারা কীভাবে কাটিয়ে উঠবে।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন, ‘বন্যার পানি থাকায় জগন্নাথপুর, শান্তিগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলায় ৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। একইভাবে আরও ১৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার্ত মানুষ আশ্রয় নেওয়ায় সেখানেও পাঠদান করানো যাচ্ছে না। তারপরও ১১ উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পানি কমলে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হবে।’