স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটে তৃতীয় দফা বন্যার কারণে সড়ক, কৃষি, মৎস্য, অবকাঠামোসহ নানা খাতে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশের উত্তর-পূর্বের এই জেলা। ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষা খাতেও।
বন্যার ফলে জেলার প্রায় পাঁচশ’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে গেছে আর বাকিগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ অবস্থায় ঈদের ছুটির পর পর থেকেই বন্ধ রয়েছে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান।
শিখন ঘাটতি কমাতে ঈদ ও গ্রীস্মের ছুটি কমিয়ে ২ জুলাইয়ের পরিবর্তে ২৬ জুন থেকে দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান শুরু হয়। তবে সিলেটের অনেক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঈদের পর আর পাঠদান শুরু হয়নি। একই অবস্থা প্রাথমিক বিদ্যলয়গুলোরও। ঈদের ছুটির পর ৩ জুলাই থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুললেও বন্যার কারণে সিলেটে তা সম্ভব হয়নি।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো থেকে জানা গেছে, বন্যার কারণে সিলেট জেলায় ৩৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে ৭৮টি। এছাড়া কয়েকটি কলেজে পানি উঠে যাওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
সিলেটে প্রথম দফা বন্যা দেখা দেয় ২৯ মে। ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায় সিলেটের সীমান্তবর্তী ৬ উপজেলা। ৮ জুনের পর থেকে এই বন্যার পানি কিছুটা কমে আসে। তবে ১৬ জুন থেকে আবার বন্যা শুরু হয়। এতে সিলেট নগরীসহ জেলার ১৩টি উপজেলাই বন্যা দেখা যায়। পানিবন্দি হয়ে পড়েন প্রায় ১২ লাখ মানুষ। ২৫ জুন দ্বিতীয় দফার বন্যার পানি কমা শুরু হয়। ১ জুলাই থেকে ফের অতিবৃষ্টি ও ঢল নামা শুরু হলে আবার বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। উপর্যুপরি বন্যার ধাক্কা লেগেছে শিক্ষা খাতেও।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার মোট এক হাজার ৪৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৯৮টিতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে সিলেট সদর উপজেলায় ৩৭, বিশ্বনাথে ২, বালাগঞ্জে ৫৫ ফেঞ্চুগঞ্জে ৩২, গোলাপগঞ্জে ২৭, বিয়ানীবাজারে ৫৪, জকিগঞ্জে ২৩, কানাইঘাটে ৪, জৈন্তাপুরে ৩, গোয়াইনঘাটে ২, কোম্পানীগঞ্জে ৬৫, দক্ষিণ সুরমায় ২২ ও ওসমানীনগরে ৭২টি বিদ্যালয় রয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাখাওয়াত এরশেদ বলেন, ৩৯৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। আর বাকিগুলো পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাইদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বন্যার কারণে জেলায় ৭৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যালয় রয়েছে ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায়। কুশিয়ারা অববাহিকার এসব এলাকায় বন্যার পানি কমছেই না। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। পানি কমলে বাড়তি ক্লাসের মাধ্যমে এই ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হবে।