কাজির বাজার ডেস্ক
নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট পাস হয়েছে। রোববার জাতীয় সংসদের বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এসংক্রান্ত নির্দিষ্টকরণ আইন, ২০২৪ সংসদে প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। সোমবার (১ জুলাই) থেকে শুরু হচ্ছে ২০২৪-২৫ অর্থবছর। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম বাজেট। এই বাজেট অর্থমন্ত্রী হিসেবে মাহমুদ আলীর জন্যও প্রথম। গত ৬ জুন অর্থমন্ত্রী ‘টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা’ শিরোনামে এই বাজেট সংসদে উপস্থাপন করেন। সংসদ সদস্যদের ১১ দিনের আলোচনা শেষে রোববার বাজেট পাস হয়।
এর আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পৃথক ৫৯টি মঞ্জুরি দাবি কণ্ঠভোটে নাকচ হয়। এসব মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে বিরোধী দল ও স্বতন্ত্রসহ সাতজন সংসদ সদস্য ২৫১টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনেন। এর মধ্যে আইন, শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়। সংসদে পাস হওয়া এই বাজেট (নির্দিষ্টকরণ আইন) রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর ১ জুলাই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দিন থেকে কার্যকর হবে। বাজেট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা হলেও নির্দিষ্টকরণ আইনে সংশ্লেষিত অর্থের পরিমাণ ১২ লাখ ৪১ হাজার ৭৫২ কোটি ৩২ লাখ ৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে সংসদ কর্তৃক ভোটে গৃহীত অর্থের পরিমাণ ৭ লাখ ৯ হাজার ২৭৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা এবং সংযুক্ত তহবিলের ওপর দায় ৫ লাখ ৩২ হাজার ৪৭৩ কোটি ৪৪ লাখ ২১ হাজার টাকা।
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা বেশি। এতে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারের বাজেটে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজেটে রাজস্ব খাতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর হিসেবে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা।
বিদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ঋণ পাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে বাজেটে। অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে রেকর্ড ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আরও ৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছে বাজেটে।
আয়কর ও মুনাফার ওপর কর থেকে রাজস্ব আদায় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। আমদানি শুল্ক থেকে ৪৯ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা, সম্পূরক শুল্ক থেকে ৬৪ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা, রপ্তানি শুল্ক থেকে ৭০ কোটি টাকা, আবগারি শুল্ক থেকে ৫ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা এবং অন্যান্য কর ও শুল্ক থেকে ১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বিদেশি অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।