বন্যায় ছড়াচ্ছে পানিবাহিত রোগ

19

স্টাফ রিপোর্টার
বাড়িঘর ও আঙিনা থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় বন্যাকবলিত সিলেট নগরীসহ ১৩টি উপজেলায় জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে বন্যাদুর্গতরা এখন ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস, টাইফয়েড ও চর্মরোগসহ পানিবাহিত রোগসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিয়েছে।
পাশাপাশি বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ভেসে উঠছে পুরো এলাকাজুড়ে। রাস্তাঘাট, মৎস্য ও কৃষি খাতে ৭৭৯ কোটি ৬ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেছে। পানি কমে যাওয়ায় ভোগান্তি কমলেও চারদিকে ছড়াচ্ছে পানিবাহিত রোগ। ফলে নতুন করে চিন্তায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
বন্যাদুর্গত এলাকায় গত ৮ দিনে ডায়রিয়া, আরটিআই, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগসহ অন্যান্য পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৮২৬ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বন্যা ও পরবর্তী সময়ের কথা বিবেচনায় নিয়ে বিভাগজুড়ে কাজ করছে স্বাস্থ্য বিভাগের ৩৯৪টি মেডিকেল টিম।
সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মজয় দত্ত বলেন, বন্যা-পরবর্তী পানিবাহিত রোগ মোকাবিলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। ইউনিয়ন ভিত্তিক টিমও কাজ করছে।
এদিকে গোয়াইনঘাটে স্থাপন করা হয়েছে ভ্রাম্যমাণ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। বিভিন্ন ইউনিয়নে গত ২১ জুন থেকে প্রতিদিন বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে কাজ করছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তারা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশলয় সাহা জানান, বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে। ৩ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক সুধীন চন্দ্র দাস জানান, বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ ডায়রিয়া, জন্ডিস, চর্মরোগ এবং টাইফয়েডসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিতে আছেন। তাদের চিকিৎসা নিশ্চিতে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
নগরীর ২৫০ কিলোমিটার রাস্তায় পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলছে সিলেট সিটি করপোরেশন।
এদিকে, সিলেটে নদনদীর পানি কমলেও বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের তথ্যানুযায়ী, কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর অন্যান্য পয়ন্টে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, গতকাল বুধবার সকাল ছয়টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩৮ দশমিক ৭ মিলিমিটার। বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১২ মিলিমিটার। অন্যদিকে ভারতের আবহাওয়া বিভাগসূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭৬ মিলিমিটার।