দুদিন পর ঈদুল আজহা। ঈদ সামনে রেখে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। ট্রেন, বাস ও লঞ্চে ঘরমুখী যাত্রীর চাপ বেড়েছে। যদিও তা রমজানের ঈদের থেকে একটু কম। বরাবরের মতো এবারও যাত্রী পরিবহণকারী সংস্থাগুলো আগাম টিকিট বিক্রি করেছে। বৃষ্টি ও পশুবাহী গাড়ির কারণে ঈদযাত্রা কিছুটা বিঘিœত হতে পারে। তবে যাত্রা সর্বোচ্চ মাত্রায় নির্বিঘœ রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ। বাস টার্মিনালে এতদিন যাত্রীদের চাপ না থাকলেও ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, পরিস্থিতির ততই পরিবর্তন হচ্ছে। অনেকে আবার মোটরবাইকসহ নিজস্ব বাহনেও বাড়ি যাচ্ছেন। তবে বাইকে চলাচলের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া জরুরি। সবার আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতা আর সামান্য অসতর্কতার কারণে বাইকের আরোহী যেমন নিজেদের মৃত্যু ডেকে আনতে পারেন, তেমনি আশপাশে থাকা পরিবহণের যাত্রীদেরও জীবন বিপন্ন হয়ে উঠতে পারে। এছাড়া দূরপাল্লার সব পরিবহণই রাস্তায় চলাচলের উপযুক্ত কিনা, সে ব্যাপারে আগেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।
গেল ঈদে সড়কের মৃত্যুর মিছিল বেড়েছে অতীতের তুলনায়। এবার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। পাশাপাশি যানবাহন চালকরাও এ বিষয়ে সতর্ক থাকার দরকার। আনন্দ যাত্রা যেন কারো কান্নার কারণ না হয়।
এদিকে পশুবাহী ট্রাকের কারণে সড়কে এখনো যানজট সৃষ্টি হলেও ট্রেনযাত্রায় ভিন্ন ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা। কর্তৃপক্ষ বলছে, কমলাপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহী স্টেশনে নিরাপত্তা ও বিনা টিকিটে ভ্রমণ রোধে কমবেশি ব্যবস্থা থাকলেও বাকি ৯০ শতাংশ স্টেশনই প্রায় উন্মুক্ত। ঈদযাত্রায় প্রচÐ ভিড় থাকায় এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে বিনা টিকিটের যাত্রীরা। ট্রেনের ছাদ, দরজা, ইঞ্জিন, দুই বগির সংযোগস্থল ও ভেতরে ঝুলে-দাঁড়িয়ে যাচ্ছে এসব যাত্রী। এতে সাধারণ বৈধ যাত্রীরা শুধু ভোগান্তিতেই পড়ছেন না, নিরাপত্তা ঝুঁকিতেও পড়ছেন। প্রতি বছর লঞ্চেও এমন বিনা টিকিটের যাত্রীদের দৌরাত্ম্য দেখা যায়। সেই সঙ্গে লঞ্চে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন তো আছেই।
ঘরমুখী মানুষ চান বাড়িতে গিয়ে ঈদ উৎসবকে আপনজনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে। তবে তা করতে গিয়ে অসচেতনতা আর মাত্রাতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে নিজেদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা সুবিবেচনার কাজ নয়। যারা পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদেরও বুঝতে হবে এটি সেবামূলক কাজ। অতি মুনাফার লোভে অন্যের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলা রীতিমতো অপরাধ। কর্তৃপক্ষের কাছে প্রত্যাশা, অনিয়মগুলোকে চিহ্নিত করে তা নিরসনের মাধ্যমে যাত্রীদের ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে কার্যকর ভ‚মিকা পালন করবে।