গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে মাটির নিচ থেকে গ্যাস বের হচ্ছে। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে কৌত‚হল দেখা দিয়েছে। যা দেখতে প্রতিদিনই আশপাশ এলাকার শত শত উৎসুক জনতা ভিড় করছেন।
মাটির নিচ থেকে গ্যাসের উদ্গিরণ হচ্ছে জানতে পেরে রোববার (৯ জুন) বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) এর ভ‚তাত্তিক জরিপ বিভাগের ব্যবস্থাপক এস. এম. নাফিফুন আরফিন এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও গ্যাসের নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
জানা যায়, উপজেলার বিছনাকান্দি ইউনিয়নের আনফরের ভাঙা নামক স্থানে গত বন্যার সময় পানির নিচে থেকে বুদ-বুদ উঠতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। গত ২-৩ দিন আগে ওই স্থানের পানি শুকিয়ে গেলে স্থানীয় এলাকার নাছির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি সেখানে গ্যাস লাইটের আগুন লাগালে সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। এরপর থেকে উৎসুক জনতা বিছনাকান্দিতে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।
বিষয়টি জানতে পেরে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুল ইসলাম গত শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বিষয়টির সত্যতা দেখতে পেয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) এর কর্মকর্তাদের অবগত করেন।
যার প্রেক্ষিতে গতকাল রোববার দুপুরে বাপেক্সের ভ‚তাত্তিক জরিপ বিভাগের ব্যবস্থাপক এস. এম. নাফিফুন আরফিন এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও গ্যাসের নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাপেক্সের ভ‚তাত্তিক জরিপ বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মুহিত আলম। সিলেট গ্যাস ফিল্ডের সহকারী ব্যবস্থাপক শুভঙ্কর সরকার ও তোয়াকুল ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা হোসাইন মাহমুদ সজীব।
এ বিষয়ে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের সহকারী ব্যবস্থাপক শুভঙ্কর সরকার বলেন, মাটির নিচ থেকে গ্যাস উদ্গিরণের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। গত শনিবার প্রথমে গায়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। তবে, বায়ুজিন না ন্যাচারাল গ্যাস তা এখনই ঠিক বুঝা যাচ্ছে না। অপাতত ওই স্থানটি মাটি চাপা ও রেড জোন হিসেবে বেড়িকেড দিয়ে রাখা হয়েছে। জনসাধারণকে দুরত্বে রাখতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ও ইউপি সদস্য কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আজকে বাপেক্সের প্রতিনিধি দল এসে পরিদর্শন ও গ্যাসের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। নমুনা পরিক্ষা নীরিক্ষার পর জানা যাবে এটি বায়ুজনিক, ন্যাচারাল না থার্মোজনিক গ্যাস।
এ বিষয়ে বাপেক্সের ভ‚তাত্তিক জরিপ বিভাগের ব্যবস্থাপক ও টিম প্রধান এস. এম. নাফিফুন আরফিন গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও গ্যাসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গোয়াইনঘাট ইউএনও যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করায় আমরা টিমসহ ঘটনাস্থলে খুব দ্রæত চলে এসেছি। বাপেক্সের ল্যাবে পরিক্ষা নীরিক্ষার জন্য ৩ বোতল গ্যাসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে যার কয়েকটি পাইলিং সম্পন্ন করা হয়েছে। পাইলিং করার সময় গ্যাসের আলামত পেয়েছেন বলে তাকে জানিয়েছেন এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। আগে গ্যাসের নমুনা বাপেক্সের ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে। এরপর জানা যাবে গ্যাসের ধরন, এটি বায়ুজনিক না থার্মোজনিক। গ্যাসের অরিজিনটা জানার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পজিটিভ হলে এখানে সব ধরনের সার্ভে করা হবে। গ্যাসের প্রেসার ভালো আছে। এখানে পজেটিভ কিছু একটা হতে পারে। যা দিয়ে দেশ ও জাতির জন্য কিছু একটা করা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
