কাজির বাজার ডেস্ক
২০২৩ সালে ১৫৭টি দেশের দুই লাখ ১০০ বিদেশিকে দেয়া হয়েছে জার্মানির নাগরিকত্ব। সংখ্যাটি তার আগের বছরের তুলনায় অন্তত ১৯ শতাংশ বেশি। ২৮ মে দেশটির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তর জানিয়েছে, ২০০০ সালের পর রেকর্ড সংখ্যক বিদেশি জার্মানির নাগরিকত্ব পেয়েছেন। জার্মান পাসপোর্ট পাওয়ার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সিরিয়া, তুরস্ক, ইরাক, রোমানিয়া এবং আফগানিস্তানের নাম। সর্বোচ্চ সংখ্যক ৭৫ হাজার পাঁচশ সিরীয় নাগরিক গত বছর জার্মানির নাগরিক হয়েছেন। এসব সিরীয় নাগরিকেরা গড়ে ছয় বছর নয় মাস ধরে জার্মানিতে ছিলেন। তাদের ৬৪ শতাংশ পুরুষ।
২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে অসংখ্য সিরীয় গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে জার্মানিতে আশ্রয় নিয়েছেন। এ কারণেই নাগরিকত্ব অর্জনের তালিকায় তারা এগিয়ে রয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
দ্বিতীয় অবস্থানে আছে তুরস্ক ও ইরাকের নাম। গত বছর এ দু’টি দেশ থেকে ১০ হাজার ৭০০ জন করে জার্মানির পাসপোর্ট পেয়েছেন। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নাগরিকত্ব অর্জনের ক্ষেত্রে ইরাকিদের সংখ্যা আগের চেয়ে ৫৭ ভাগ বেড়েছে। আর তুরস্কের ক্ষেত্রে তা ২৫ ভাগ কমেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের শেনজেন জোনে সম্প্রতি আংশিক অন্তর্ভুক্তি পাওয়া রোমানিয়ার সাত হাজার ছয়শ নাগরিক ২০২৩ সালে জার্মান পাসপোর্ট পেয়েছেন। আগের চেয়ে তাদের সংখ্যা বেড়েছে আট শতাংশ। আর আফগানদের নাগরিকত্ব অর্জনের হার ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। আফগানিস্তান থেকে আসা সাড়ে ছয় হাজার অভিবাসী গত বছর জার্মানির নাগরিকত্ব পেয়েছেন। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে জার্মান নাগরিকত্ব পাওয়া ব্যক্তিদের গড় বয়স ২৯ দশমিক ৩ বছর। জার্মানির নতুন নাগরিকেরা দেশটির মোট জনসংখ্যার আনুমানিক গড় বয়স ৪৪ দশমিক ৬-এর তুলনায় তরুণ।
এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে এক লাখ ৬৮ হাজার ৫৪৫ জন বিদেশিকে জার্মান নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছিল।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, জার্মানিতে বসবাসরত এক কোটি ২০ লাখ অভিবাসীর বা ১৪ শতাংশের জার্মান পাসপোর্ট নেই। এদের মধ্যে আবার ৫৩ লাখ মানুষ অন্তত দশ বছর ধরে জার্মানিতে বসবাস করছেন।
বার্ধক্যসহ বিভিন্ন কারণে তৈরি হওয়া শ্রম ঘাটতি মেটাতে জার্মানি তার নাগরিকত্ব আইনের আধুনিকায়ন করেছে।
গত জানুয়ারিতে অভিবাসীদের জন্য নাগরিকত্ব অর্জনকে আগের তুলনায় সহজ করে এবং দক্ষ কর্মীদের জন্য দেশটিকে আরো আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করতে অভিবাসন আইন সংস্কার করেছে জার্মানি।
নতুন নিয়মে যারা জার্মানির নাগরিকত্ব চেয়ে আবেদন করবেন, তাদের আগের নাগরিকত্ব ছাড়তে হবে না। দুই দেশের আইনি কাঠামোকে বিবেচনায় নিয়ে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ রাখা হয়েছে নতুন নিয়মে। নাগরিকত্ব অর্জনের সময়সীমা আট বছর থেকে কমিয়ে করা হয়েছে পাঁচ বছর।