৯ জেলায় পনেরো হাজার টাওয়ার বন্ধ

2

কাজির বাজার ডেস্ক

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে দেশের উপক‚লীয় অঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এরই প্রভাবে সারা দেশের মুঠোফোন নেটওয়ার্ক সেবায় বিঘœ ঘটেছে। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৫ হাজার টাওয়ার সেবা প্রদান থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
সেলফোন অপারেটররা জানায়, বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা টাওয়ারগুলোতে বিদ্যুৎ নেই। জেনারেটর দিয়ে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, তবে তাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে প্রায় ১৫ হাজারের বেশি টাওয়ার থেকে নেটওয়ার্ক ব্যাহত হচ্ছে।
মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব লে. কর্নেল মোহাম্মদ জুলফিকার বলেন, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে উপক‚লীয় ৯ জেলার মোবাইল নেটওয়ার্ক উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘেœর কারণে এসব এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার মোবাইল টাওয়ার বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। নেটওর্য?াক দ্রæত ফিরিয়ে আনতে মোবাইল অপারেটররা বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সঙ্গে কাজ করছে।
মোবাইল অপারেটর সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উপক‚লীয় ৯টি জেলার ১৫ হাজারের বেশি মোবাইল টাওয়ার থেকে নেটওয়ার্ক ব্যাহত হয়েছে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এ সংখ্যা আরো বাড়তে থাকবে। অপারেটররা জানায়, বিদ্যুৎ না থাকলে জেনারেটর দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় নেটওয়ার্ক সচল রাখা হয়। কিন্তু জেনারেটর ছয় থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর নির্ভর করছে মোবাইল নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক হওয়ার বিষয়।
বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স তাইমুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে বিদ্যুৎ বিভাগ প্রায় ১৫ ঘণ্টা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপক‚লবর্তী বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ সম্পূর্ণ ও কিছু এলাকায় আংশিক বন্ধ রেখেছে। আমরা জেনারেটর ও ব্যাটারি দিয়ে নেটওয়ার্ক সেবা চালু রেখেছি। তবে জেনারেটর ও ব্যাটারির সর্বোচ্চ সক্ষমতা ৮-১০ ঘণ্টা হওয়াতে কিছু কিছু এলাকায় নেটওয়ার্ক সেবা বিঘিœত হচ্ছে। দ্রæত নেটওয়ার্ক সেবা চালু করতে আমরা বিদ্যুৎ বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা চালু করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া বাংলালিংক কর্মীরা নিরাপদ রয়েছে। এছাড়াও গ্রাহকদের নিরাপত্তার জন্য আমরা মাইবিএল সুপারঅ্যাপে সাইক্লোন ট্র্যাকার চালু করেছি।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত দেশের ৪৫টি জেলায় ৮ হাজার ৪১০টি সাইট (মোবাইল টাওয়ার) অকার্যকর ছিল। আর ২১টি জেলায় বিটিসিএলের (পিএসটিএন) ৬৫টি সাইট অকার্যকর রয়েছে। এ ছাড়া ১৫টি জেলায় এনটিটিএনের ১৬৮টি পপ (পয়েন্ট অব প্রেজেন্স-গ্রাহকদের ইন্টারনেট সংযোগের কেন্দ্র) বন্ধ রয়েছে।
বিটিআরসি আরো জানিয়েছে, উপক‚লীয় এলাকায় গাছ ভেঙে পড়া, বিদ্যুৎ না থাকা এবং ইন্টারনেট কেবলে ক্ষতির কারণে শতাধিক আইএসপি অপারেটরের নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব এলাকায় আইএসপিদের ৩২০টি পপের মধ্যে ২২৫টি অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। উপক‚লের প্রায় তিন লাখ ব্রডব্যান্ড গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত আছেন।