কাজির বাজার ডেস্ক
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) অধীনে গত ৫ বছরে কমপক্ষে ৪৫১ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
তাদের মধ্যে ২৫৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদের লেখা রিপোর্টের জন্য। অন্তত ৯৭ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৫০ জন স্থানীয় সাংবাদিক। এছাড়া অভিযুক্ত ৪৫১ জনের মধ্যে ২০৯ জন সাংবাদিক জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত এবং ১৯৭ জন স্থানীয় সাংবাদিক।
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সিজিএসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৪৩৬টি মামলা হয়েছে এবং কমপক্ষে ৪৫২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিশিষ্ট অধ্যাপক প্রফেসর আলী রিয়াজ ‘দ্য অর্ডিল: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পাঁচ বছর’ গবেষণাপত্রের ফলাফল উপস্থাপন করে বলেন, ‘আমাদের কাছে ১৫৩৪ জনের পেশা সম্পর্কিত তথ্য রয়েছে।’ ঢাকার বাইরের প্রায় ১১৩ জন অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, যা সবচেয়ে বেশি। এসব সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ২০২ জন। তাদের মধ্যে ১২৪ জন সংক্ষুব্ধ পক্ষ, বাকি ৬১ জন এমন ব্যক্তি যারা এই সাংবাদিকদের সংবাদ বা অন্য কোনো কাজ দিয়ে সরাসরি প্রভাবিত হননি। বিচারের মুখোমুখি হওয়াদের এক তৃতীয়াংশ সাংবাদিক ও আরও এক তৃতীয়াংশ রাজনীতিবিদ।
গবেষণা অনুযায়ী, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০২০ সাল থেকে ৪৯৫ জন রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ডিজিটাল মামলায় গ্রেপ্তারদের অন্তত এক চতুর্থাংশ রাজনীতিবিদ।
এতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের অগাস্ট পর্যন্ত ২১.৭৫ শতাংশ রাজনীতিবিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এর অর্থ হলো গত বছর নির্বাচনের আগে অনেক রাজনীতিবিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
এছাড়া অন্তত ২৮ জন অপ্রাপ্তবয়স্কের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফেসবুক পোস্টের কারণে মোট ৯০৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় মোট ২৩২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ নামে প্রতিস্থাপিত হলেও ডিজিটাল মামলায় গ্রেপ্তার অনেকেই এখনো কারাগারে আছেন।