এমএম ইলিয়াছ আলী, শান্তিগঞ্জ
সুনামগঞ্জ শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার আগে বৃষ্টি ছাড়াই ফসল রক্ষা বাঁধে ধ্বসের সৃষ্টি হয়েছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন হাওরপারের কৃষকেরা। পিআইসি কমিটির লোকজন ধস ঠেকাতে কাজ করছে দিন-রাত।
জানা যায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তার বাঁধ ০৬নং পিআইসি কমিটির অধীনে। দেখার হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের পিআইসি নং-০৬ এর অধীনে প্রায় ১.০০০ কিলো মিটার বাঁধের কাজ নির্মাণাধীন রয়েছে। প্রকল্প এলাকার উত্তর পার্শ্বে ‘‘ছাইয়া কিত্তা’’ নামক জায়গায় গত দুই বছর আগে বর্ষা মৌসুমে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রাতের আধারে মহাসিং নদী ও বাঁধের পশ্চিমে বালি মাটি ও ভিট বালি উত্তোলন করে। এতে বাঁধের দুই পাশে মহাসিং নদীর অংশে ও হাওরের অংশে বড় বড় দু’টি ডোবার সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় ২৭ ফুট গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ছাইয়া কিত্তা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ শেষ পর্যায়ে। গত ৭/৮ দিন ধরে বাঁধের দুই পাশে ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে। এতে বাঁধের সকল মাটি দুই পাশে গভীর ডোবায় ধসে পড়ছে। দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা ফসল রক্ষা বাঁধের দুই পাশে ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে ফসল রক্ষা বাঁধ এবং আর্থিক সংকটে পড়ছেন পিআইসি কমিটির লোকজন।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখার হাওরের বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা ফসল রক্ষা বাঁধের দুই পার্শ্বে জিও ব্যাগ দিয়ে ডাম্পিং করা হচ্ছে। বাঁধের ফাটল অংশ আলাদা ভাবে অতিরিক্ত মাটি ফেলে সংস্কার করার কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু বাঁধের দুই পাশে গভীর গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় মাটি ধরে রাখা যাচ্ছে না।
আস্তমা গ্রামের কৃষক ও পিআইসি কমিটির সভাপতি আজিমুল হক জানান, আমাকে ছাইয়া কিত্তা বাঁধে কাজ করার জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাঁধের কাজের শেষ পর্যায়ে এসে আমার বাঁধের দুই পাশে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। কোন ভাবেই ভাঙ্গন রোধ করা যাচ্ছে না। এখন ভাঙ্গণ রোধে আরো অর্থ বরাদ্দ দিয়ে দুইটি গর্ত মাটি ভরাট করা প্রয়োজন। না হলে বাঁধ রক্ষা করা যাবেন না। বৈশাখ মাসে হাওরে পানি এলে এ বাঁধ হুমকির মুখে পড়বে। আমি উপজেলায় লিখিত ভাবে জানিয়েছি।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা কাবিটা কমিটির সদস্য সচিব ইয়াছিন খান বলেন, দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা হাওরের বাঁধটি আসলে হুমকির মুখে এবং ইতিমধ্যে বাঁধটি পরিদর্শন করেছি। প্রথামিক ভাবে দুই পাশে জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধের ভাঙ্গন রোধ করার চেষ্টা করেছি। বাঁধটি সম্পন্ন করতে পিআইসিকে দিক নির্দেশনা দিয়েছি। বাঁধের ভাঙ্গন রোধে নতুন করে ইস্টিমিট তৈরী করে দ্রæত সময়ের মধ্যে বাঁধের কাজ সম্পন্ন করতে কাজ করছি।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহা জানান, শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা বাঁধটি পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিক ভাবে ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চতর টিমের সাহায্য নিয়ে ফসল রক্ষা বাঁধের ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।