নির্বাচনী আসন সিলেট-২ সাত প্রার্থীর সকলেই যুক্তরাজ্য প্রবাসী

18

স্টাফ রিপোর্টার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। এর মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য ছাড়াও রয়েছেন সাবেক দুই সংসদ সদস্য। তাঁরা সবাই প্রবাসী। আরো সুনির্দিষ্ট করে বললে ‘যুক্তরাজ্যপ্রবাসী’।
যুক্তরাজ্যপ্রবাসীরা দেশটির যে অঞ্চলেই থাকেন তাঁদের ‘লন্ডনি’ বলে সিলেটের স্থানীয় বাসিন্দারা। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ‘লন্ডনি’ শফিকুর রহমান চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে এই আসন প্রবাসীদের দখলে যায়। এরপর গত দুই নির্বাচনে এখানে নির্বাচিতরা সবাই প্রবাসী। এবারও সেই ধারা অব্যাহত থাকছে।
সিলেট-২ আসনে এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও গণফোরাম প্রার্থী মোকাব্বির খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ আব্দুর রব, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোঃ জহির এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মনোয়ার হোসেন। তাঁরা সবাই যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। এর মধ্যে শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মুহিবুর রহমান দেশে থিতু হয়েছেন। মোকাব্বির খান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই দেশে অবস্থান করছেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে পরাজিত করে চমক দেখিয়ে সংসদ সদস্য হন প্রবাসী শফিকুর রহমান চৌধুরী। এর পর থেকে গত দুই নির্বাচনে বিজয়ীরাও প্রবাসী। ২০১৮ সালের নির্বাচনে শরিক জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগিতে সিলেট-২ আসনে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া। এরপর ২০১৮ সালে এই আসনে নির্বাচিত হন গণফোরামের মোকাব্বির খান।
এবারের নির্বাচনে তিনিসহ এই তিন সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছেন। সাত প্রার্থীর সবাই প্রবাসী হওয়ায় এবারও এই আসন থাকবে প্রবাসীদের দখলে।
বিশ্বনাথের প্রবীণ সাংবাদিক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক এবং বিশ্বনাথ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাইদুর রহমান সাঈদ এ প্রসঙ্গে বলেন, বিশ্বনাথ উপজেলা প্রবাসী অধ্যুষিত। এখানে প্রায় প্রতিটি পরিবারের কেউ না কেউ প্রবাসী। বিশেষ করে এখানকার প্রবাসী বলতে লন্ডন প্রবাসীই বোঝায়। যে কারণে এখানে প্রবাসীদের আধিক্য থাকাটা স্বাভাবিক।
প্রবাসী জনপ্রতিনিধির সংখ্যা দিন দিন বাড়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রথমত চাইলে যে কেউ দেশে এসে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেনÑরাষ্ট্র সেই সুযোগ দিয়েছে। দ্বিতীয়ত, প্রবাসী এসব নেতা অর্থ-বিত্তের মালিক। ভোটাররা ভোট দেন নানা সুযোগ-সুবিধার জন্য।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পুরো সিলেটেই রাজনীতির নেতৃত্বে বা জনপ্রতিনিধির আসনে প্রবাসীদের উপস্থিতি বাড়ছে। তাঁরা অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার কারণে এবং বিদেশে থাকায় দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বিদেশ সফরসহ নানা কারণে সহজে যোগাযোগ বা সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। এসব কারণে তাঁরা বিদেশে থেকেও মনোনয়ন পেয়ে যান।