স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটের গোয়াইনঘাটে স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েকে হত্যার দায়েরকৃত মামলায় হিফজুর রহমান (৩৬) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদÐ (ফাঁসি) দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত আসামি হিফুজর রহমান সিলেটের গোয়াইনঘাটের বিন্নাকান্দি গ্রামের আব্দুর রবের ছেলে। মৃত্যুদÐের পাশাপাশি তাকে আরও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং দুই শিশুকে হত্যার দায়ে ১০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দেন আদালত। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নিজাম উদ্দিন।
তিনি বলেন, স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে আদালত হিফজুর রহমানকে মৃত্যুদÐের পাশাপাশি অর্থদÐ দিয়েছেন। ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য শেষে আদালত বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৬ জুন হিফজুর রহমান নিজ বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা স্ত্রী আলেমা বেগম, ছেলে মিজান (১১) ও মেয়ে আনিছাকে (৫) দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যার ঘটনায় আলেমা বেগমের বাবা আইয়ুব আলী অজ্ঞাতনামা আসামি করে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ হিফজুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হিফজুর নিজেই হত্যাকাÐ ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন। পরবর্তী সময় আদালতেও হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আসামি হিফুজর রহমান।
মামলার তদন্তের পর গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর ফারুক হিফজুর রহমানকে অভিযুক্ত করে ২০২২ সালে ২৮ ফেব্রæয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২২ সালের ৭ জুলাই সিলেট দায়রা জজ আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে হিফজুর বলেছিলেন, তিনি অসুস্থ ছিলেন। ঘটনার দিন তিনি স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। পরে স্বপ্নে দেখতে পান স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েকে বড় বড় মাছ ও সাপ খেয়ে ফেলছে। এ সময় ঘরে থাকা বঁটি নিয়ে অন্ধকারের মধ্যে তাদের বাঁচানোর জন্য এলোপাতাড়ি কুপিয়েছেন। পরে ঘরের বাতি জ্বালিয়ে দেখতে পান স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।