কাজির বাজার ডেস্ক
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আগামী ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। সারাদেশের নেতা-কর্মীরা মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। আমরা কোনো নেতা-কর্মীকে কোথাও অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেইনি।’ রবিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। আগামী শনিবার ঢাকায় মহাসমাবেশ উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে বলবো, কোথাও কিন্তু আপনারা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবেন না। এটা কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় হবে। আমরা আবারও বলছি, ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। এ জন্য আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।’
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘প্রতিদিন রাজপথে আন্দোলন দানা বাঁধছে। আমাদের দ্বারা কোথাও অহিংস ঘটনা ঘটেনি।
তবুও আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে মাত্র ৪ দিনে ৪৮টি মামলা দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। এটা চরম দুর্ভাগ্যজনক। আসলে তারাও বিরোধী দলকে নির্মূল করার জন্য ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে এক হয়েছে।
সরকার গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে লুটেরা ও বেআইনি সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি রসাতলে নিয়ে গেছে। তারা আবারও একতরফা নির্বাচন করতে চায়। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় সাজা দেওয়া শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩৬০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। আমরা ভেবেছিলাম সরকার জনগণের দাবি মেনে নিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু তারা সেটা না করে জনগণের ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে। একদিকে খাদ্যের চরম মূল্যস্ফীতি, কাজের অভাব ও কর্মসংস্থানের অভাব। অন্যদিকে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। এ অবস্থায় যতই ভয়ভীতি দেখাক পদত্যাগ না করলে সরকার পালানোর পথ পাবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আইনজীবীদের ভবন উদ্বোধন করতে গিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা কোনো নির্বাহী প্রধান বলতে পারেন না। তিনি বিচারাধীন মামলা নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে প্রমাণিত হলো যে, আওয়ামী লীগ সরকার সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে ফরমায়েশি রায় দিতে নির্দেশ দিচ্ছে। বিএনপির নেতাদের সাজা দেওয়ার চক্রান্ত কার্যকর করছে।’
সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আদালতকে ব্যবহার করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করছি। আমাদের দাবি একটাই অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। কারণ এই সরকারের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এটা দেশে-বিদেশের সবাই বলছেন।’