স্টাফ রিপোর্টার
হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে এই পূজা। পূজার প্রধান উপাদান প্রতিমা তৈরির মাধ্যমে সিলেটের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় শুরু হয়ে গেছে দেবীর আগমনী উৎসব। প্রতিমার মূল কাঠামো তৈরি শুরু হয়েছে ভাদ্র মাসের শুরু থেকেই। মাটির প্রলেপের কাজও শেষ। এখন চলছে দেবীর সাজসজ্জার কাজ। দুদিন আগেও সিলেটে ছিল টানা বৃষ্টি তাই দুর্গার প্রতিমা বানানো শুরু করলেও শুকানো নিয়ে বেগ পেতে হয় কারিগরদের। পাশাপাশি প্রতিমার রঙের কাজও বাধাপ্রাপ্ত হয়। তবে এই সংকটের কিছুটা লাঘব হয় মঙ্গলবার থেকে রোদের দেখা মেলায়। তাই এখন দম ফেলার ফুরসৎ নেই প্রতিমা কারিগরদের। রাতদিন এক করে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিলেটের প্রতিমা শিল্পীরা।
এদিকে প্রতিবারই দুর্গাপূজায় কোন না কোন স্থানে প্রতিমা ভাংচুর, মন্দিরে হামলাসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। আর নির্বাচন এলেই বেড়ে যায় সাম্প্রদায়িক হামলা। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই এবার ভোটের আগে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া দুর্গা পূজায় বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
সরজমিনে দেখা যায়, সিলেট নগরীর কালীবাড়ি, দাড়িয়াপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় দেবী দুর্গার প্রতিমার পাশাপাশি কাজ চলছে পূজা মÐপেও। কেউ দেবী দুর্গার চুল ঠিক করছেন, কেউ শাড়ি পরাচ্ছেন, কেউবা আবার তুলির আঁচড়ে রাঙিয়ে নিচ্ছেন দেবী দুর্গাকে।
নগরীর দাড়িয়াপাড়া এলাকার প্রতিমা কারিগর দুলাল পাল বলেন, পূজার আর বেশি দিন বাকি নেই, হাতে সময় অনেক কম। মাটির প্রলেপের কাজ শেষ করেই ফিনিশিং করার পরই বৃষ্টি শুরু। তাই গত কয়েকদিন বৃষ্টির জন্য মূর্তি শুকাতে পারিনি। তবে দুদিন ধরে ভাল রোদ উঠেছে তাই মূর্তিগুলো শুকাতে পেরেছি। রং করা ও সাজসজ্জাও শুরু করে দিয়েছি। সঠিক সময়ে গ্রাহকদেরকে মূর্তি হস্তান্তর করতে হবে। তাই কারিগর বাড়িয়ে দিনরাত কাজ করছি আমরা।
সিলেট জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এবার সিলেট মহানগর ও জেলায় ৬১৭টি মÐপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। তার মধ্যে সার্বজনীন ৫৬৯টি, পারিবারিক ৪৮টি পূজোর আয়োজন হবে। মহানগরীতে ১৫১টি পূজার মধ্যে সার্বজনীন ১৩৪টি ও পারিবারিক ১৭টি। জেলায় ৪৬৬টি পূজার মধ্যে সার্বজনীন ৪৩৫টি ও পারিবারিক ৩১টি।
সিলেট মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রজতকান্তি গুপ্ত বলেন, আমরা ইতিমধ্যে পূজা উদযাপন পরিষদের অভ্যন্তরীণ সভা করেছি। একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। সকল পূজা কমিটিকে ইতোমধ্যে করণীয় নির্দেশনা জানানো হয়েছে। যেহেতু কিছুদিন পর জাতীয় নির্বাচন হবে তাই এবার সকলকে আরও সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়াও সার্বক্ষণিক স্বেচ্ছাসেবক ব্যবস্থা রাখা হবে পূজা মÐপে। আমরা সার্বিক বিষয়ে প্রস্তুত আছি। এদিকে, শারদীয় উৎসবে নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে সিলেট জেলা ও মহানগর পুলিশ।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র জানিয়েছে, দুর্গাপূজার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।