নদীর ভাঙনে কমলগঞ্জে ধলাই পাড়ের মানুষদের দিন কাটছে উৎকণ্ঠায়

5

 

কমলগঞ্জ সংবাদদাতা

জেলার কমলগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রামপাশা গ্রামের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদীর ভাঙনে দীর্ঘদিন থেকে ঝুঁকিতে আছে নদীপাড়ের পরিবারগুলো। এ নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে তাদের। প্রতি বছরের বর্ষা মৌসুমি ভাঙ্গনের ফলে ভিটামাটি হারিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। বর্তমানেও এ গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। জানা যায়, তাদের দীর্ঘদিনের দাবি বøক দিয়ে বাঁধ নির্মাণ। কিন্তু আজও তাদের এ দাবি পূরণ হয়নি। বছর বছর নদী থেকে ২০-৩০ ফুট সরিয়ে বাঁধ দেওয়া হয়। আবার তা ভেঙ্গে বসত বাড়ির সঙ্গে এসে জুড়ে যায়। ফলে বসত বাড়ি ও সহায় সম্পদ হারাতে হয় অনেক গ্রামবাসীর। বর্তমানে নিখিল চন্দ্র মালাকারের বাড়ি থেকে রফিক বখতের বাড়ি পর্যন্ত অংশটুকু বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, রামপাশা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধলাই নদীর ভাঙনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে সাধারণ মানুষের। এটি রোধে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে মানুষের বাড়ি-ঘর, ভিটে-মাটি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
বিগত দশকে এ নদী ভাঙ্গনে এ গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুর রব, আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরী, আব্দুর রহিম মিয়া, প্রাণেশ পাল, বিক্রম পাল, হারিছ মিয়া, ওয়াহিদ রুলু, মো. তুফা মিয়া, সুনীল মালাকার, নিখিল চন্দ্র মালাকার, যোগীন্দ্র মালাকার, মনিন্দ্র মালাকার, জয়ধন মালাকার, নারদ দেবনাথ, নিধু দেবনাথ, সরোজিনী রানী দেবী, জমির উদ্দিন, করিম মিয়া, হক আলী, রফিক বক্ত, খুশি শব্দকর, অনিল শব্দকর, রাকেশ শব্দকর, দীনেশ শব্দকর, হাছন মিয়া, মটর শব্দকর, গিরীশ শব্দকর, উমেশ মালাকার, মুজিদ মিয়া প্রমুখ বসত বাড়ি ও ভ‚-সম্পত্তি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বর্তমানে নদী পার দিয়ে পৌরসভা কর্তৃক পানির পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। নদীপার ভাঙ্গলে পানির পাইপ লাইনও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ধলাই নদী পাড়ের বাসিন্দা নিখিল মালাকার বলেন, এ পর্যন্ত ৭-৮ বার নদীর পাশ থেকে সরিয়ে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছি। বর্তমানে আর সরানোর জায়গা নেই। আমার বসতবাড়ি রক্ষায় স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আকুল আবেদন জানাই।
মনির মিয়া বলেন, একদম নদীর পার ঘেঁষে আমার বসত ঘর। ভেঙ্গে নিলে আর যাওয়ার জায়গা নেই।
সুশীল দেবনাথ বলেন, ভিটাবাড়ি অনেক আগেই হারিয়েছি। বর্তমানে যেখানে আছি তাও অন্যের জায়গা, এটা ভেঙ্গে নিলে আর যাওয়ার জায়গা নেই।
মিন্টু মালাকার বলেন, আমি শৈশব থেকে দেখছি নদী ভাঙ্গছে আর আমার পরিবারও বসত বাড়ি সরিয়ে বসবাস করার চেষ্টা করছে। এখন আর সরানোর জায়গা নেই।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, ধলাই নদীর ১৪ কি.মি. এলাকায় বøক নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে রামপাশা এলাকাও অন্তর্ভুক্ত আছে। প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে টেন্ডার আহŸান করে কাজ শুরু হবে।