২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয় সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের বেশিরভাগ সড়ক। বন্যার একবছরের বেশিরভাগ সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সংস্কার হয়নি সড়কগুলো। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই দুই জেলার বাসিন্দাদের।
অবশেষে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক সেতু ও কালভার্ট সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব সড়ক জরুরি পুনর্বাসন ও পুন:নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প মঙ্গলবার একনেকে পাস হয়েছে। মঙ্গলবার ১৯ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৬৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১২ হাজার ৬০ কোটি ১৯ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ৫ হাজার ৫৫৫ এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৪৫০ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মোহাম্মদ ইমদাদউল্লা মিয়ান এবং আইএমইডির সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন। আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আব্দুল বাকী, একেএম ফজলুল হক। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, মোংলা বন্দরের সুবিধাধী সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪ হাজার ২৮২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৫০০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা এবং চীনা ঋণ থেকে ৩ হাজার ৭৮২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। প্রকল্পটি চলতি বছর থেকে শুরু হয়ে ২০২৭ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছেÑ জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (খুলনা জোন) প্রকল্প। ফেনী (মোহাম্মদ আলী বাজার)-ছাগলনাইয়া-করেরহাট সড়ক প্রশস্তকরণ এবং ফেনী নদীর উপর শুভপুর সেতু নির্মাণ প্রকল্প। ২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ সড়ক বিভাগাধীন বিভিন্ন সড়ক সেতু ও কালভার্টগুলোর জরুরি পুনর্বাসন ও পুন:নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের উন্নয়ন। নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৫ নং গুদারাঘাটের কাছে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর কদমরসুল ব্রীজ নির্মাণ প্রকল্প। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। রায়েরবাজার এলাকায় পয়:শোধনাগার নির্মাণের জন্য ভ‚মি অধিগ্রহণ প্রকল্প। সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত মাজার মসজিদ নির্মাণ প্রকল্প। মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্প। চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণাঞ্চল এবং কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটির সঞ্চালন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন প্রকল্প। সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প। কৃষক পর্যায়ে বিএডিসির বীজ সরবরাহ কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্প। মানিকগঞ্জ, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলার নদী বিধৌত চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প। মেঘনার শাখা নদীর ভাঙ্গন হতে হিজলা উপজেলাধীন পুরাতন হিজলা, বাউশিয়া ও হরিনাথপুর এলাকা রক্ষা প্রকল্প। শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার পদ্মা নদীর ডান তীরের ভাঙ্গন হতে মাঝিরঘাট জিরো পয়েন্ট এলাকা রক্ষা প্রকল্প। অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। উৎপাদনশীল ও সম্ভাবনাময় কর্মের সুযোগ গ্রহণে নারীর সামর্থ্য উন্নয়ন (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প।