হবিগঞ্জ সংবাদদাতা
হবিগঞ্জের মাধবপুরে গরু চুরি করার জন্যই রাখাল বাবুল মিয়া (৪৮) কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি। শুক্রবার বিকেল ৪টায় হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
পুলিশ সুপার জানান, রাখাল বাবুল মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় ইতোমধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। নিহত রাখাল বাবুল মিয়া উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ইটাখোলা গ্রামের মৃত ছায়ের আলী সরদারের পুত্র।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি জানান, গত ১৫ জুলাই সকালে বাবুল মিয়া তাদের গৃহপালিত ৭টি গরুকে বাড়ির পুর্বপার্শে রঘুনন্দন পাহাড়ে খাস খাওয়ানোর নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ওইদিন সন্ধ্যায় গরু বাড়ি ফিরলেও বাবুল মিয়া বাড়ি ফিরেনি। পরে পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সকল স্থানে খুজাখুজি করে আর তার সন্ধ্যান পায়নি। এক পর্যায়ে ১৮ জুলাই জগদীশপুর বিটের রঘুনন্দন পাহাড়ে বদনারমোড়া নামক স্থানে জঙ্গলের মধ্যে বাবুল মিয়ার হাত পা বাধা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, লাশ উদ্ধারের পর থেকেই বিষয়টির ক্লু উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। এক পর্যায়ে চুনারুঘাট উপজেলার কালিনগর গ্রামের বাসিন্দা লাল মিয়া (৫০) কে গ্রেফতার করা হয়। পরে সে নিজে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে সে হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যান্যদের নাম প্রকাশ করে। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোর রাতে পুলিশ সাড়াষি অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত বশির মিয়া, আব্দুল কাইয়ুম, আব্দুল জাব্বার, জিলু মিয়া ও সবুজ মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সকলেই চুনারুঘাট উপজেলার বাসিন্দা। শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতারকৃত ৫ আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সামছুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ খলিলুর রহমান, সহকারি পুলিশ সুপার (মাধবপুর সার্কেল) নির্মলেন্দু চক্রবর্তী, শায়েস্তাগঞ্জ থানার (ওসি) শেখ নাজমুল হক কামালসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
এদিকে, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় বেশ কিছুদিন যাবত বেড়েছে স্প্রে করে মালামাল লুটের ঘটনা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোঃ ফারুক মিয়া নামে একজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে চেতনানাশক স্প্রে তৈরীর বিভিন্ন সরঞ্জাম।
পুলিশ সুপার জানান, স্প্রে পার্টির সদস্যদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।