কাজির বাজার ডেস্ক
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, যদি আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, বহুদলে বিশ্বাস করি, তাহলে সহনশীল হতেই হবে। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে একে অন্যের প্রতি সহনশীল হতেই হবে। আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করবো আর সহনশীল হবো না, এটা গণতন্ত্রের চর্চা বলা যাবে না। মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা, দোয়া ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের গুণাবলির মধ্যে অন্যতম একটি ছিল সততা। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তার বাড়ি তল্লাশি করে পাওয়া গেছে মাত্র ২৫ হাজার টাকা। তিনি কত সাধারণ জীবনযাপন করতেন সেই বাড়ি গেলেই দেখা যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয় আমরা যদি একাত্তর মেনে নিই, সংবিধান মেনে নিই, গণতন্ত্র মেনে নিই, তারপর যদি রাজনীতি শুরু করা যায়, সমাজনীতি শুরু করা যায়, অর্থনীতি শুরু করা যায়, বিচার শুরু করা যায়, এবং গণতন্ত্রকে যদি আমরা ধারণ করি তাহলে আমাদের ভেতর যে দূরত্ব আছে সেটা কমে আসবে। যে উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ লোক রক্ত দিয়েছিলেন, যে কারণে বঙ্গবন্ধু শহীদ হয়েছেন, আমার মনে হয় সে লক্ষ্য পূরণ করতে পারবো।’ আমার মতে এ জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। ঠিক সেই হিসেব-নিকাশ করেই ৩ নভেম্বর যে হত্যাকাÐ করা হয়, যাতে জাতি দিন দিন ধ্বংসের দিকে যায়। সেই ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। তারপর আমাদের এগুতে হবে। অন্যথায় বার বার আমরা এ বিপদের সম্মুখ হতেই থাকবো। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের গুণাবলির মধ্যে একটি ছিল সততা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার বাড়ি তল্লাশি করে মাত্র ২৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়। তিনি কত সাধারণ জীবনযাপন করতেন সেই বাড়ি গেলেই দেখা যায়। দ্বিতীয়ত আত্মসচেতনা থাকতে হবে। আরেকটি হলো সাহস থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সাহসিকতা ছিল। প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশ স্বাধীন করতে তিনি ছিলেন দৃঢ় সংকল্প। জনগণের সঙ্গে তার সংযোগ ছিল। জাতির প্রতি তার আস্থাই তাকে নেতা বানিয়েছে।
আমি বলবো আসেন দেশ স্বাধীন হয়েছে, গণতন্ত্রে সবাই বিশ্বাস করেন সবাই রাজনীতি করেন সবাই সমাজনীতি করেন বঙ্গবন্ধু মানেন, মানেন এ দেশের সংবিধানকে। এসময় প্রধান বিচারপতি রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।
আপিল বিভাগের বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী বলেছেন, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু মানুষের মুখে ফেনা উঠছে। কেন? সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে গেল বাংলাদেশে? বঙ্গবন্ধুর সময় সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে গেল। তাকে হত্যা করার পর কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আজও সেটি দেখতে পাই। আমার মনে হয় একটি সমস্যা হতে পারে। কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। ২০০৭ সালে শেখ হাসিনা আটক হয়ে গেল। কাউকে খুঁজে পাওয়া গেল না। তার পাশে দাঁড়ানোর লোক নেই। এখন তো লোকের অভাব নেই। বাংলাদেশের ১৫ কোটি মানুষ সবই জয় বাংলার লোক। এত বেশি ভালো, ভালো না। সাবধান হয়ে যান। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা। আমরা ন্যায় বিচার করবো। সবাই সৎভাবে জীবন-যাপন করবো। সবাই আমরা ভালো হয়ে যায়।’
বিচারপতি বোরহান উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্যে কারা তাদের খুঁজে বের করতে কমিশন গঠন করতে হবে। আমার প্রস্তাব হচ্ছে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে প্রতি বছর একটি করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, তার পরের বছর ভাষা তত্ত¡ বিশ্ববিদ্যালয়-এভাবে করা। আর ১৫ আগস্টে একটি করে আন্তর্জাতিক মানের লাইব্রেরি স্থাপন করা হোক।