কাজির বাজার ডেস্ক
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের মো. মধু মিয়া তালুকদারের বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হওয়ার পর আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে। আসামিপক্ষের বাকি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ১০ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মধু মিয়া হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তার বয়স ৬৬ বছর। রোববার (২৩ জুলাই) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ও বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন জানান, আসামি মধু মিয়া বানিয়াচং থানার মুরাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির সমর্থক। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন। প্রথমে মামলায় দুজন আসামি ছিলেন। তবে মামলার অন্য এক আসামি মারা যাওয়ায় এখন তিনিই একমাত্র আসামি। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার সাবেক প্রধান সমন্বয়ক মরহুম এম এ হান্নান খান মধু মিয়ার অপরাধের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এসময় তার সঙ্গে সংস্থার (জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক) বর্তমান প্রধান সমন্বয়ক এম. সানাউল হক উপস্থিত ছিলেন।
আসামি মধু মিয়ার বিরুদ্ধে একাত্তরে গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাটসহ মোট পাঁচটি অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল তদন্ত শুরু হয়। এরপর গত বছরের ২৩ মে তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের আগে আসামি মধু মিয়া এবং তার বংশের লোকজন মুসলিম লীগের সমর্থক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি বানিয়াচং থানার মুরাদপুর ইউনিয়নে শান্তি কমিটি ও ‘মধু বাহিনী’ নামে একটি রাজাকার দল গঠন করে। তখন তিনি রাজাকার কমিটির কমান্ডার ছিলেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি পলাতক ছিলেন।
১৯৭৬ সালে মধু মিয়া নিজ গ্রামে ফিরে বিএনপিতে যোগ দেন এবং ২০১৬ সালে বিএনপি থেকে বানিয়াচং থানার মুরাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। বর্তমানে তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।