অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকে ১৪ ধাপ উন্নত উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের

4

 

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকে উন্নতি ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হেরিটেজ ফাউন্ডেশন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচক-২০২৩ প্রকাশ করেছেন। তাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকের তালিকায় এবার ১৪ ধাপ উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের। ২০২৩ সালের সূচকে ৫৪ দশমিক ৪ পয়েন্ট স্কোর পেয়ে ১৭৬টি দেশের মধ্যে ১২৩তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ- যা গত বছর ছিল ১৩৭তম। ২০২১ সালের সূচকে দেশটির অবস্থান ছিল ১২০তম। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের সূচকে ৫৪ দশমিক ৪ পয়েন্ট স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ- যা আগের বছরের স্কোর থেকে ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের সামগ্রিক স্কোর আঞ্চলিক ও বিশ্ব গড়ের চেয়ে কম। উল্লেখ্য, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকে শীর্ষ চারে রয়েছে সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও তাইওয়ান। সূচকে এই দেশগুলোকে রাখা হয়েছে ‘পূর্ণ স্বাধীন’ ক্যাটাগরিতে। আর ‘প্রায় পূর্ণ স্বাধীন’ ক্যাটাগরিতে আছে নিউজিল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ২২টি দেশ। ‘মধ্যম স্বাধীন’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে জাপান, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামসহ ৫৫টি দেশ। ‘প্রায় অধীন’ ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে বাংলাদেশসহ ৬৪টি দেশ।
সূচকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, নাগরিকের শ্রম ও সম্পদের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রত্যেক ব্যক্তির মৌলিক অধিকার। অর্থনৈতিকভাবে একটি সমাজে প্রতিটি নাগরিক শ্রম ও ব্যবসায় কতটুকু স্বাধীনতা ভোগ করছেন। কর্ম, উৎপাদন, ভোগ এবং যেভাবে খুশি সেভাবে বিনিয়োগ করার স্বাধীনতা পাচ্ছেন কিনা। অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন দেশে শ্রম, পুঁজি এবং উৎপাদিত পণ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাধ্য সরকার। এ সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তৈরি করা হয় এই সূচক। এ কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সমাজ এবং শ্রমিক শ্রেণি স্বাধীনতা ভোগ করে আসছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশে বড় ধরনের কোনো বিধিনিষেধ নেই। ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক কাজের স্বাধীনতাও বাংলাদেশে রয়েছে।
এটা সত্য কাঠামোগত সমস্যা এবং দুর্বল শাসন উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলে জনগণের মৌলিক স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হয়। বাধাগ্রস্ত হয় দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন। পাঁচ বছর ধরে উন্নতির ধারা অব্যাহত থাকলেও গত বছর ১৭ ধাপ পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ। সেই হিসাবে এবারের তালিকায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। ২০২২ সালের সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১০০ এর মধ্যে ৫২ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০২১ সালে ছিল ৫২ দশমিক ৫। তার আগের বছর ৫৬ দশমিক ৫ স্কোর নিয়ে ১৮৪ দেশের মধ্যে ১২০তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। এর আগে ২০২০ সালের এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২২তম। ২০১৯ সালে ছিল ১২১তম। ২০১৮ এবং ২০১৭ সালে এই অবস্থান ছিল একই; ১২৮তম।
আশার কথা, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এ বছর বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। বাংলাদেশ যদি এ ব্যাপারে মনোযোগী হয় তা হলে আগামী বছর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অনায়াসে প্রথম হতে পারবে। সে জন্য প্রয়োজন গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক বিকাশ এবং ব্যাপক উন্নয়ন। আমাদের প্রত্যাশা বাংলাদেশ সেদিকেই হাঁটবে এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকের আরও উন্নতি ঘটাবে।