সিলেটে প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার
স্টাফ রিপোর্টার
আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের সর্তক করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছ্নে, আচরণবিধি অভিযোগ এলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। আপনারা এমন কিছু করবেন না যাতে প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। তিনি শনিবার দুপুরে সিলেট নগরীর মেন্দিবাগস্থ জালালাবাদ গ্যাস অডিটোরিয়ামে সিলেট সিটিতে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় সিইসি বলেন, ইভিএম নিয়ে অনেকেই অনেক কথাই বলেন। এটার কিন্তু পরীক্ষা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। এর ভেতরে জ্বিন-ভ‚ত, প্রেত থাকে বলে অনেকেই বলেছেন। কিন্তু আমরা এই রকম কোনো কিছু পাইনি। অনেক উজা, ঝাঁড়ফোক করেও কিছুই পাইনি। আমরা দুইটা পদ্ধতিতে বিশ্বাস করি। শরিয়ত ও মারিফত। শরিয়তের পদ্ধতিতে ভোট কোথাও যায় না। কিন্তু এখন মারিফতের পদ্ধতিতে এখানে ভোট দিলে ওখানে চলে যায় নিশ্চয়তা আমি বলতে পারবো না। কারণ আমি মারিফত বুঝি কম। কাজেই শরিয়তের পদ্ধতিতে কোনো ভাবেই একজনের ভোট অন্যজন দিতে পারে না। যদি কেউ প্রমান করতে পারেন তাহলে আমি নিজেই এর দায়ভার নিবো। তাই আপনারা সময় মতো ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন। কোন বিলম্ব করবেন না।
পলিথিনে মোড়ানো ব্যানার-পোষ্টার নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা এতো নিষ্ঠুর হতে পারবো না। এটা নিয়ে আইন আছে। পুলিশ চাইলে পলিথিনে মোড়ানো ব্যানার-পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলতে পারে। আর এটা একটা বৈশ্বিক সমস্যা। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই জিনিসটা করা যাবে না। প্রচারণায় ব্যাপারে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ভবিষ্যতে প্রচারণার ধরন পাল্টে যেতে পারে। এটা সময়ের প্রয়োজনে হয়ে যাবে। তথ্যপ্রযুক্তি এতে যোগ হবে। প্রার্থীরা ফেসবুকে প্রচারণা চালাবে। এটা আমাদের ভেবে দেখতে হবে আগামীতে কিভাবে প্রচারণার ধরন আনা যায়।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেনর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাংগীর আলম, সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার ইলিয়াছ শরিফ, সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসানসহ অন্য মেয়র প্রার্থী, কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিল প্রার্থীরা। এছাড়াও মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কাজে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
নির্বাচনে চ‚ড়ান্ত লড়াইয়ে মোট ৮ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। তার হলেন- আওয়ামী লীগের মো.আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা) ও জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম দলীয় প্রতীক (গোলাপফুল), স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু (ঘোড়া), মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট) এবং মো. শাহজাহান মিয়া (বাস গাড়ি), মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ)। আর কাউন্সিলর পদে ৩৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। যাদের মধ্যে ২৭৩ জন সাধারণ ওয়ার্ডে এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে (নারী কাউন্সিলর) ৮৭ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। আগে ২৭ ওয়ার্ড নিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন থাকলেও বর্ধিত ১৫টি ওয়ার্ড নেয়ে সিসিকে এখন মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৪২টি। ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই মহানগরীতে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া ভোটর রয়েছেন ৬ জন। ২০০২ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সিলেটের সকল ওয়ার্ডে এবারই প্রথম হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ।